৭৪ শতাংশ মানুষ আধপেটা খেয়ে ঘুমাচ্ছে! লকডাউনের মধ্যে বিভীষিকাময় ছবি উঠে এল সমীক্ষায়
লকডাউনে থমকে গিয়েছে অর্থনীতির চাকা। এর জেরে ব থেকে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ ও পরিযায়ী শ্রমিকদের। লকডাউনের এই সময়ে পরপর ঘোষণা হচ্ছে সাহায্য, আর্থিক প্যাকেজ। তবে তার কতটুকু পৌঁছাচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছে? এই প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন মহল।
মানুষের দুর্ভোগের এক বেদনাদায়ক চিত্র
এই বিষয়েই একটি সমীক্ষা করে কয়েকটি সিভিল সোশাইটি অর্গনাইজেশন ও আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয়। আর সেই সমীক্ষাতেই উঠে আসে ভারতের সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের এক বেদনাদায়ক চিত্র। দেশের ১২টি রাজ্যের ৩ হাজার ৯৭০ জনের উপর করা এই জরিপে সেই মানুষগুলির দুঃখের কথা সামনে এসেছে।
৭৪ শতাংশ মানুষ কম খেয়ে থাকছেন
সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, সমাজের অসুরক্ষিত অংশের মানুষদের ৬৭ শতাংশই কর্মসংস্থান হারিয়েছেন এই লকডাউনের জেরে। এছাড়া সার্বিক ভাবে ৬৩ শতাংশ মানুষের আয় কমেছে অনেকটা। সব থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য হল, ৭৪ শতাংশ মানুষ কম খেয়ে থাকছেন কারণ তাদের কাছে পর্যাপ্ত রশদ নেই।
কাদের উপর হয় এই সমীক্ষাটি?
সমাজের দরিদ্র শ্রেণীর উপর করা এই সমীক্ষাটি ১৩ এপ্রিল থেকে শুরু করে ৯ মে পর্যন্ত চালানো হয়। মূলত লকডাউনের আগে যাদের মাসিক আয় ১০ হাজার বা তার কম ছিল, তাদের উপর এই সমীক্ষা করা হয়। লকডাউনের আগেই এই সব মানুষের অধিকাংশের অবস্থা খুব শোচনীয় ছিল। আর এখন তো এদের আর কিছুই নেই প্রায়।
সরকারের রেশন পেয়েছেন ৮৩ শতাংশ মানুষ
যদিও সমীক্ষায় জানা গিয়েছে ৮৬ শতাংশ মানুষ সরকারের রেশন পেয়েছে। তবে চিন্তার কথা হল, আর্ধেকেরও কম মানুষ সরকারের প্রতিশ্রিতি মতো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাননি। এর মূল কারণ অবশ্য এই মানুষদের অধিকাংশেরই জনধণ অ্যাকাউন্ট নেই। কেন্দ্রের তরফে সেই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই টাকা পাঠানো হচ্ছে।
শহরের মানুষরা চাকরি হারাচ্ছে বেশি
এদিকে দেখা যাচ্ছে গ্রামীণ এলাকা থেকে শহরে বেশি সংখ্যক মানুষ চাকরি হারিয়েছে। শহরগুলিতে গড়ে ৮০ শতাংশ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। গ্রামীণ এলাকাতে এই হার তুলনামূলক কম। সেখানে ৫৮ শতাংশ মানুষ কর্মহীন হয়েছেন।
কাজ করেও টাকা মিলছে না
এছাড়া যারা লকডাউনে কাজ করছেন, তাদের খুব একটা স্বস্তি নেই। লকডাউনে কাজ করা প্রায় ৫৭ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন যে তারা কাজের বিনিময়ে খুব কম টাকা পেয়েছেন অথবা কোনও টাকাই পাননি। সমীক্ষায় আরও দেখা গিয়েছে, শহরে থাকা ৪৩ শতাংশ মানুষ দিনযাপন করতে ঋণ নিতে বাধ্য হয়েছে। গ্রামে থাকা ৩৪ শতাংশ মানুষও ঋণ নিয়ে জীবযাপন করছে।
লকডাউনের অশনিসংকেত, এবার টান পড়তে চলেছে গৃহস্থের ভাঁড়ারে