সংখ্যা হ্রাস পেলেও এখনও ৬০ শতাংশ ভারতীয় করোনার টিকা নিতে দ্বিধাবোধ করছেন, দাবি সমীক্ষার
গত ১৬ জানুয়ারি থেকে ভারতে শুরু হয়েছে বিশ্বের বৃহৎ ভ্যাকসিন ড্রাইভ। একদিকে যখন ভারত টিকাকরণে রেকর্ড করছে ঠিক অন্যদিকে দেশের নাগরিকদের মধ্যে এখনও সংশয় রয়েছে এই টিকা নিয়ে। লোকাল সার্কেলের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে তিন সপ্তাহে টিকা নিয়ে দ্বিধা দেখা গিয়েছে ৬০ শতাংশের মধ্যে। আগে এই সংখ্যাটা ৬৯ শতাংশ ছিল। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, এখনও ৬০ শতাংশ নাগরিক দ্রুত টিকা নেওয়ায় দ্বিধাবোধ করছেন।

দ্বিধায় নাগরিকরা
২০২০ সালে লোকাল সার্কেল তাদের সমীক্ষায় আভাস দিয়েছিল যে ৬১ শতাংশ নাগরিক টিকা নিতে দ্বিধাবোধ করছে। নভেম্বরের সমীক্ষায় এই সংখ্যা হ্রাস পেয়ে ৫৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছিল। এরপরে, ভ্যাকসিনগুলির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এবং কার্যকারিতা সম্পর্কে অনিশ্চয়তা, এটির পরীক্ষার সময় প্রতিকূল ঘটনার খবরগুলি দেশের বেশ কিছু নাগরিককে চমকে দিয়েছে। যার ফলে ডিসেম্বরের সমীক্ষায় এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৬৯ শতাংশে। এই সংখ্যাটি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত একই ছিল। টিকা নেওয়ায় নাগরিকদের দ্বিধার সংখ্যা ৬৯ থেকে কমে ৬২ শতাংশ হয় ১৮ জানুয়ারি এবং তা ফের ৬০ শতাংশে নেমে আসে ২৫ জানুয়ারিতে।

টিকা নেওয়ায় দ্বিধার কারণ
সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া শীর্ষ কারণের মধ্যে রয়েছে যা ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে সংশয়ের সৃষ্টি করছে। পোল নাগরিকদের ৫৯ শতাংশ জানিয়েছেন যে ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কেমন হবে তা জানা নেই, তাই তাঁরা টিকা নিতে দ্বিধা বোধ করছেন, অন্যদিকে ১৪ শতাংশ জানিয়েছেন যে ভ।আকসিনের কার্যকারিতা অনিশ্চয় তাই তাঁদের মধ্যে ভ্যাকসিন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। মাত্র ৪ শতাংশ জানিয়েছেন তাঁদের ভ্যাকসিনের দরকার নেই কারণ কোভিড-১৯ মহামারির সময় তাঁরা কাটিয়ে উঠেছেন। অন্য ৪ শতাংশ বিশ্বাস করেন যে বর্তমান ভ্যাকসিনটি করোনা ভাইরাসের আসন্ন স্ট্রেনগুলি এড়াতে পারবে না এবং তাই তাঁরা দ্বিধায় ছিলেন।

ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করবেন নাগরিকরা
নাগরিকদের অবিলম্বে ভ্যাকসিন গ্রহণের বিষয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসা করা হলে, ৩৬ শতাংশ বলেছেন তারা ইতিমধ্যে কোভিশিল্ড বা কোভ্যাকসিনের টিকা নিয়েছেন বা গ্রহণ করবেন। ৪ শতাংশ জানান যে বেসরকারি হাসপাতাল বা চ্যানেলে ভ্যাকসিন উপলব্ধ হলে তাঁরা তা গ্রহণ করবেন। পোলের ২৮ শতাংশ জানান তাঁরা ৩ মাস অপেক্ষা করার পর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। ১৬ শতাংশ ৩-৬ মাস অপেক্ষা করবেন, ৭ শতাংশ অপেক্ষা করবেন ৬ থেকে ১২ মাস, ৩ শতাংশ জানিয়েছেন তাঁরা ১২ মাসের পর ২০২২ সালে সিদ্ধান্ত নেবেন এবং ৬ শতাংশ ভ্যাকসিন গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়েছেন। এই সমীক্ষা থেকেই বোঝা গিয়েছে যে ৬০ শতাংশ নাগরিক এখনও করোনা টিকা নিতে দ্বিধায় রয়েছে।

কারা এই সমীক্ষা করেছে
লোকাল সার্কেলের শেষ সমীক্ষা হয় এ বছরের জানুয়ারিতে। ১৯ জানুয়ারির সমীক্ষায় ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে ৬২ শতাংশ ভারতীয় নাগরিক এখনও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে দ্বিধায় রয়েছেন। সমীক্ষায় এটা দেখা গিয়েছে যে অদিকাংশ নাগরিকই ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে চিন্তিত এবং ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে নিশ্চিত নন। এমনকি ভারতের স্বাস্থ্যসেবা পেশার কর্মীদের মধ্যে করা একটি সমীক্ষায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে ৫৫ শতাংশ হয় টিকাদান স্থগিত করবেন বা এখনও কী করবেন তা সিদ্ধান্ত নেননি। ২০২০ সালের অক্টোবরের পর থেকে লোকাল সার্কেল নাগরিকদের কাছ থেকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণের বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে প্রতিক্রিয়া সংগ্রহ করছে।

করোনা আবহে প্রজাতন্ত্র দিবস, রাম মন্দির ও লাদাখের ট্যাবলো প্রথমবার যোগ দিল কুচকাওয়াজে