অপেক্ষা আর কয়েক ঘণ্টার, তারপরই চিনের ঘুম ওড়াতে ভারতে পা রাখতে চলেছে রাফায়েল
সোমবার সকালে ফ্রান্সের মেরিগনেক-এ ডাসোঁ অ্যাভিয়েশন ফ্যাসিলিটি থেকে পাঁচটি ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স রাফায়েল যুদ্ধবিমান ভারত উদ্দেশে রওনা দিয়েছে৷ আরব আমিরশাহির আল ধাফরা এয়ারবেসে জ্বালানি ভরার জন্য বিমানগুলি দাঁড়িয়ে আছে বর্তমানে। সেখান থেকে এই রাফায়েলগুলি চালিয়ে নিয়ে আসবেন ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলটরা৷ এই পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভারতের আম্বালা বায়ুসেনা স্টেশনে এসে পৌঁছাবে ২৯ জুলাই অর্থাৎ বুধবার৷
আরকেএস ভাদৌরিয়ার নামে নামাঙ্কিত বিমান
আগত বিমানগুলির মধ্যে তিনটিতে একটি সিটের ও দুটি বিমানে দুটি সিটের ব্যবস্থা আছে৷ রাফাল চুক্তিতে ভূমিকা থাকায় বর্তমান এয়ার চিফ মার্শাল আরকেএস ভাদৌরিয়ার আদ্যক্ষর দুই সিটের বিমানে 'আর বি' নাম দেওয়া হয়েছে৷ এর আগে এক সিটের বিমানে আগের বায়ুসেনা প্রধান প্রাক্তন এয়ার চিফ মার্শাল বিরেন্দর সিং ধানোয়ার আদ্যক্ষর ব্যবহার হয়েছিল৷
আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় বায়ুসেনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে কবে?
ভারতীয় বায়ুসেনা জানিয়েছে, এই যুদ্ধবিমানগুলি বুধবার এসে পৌঁছলে বায়ুসেনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে৷ অগাস্টের দ্বিতীয়ার্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় বায়ুসেনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে৷ ফ্রান্সের কাছে ভারত ৩৬টি সুপারসনিক ওমনিরোল কমব্যাট এয়ারক্রাফ্ট কিনছে৷ এই ৩৬টির মধ্যে প্রথম দফায় ১০টির মধ্যে পাঁচটি রাফাল প্রশিক্ষণ পর্বে রয়েছে ৷ এখনও পর্যন্ত ১২জন বায়ুসেনার পাইলট ফ্রান্সে রাফাল যুদ্ধবিমান চালানোর প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করেছেন৷ আরও কয়েকজন তাঁদের প্রশিক্ষণ পর্বের শেষের দিকে রয়েছেন৷
প্রশিক্ষণ আরও ন'মাস চলবে
ফ্রান্সে ভারতীয় দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছে এই প্রশিক্ষণ আরও ন'মাস চলবে এবং ২০২১-এর মধ্যে ৩৬টি রাফায়েল ভারতে এসে পৌঁছাবে৷ ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী, ৩৬ জন ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলটকে রাফায়েল কমব্যাট জেটের প্রশিক্ষণ দেবেন ফ্রান্সের পাইলটরা৷ বেশিরভাগ ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলটদের ফ্রান্সে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, ওই পাইলটদের কয়েকজন সেই প্রশিক্ষণটাই ভারতে এসে বাকিদের শেখাবেন৷
সীমাম্ত পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ বৈঠক
এদিকে চিনের সঙ্গে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে অস্থিরতার মাঝেই ২২ জুলাই থেকে দু'দিনব্যাপী কমান্ডার কনফারেন্সে পূর্ব লাদাখের সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় বসেন ভারতীয় বিমান বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডাররা। রাফায়েল যুদ্ধবিমানের র্যাপিড অপারেশনাল স্টেশন চালু করা নিয়েও আলোচনা হয় সেখানে। পাশাপাশি এই বৈঠকে বিমান বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডাররা অন্যান্য নিরাপত্তা ইস্যুতেও আলোচনা করেন, বলে জানিয়েছেন বাহিনীর এক কর্তা।
পূর্ব লাদাখ অঞ্চলে টহলদারি
এয়ার চিফ মার্শাল আর কে এস ভাদোরিয়ার নেতৃত্বে এবং ৭ জন কমান্ডার-ইন-চিফের উপস্থিতিতে এই কনফারেন্সের মূল উদ্দেশ্যই হল চিন সীমান্তের পরিস্থিতি এবং পূর্ব লাদাখের বাহিনীর সেনা মোতায়েন সম্পর্কে আলোচনা। যেখানে বাহিনী ইতিমধ্যেই মিরাজ-২০০০, সুখোই-৩০, এবং মিগ-২৯-এর মতো আধুনিক যুদ্ধবিমান-সহ পুরো বহরকে সামনের বেসগুলিতে মোতায়েন করেছে। উন্নতমানের অ্যাপাচে অ্যাটাক হেলিকপ্টারটি চিন সীমান্তের সামনের দিকে ঘাঁটিতে মোতায়েন করা হয়েছে এবং রাতে এমনকী পূর্ব লাদাখ অঞ্চলে ঘন ঘন টহল দেওয়া হচ্ছে।