ভারতের ৯৬ শতাংশ মানুষ বুক ভরে নেয় বিষবায়ু , বলছে বিশ্বব্যাঙ্কের সমীক্ষা
বিশ্বের অন্যতম সমস্যা বায়ু দূষণ। ভারতের মতো দেশে এই সমস্যা আরও বেশি, কারণ ভারত আজও উন্ন্যয়নশীল দেশ। উন্নত নয়। পাশাপাশি দেশের জনসংখ্যাও অনেক বেশি। দেশে দিন দিন বাড়ছে গাড়িরব সংখ্যা, কিন্তু একে কীভাবে কমানো যায় তা এখনও স্পষ্ট নয়। দেশের রাজধানী দিল্লি অন্যতম বড় বায়ুদূষণে ভরা শহর। এমন সময় আরওমেক চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলল।

বিশ্বব্যাংক একটি সমীক্ষা করেছিল বায়ু দূষণ নিয়ে। ভারত নিয়েও তারা স্বাভাবিকভাবেই সমীক্ষা করেছিল। সেখানেই দেখা যায় এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। দেখা যায় যে , দেশের বেশিরভাগ গরীব মানুষ বায়ু দূষণের চরম সীমার সংস্পর্শে আসে। তার থেকেও বড় বিষয় হল দেশের প্রায় ৯৬ শতাংশ মানুষ এখন দূষিত বাতাস বুকে ভরে নিয়ে চলছেন।

কী বলা হয়েছে সমীক্ষায় ?
ভারতে অন্তত ২০ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করে এবং বায়ু দূষণের বিপজ্জনক স্তরের সংস্পর্শে আসে। বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞদের করা সাম্প্রতিক সমীক্ষা এমনটাই বলা হয়েছে। এও বলা হয়েছে যে দেশের বিপজ্জনক মানের বায়ুর সংস্পর্শে থাকা ২.৮ বিলিয়ন মানুষের মধ্যে ৪৭% মানুষ শ্বাস নেওয়ার সমস্যা দেখা যায়।

কীভাবে তৈরি হয় এই সমীক্ষা ?
গত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নতুন একটি কাজের উপর ভিত্তি করে এই কাজটি করেছিল বিশ্বব্যাঙ্ক। সেখানে দেখা হয়েছিল কত মানুষ দূষিত বাতাসের সংস্পর্শে আসেন। সেখানে দেখা হয়েছিল প্রতি ঘনমিটার বাতাসে ৫ মাইক্রোগ্রামের উপরে PM2.5 কণার পরিমাণ কতটা তা দেখা হয়। দেখা গিয়েছিল যে বিপজ্জনক বাতাসের সংস্পর্শ মৃত্যুর হার ২৪% বৃদ্ধি করে। এর উপরেও ভিত্তি করে ভারত কোন জায়গায় রয়েছে তা দেখা হয়। সেখানেই দেখা যায় ভারতের পরিস্থিতি।

৯৬ শতাংশ মানুষ দূষিত বায়ুতেই শ্বাস নেয়
দেখা গিয়েছে যে ভারতের আনুমানিক ১.৩৯ বিলিয়ন মানুষের মধ্যে ১.৩৩ বিলিয়ন অর্থাৎ ৯৬% মানুষ বিপজ্জনক বাতাসে শ্বাস নেয়। রিপোর্টে এমনটাই বলা হয়েছে। এর মধ্যে, "২০২ মিলিয়নেরও বেশি" লোক ছিল যারা দৈনিক ১৪৫ টাকার কম রোজগার করেন। মানে এরা সবাই দারিদ্র সীমার নীচে বাস করেন। বিশ্বের বেশিরভাগই দেশই 'WHO'-এর বাতাসের'নিরাপদ' মান পূরণ করতে পারে না। বিশ্বের জনসংখ্যার ৯৬.৪% PM2.5 এর সংস্পর্শে আসে। ভারত এবং চিনের মতো মধ্যম আয়ের দেশগুলির মানুষের জন্য এটি আরও বিপজ্জনক। কারণ এখানকার মানুষের আয় কম। দরিদ্র সীমার নীচে বহু মানুষ বাস করে। এদের স্বাভাবিকভাবেই জীবনযাত্রার মান উন্নত নয়। তাই এখানকার গরীবদের মধ্যে ঝুঁকি রয়েছে বেশি।

বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন ?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিম্ন স্তরের পুষ্টি এবং স্বাস্থ্যের কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মানুষ বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাদের বিভিন্ন অন্তর্নিহিত রোগ রয়েছে যা তাদের ঝুঁকি বাড়ায়। তাদের জীবনে বিষাক্ত বায়ু দূষণের বড় প্রভাব রয়েছে কারণ তারা এমন এলাকায় বাস করে যেখানে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ খুবই দুর্বল। তাই তাদের স্বাস্থ্যের জন্য এটি ব্যাপকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। তারা এও বলছেন যে ,
পরিচ্ছন্ন জ্বালানির ব্যাবহার করতে না পারা দরিদ্র মানুষকে খুব সহজেই বিপজ্জনক বায়ু দূষণের সংস্পর্শে আনে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে উজ্জ্বলা যোজনা আছে কিন্তু আমরা জানি যে বেশিরভাগ গ্রামীণ পরিবার জ্বালানি খরচ বহন করতে সক্ষম নয়। তাই দেশের গরীবদের বায়ু দূষণে সংশয় অনেক বেশী।