মেডিকেল কলেজে জুনিয়র ছাত্রদের উপর সিনিয়রদের ভয়ঙ্কর র্যাগিং, সাত পড়ুয়াকে বরখাস্ত করল কর্তৃপক্ষ
তামিলনাড়ুর খ্রিস্টান মেডিকেল কলেজ সাত পড়ুয়াকে বরখাস্ত করল কলেজের জুনিয়র ছাত্রদের উপর র্যাগিংয়ের জন্য। কলেজ কর্তৃপক্ষ নিজেই এই কথা জানিয়েছে। ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে শুধু র্যাগিং নয় শারীরিক ও যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে। জুনিয়র ছাত্রদের অর্ধনগ্ন অবস্থায় প্যারেড করানো এবং যৌন অত্যাচার করে হাসির পাত্র করে তোলার অভিযোগ রয়েছে ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে।
কী বলেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ?
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, কমিটি তৈরি করা হয়েছে এই বিষয়ে আরও তদন্তের জন্য। ওই ছাত্রদের ততদিন বরখাস্ত থাকতে হবে যতদিন না তদন্ত সম্পূর্ণ হয়। জানা গিয়েছে যে ওই ভিডিও সোশ্যাল মাধ্যমেও ঘুরে বেড়াচ্ছে। এক ব্যক্তি যিনি নিজেকে প্রথম বর্ষের কলেজ পড়ুয়া বলে দাবি করেছে সে একটি কমিউনিটি প্লাটফর্ম রেড'ইটে ওই র্যাগিং এবং শারীরিক ও যৌন হেনস্থা করা হচ্ছে ফ্রেশারদের উপর এই নিয়ে একটি পোস্ট করেছে এবং ওই ভিডিও নিয়ে সে বিবরণ দিয়েছে। সে দাবি করেছে যে মার্চ মাস থেকে ওই কলেজে এই অত্যাচার চলছে।
দিনের পর দিন অত্যাচার
সে বলেছে যে, কীভাবে ওই অত্যাচার দিনের পর দিন করা হত। সে ভিডিওতে দেখেছে যে 'র্যাগিং সেরিমনি' নাম দিয়ে 'ওয়াকিং রেস' আয়োজন করেছিল ওই কলেজের সিনিয়র ছাত্ররা। ওই কাজ করা হয় ৯ অক্টোবর। সেখানেই জুনিয়রদের নানা কাণ্ড করে দেখাতে বলা হয়।
ভিডিও শেয়ার হচ্ছে সোশ্যাল মাধ্যমে
ওই ঘটনার ভিডিও শেয়ার করেছেন একজন টুইটার ব্যাবহারকারী। সেই ভিডিও শেয়ার করে তিনি লিখেছেন যে, ' ভেলোরের খ্রিস্টান মেডিকেল কলেজে ভয়ঙ্কর ভাবে র্যাগিং করা হচ্ছে। এইটা হল তার ভিডিও এবং প্রমাণ।' আরও অনেক ইউজার প্রধানমন্ত্রীর অফিস, মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রীর অফিসকে ট্যাগ করে ওই ভিডিও শেয়ার করেছে। ওই ছাত্র তাঁর রেডইট অ্যাকাউন্টে লিখেছে যে তাঁদের কাদায় শুয়ে তাঁদের যৌনক্রিয়া করতে বাধ্য করা হত। আর সেই সব দেখে ওই সিনিয়র ছাত্ররা দিনের পর দিন মজা নিত। এটা তো গেল একটা ঘটনা। পাশাপাশি একজন সম্পূর্ণ পোশাক পরিহিত ছাত্রকে দুই জন ছাত্রকে একসঙ্গে জড়িয়ে ধরে শারীরিক নিগ্রহ করছে এমন ভিডিও দেখা গিয়েছে। এর পড়ে হোস পাইপ দিয়ে তাঁদের উপর নাগারে জল ফেলা হত।
চলছে তদন্ত
সিএমসি' ডিরেক্টর , ডঃ বিক্রম ম্যাথিউস জানিয়েছেন যে, "আমরা এই বিষয়ে একজন অজ্ঞাত পরিচয়ের থেকে চিঠি পেয়েছি। আমাদের এই বিষয়ে তদন্ত চলছে।" তিনি এও বলেছেন যে "চিঠি অজ্ঞাত পরিচয় থেকে এলেও এই বিষয়ে আমরা বিষদে তদন্ত করব। নিয়ম অনুযায়ী কাজ হবে। রিপোর্ট পেশ হলে সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমরা র্যাগিং বিষয়টা এক্কেবারেই বরদাস্ত করি না। আর সেটার অভিযোগই উঠেছে। যতদিন এই ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলবে ততদিন ওই সাত ছাত্রকে বরখাস্ত অবস্থায় থাকতে হবে"
ছাত্ররা এও বলেছে যে দুটো কোড ব্যাবহার করা হত একটি হল বাজিং অপরটি হল টিউনিং। বাজিংয়ের মাধ্যমে জুনিয়র ছাত্রদের অণ্ডকোষে মারা হত এবং টিউনিং করার মাধ্যমে তাঁদের বুকে চামড়ার উপর ব্যথা লাগে এমন কিছু কাজ কর্ম করা হত। এর পাশাপাশি ওই ছাত্রদের উঠতে বসতে যখন খুশি মনে করা হত থাপ্পড় মারা হত। সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় তাঁদের নাচতে বাধ্য করা হত।" তাঁরা এও জানাচ্ছেন যে লজ্জা নিবারণ করতে তাঁদের কার্ডবোর্ড ব্যবহার করতে হত। প্রসঙ্গত র্যাগিং ইউজিসি এবং ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
জামিনের আবেদন খারিজ, গণধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার আন্দামানের প্রাক্তন সচিব