সুপ্রিমকোর্টে আজ সবরীমালা নিয়ে 'বিশ্বাস বনাম অধিকার'-এর শুনানি
সবরীমালা নিয়ে 'বিশ্বাস বনাম অধিকার'-এর আজ শুনানি হবে সুপ্রিমকোর্টে। শীর্ষ আদালতের ৯ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে এই শুনানি হবে। বেঞ্চের নেতৃত্ব দেবেন প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে। এর আগে গতবছরের ১৪ নভেম্বর পুনর্বিবেচনার আবেদনগুলি সাত বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে পাঠানো হয়৷
প্রতিটি ধর্মস্থানের জন্য একটি সর্বজনীন নীতি
সুপ্রিমকোরট শবরীমালা মামলার রায়দানের সময় জানায়, প্রতিটি ধর্মস্থানের জন্য একটি সর্বজনীন নীতি থাকা উচিত। আজ শবরীমালাতে মহিলাতে ঢুকতে দেওয়ার বিষয়ে রিভইউপিটিশনের প্রেক্ষিতে রায়দানে জানানো হয় মামলাটি সাত বিচারপতির বেঞ্চের কাছে পাঠানো হবে। মামলার বৃহত্তর বেঞ্চ গঠিত হবে পরবর্তী মুখ্য বিচারপতি এসএ বোবদের নেতৃত্বে।
কী বলেছিলেন তৎকালীন প্রধান বিতারপতি রঞ্জন গগৈ
শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'মহিলাদের কেন সবরীমালায় প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে না তা বৃহত্তর বিতর্কের অন্তর্ভুক্ত, যার মধ্যে মুসলিম মহিলাদের মসজিদে ও পার্সি মহিলাদের উপাসনাস্থলে প্রবেশাধিকারের বিষয়টিও রয়েছে।' এর আগে ২০১৮ সালে সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর তা পুনর্বিবেচনার জন্য ৬০টিরও বেশি আবেদন আদালতে জমা পড়ে৷ দাবি করা হয়, ওখানে প্রতিষ্ঠিত দেবতা 'ব্রহ্মচারী' , তাই রজঃস্বলা মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া উচিত নয়৷ রায় পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নেয় সুপ্রিম কোর্ট৷
মসজিদে ঢোকা নিয়ে পিটিশন জমা
মসজিদে ঢুকতে দেওয়া নিয়ে একটি পিটিশন জমা পড়েছে সুপ্রিমকোর্টে। সেই মামলাটি পরবর্তী প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের সামনে শুনানি হচ্ছে। তে মামলাটি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। পুনের এক দম্পতি এই মামলটি করেছিল। প্রসঙ্গত, তারা জানায় সুপ্রিমকোর্টের শবরীমালা সংক্রান্ত রায়ের পরেই তারা এই বিষয়ে মামলা করার সাহস পান। মামলাকারীদের দাবি, মহিলাদের মসজিদে ঢুকতে না দেওয়ার বিষয়টা যুক্তিহীন ও এটি মৌলিক অধিকার ও লিঙ্গ সমতার পরিপন্থি। এই বিষয়ে আদালত ইতিমধ্যে মহারাষ্ট্র ওয়াকফ বোর্ড ও অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড থেকে জবাব চেয়ে পাঠিয়েছে।
আরও কয়েকটি বিষয় নিয়ে শুনানি হবে
এছাড়াও ধর্মীয় কারণে মহিলাদের যৌনাঙ্গের অঙ্গহানির বিষয়টিও সুপ্রিমকোর্ট দেখবে বলে জানিয়েছে। এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন জায়গায় এই প্রথা চলে আসছে। মহিলাদের যৌন ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেই নাকি এটা করা হয়। ভারতে এই প্রথার দুটি ধরন দেখা যায়। মূলত বোহরা জনজাতির মধ্যে এই প্রথা বেশ প্রচলিত।
সবরীমালার শতাব্দী প্রাচীন প্রথা
শতাব্দী প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী সবরীমালা মন্দিরে রজঃস্বলা মহিলাদের (১০-৫০ বছরের) প্রবেশাধিকার ছিল না৷ কিন্তু গতবছর সুপ্রিম কোর্ট জানায় এই প্রথা লিঙ্গবৈষম্যকে সমর্থন করে৷ শীর্ষ আদালত তার রায়ে মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশাধিকারের অনুমতি দেয়। সেই রায় পুনর্বিবেচনার দাবিতে একাধিক আবেদন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে৷ ১৪ নভেম্বর শীর্ষ আদালতের ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ আবেদনগুলি ৭ সদস্যের বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয়৷ তবে মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকারের অনুমতি দিয়ে গত বছর সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তাতে ৫ সদস্যের বেঞ্চ কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি।