অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের ট্রায়াল এবার ভারতে! চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য তৈরি হচ্ছে দেশের ৫টি জায়গা
দেশের ৫টি জায়গাকে তৈরি করা হচ্ছে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের তৃতীয় এবং চূড়ান্ত পর্বের মানবদেহে পরীক্ষার জন্য। সোমবার একথা জানালেন ডিপার্টমেন্ট অফ বায়োটেকনোলজির সম্পাদক রেণু স্বরূপ। এই বিষয়ে তিনি বলেন, 'এটি খবুই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। ভ্যাকসিন দেওয়ার আগে দেশের অভ্যন্তরে কিছু পরিসংখ্যান থাকা দরকার তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।'
সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে অক্সফোর্ডের চুক্তি
অক্সফোর্ড ও তার সহকারী অ্যাস্ট্রাজংনেকা এই ভ্যাকসিন প্রস্তুতের জন্য পুনের সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে চুক্তি করে রেখেছে। পুনের এই ইনস্টিটিউট বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন তৈরির সংস্থা । অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার ভ্যাকসিন তার চূড়ান্ত ধাপে সফল হলেই সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া সেই টিকা বানাতে পারবে। মানবদেহে এই টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে।
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্বের পরীক্ষার প্রস্তুতি
রেণু স্বরূপ বলেন, 'ভারতে যে কোনও করোনা টীকা প্রয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ ডিবিটি। সেটি টিকার ফান্ডিং হোক কিংবা সুবিধা, কিংবা নিয়ন্ত্রণমূলক ছাড়পত্র। সব বিষয়ের উপরেই নজর রাখে ডিবিটি।' ডিবিটি এখন ভারতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্বের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। রেণু স্বরূপ বলেন, ইতিমধ্যে এই পর্বের হিউম্যান ট্রায়ালের জন্য দেশের ৫টি জায়গাকে বাছা হয়েছে।
মানবদেহে প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষা সফল
উল্লেখ্য, ২০ জুলাই গবেষকরা জানান, অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড ১৯ এর ভ্যাকসিন মানবদেহে প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষা সফল হয়েছে। এপ্রিল ও মে মাসে প্রথম পর্বে এই ট্রায়াল হয়েছিল ব্রিটেনের পাঁচটি হাসপাতালে ১০৭৭ জন সুস্থ মানুষের উপর। যাদের বয়স ছিল ১৮ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে। ল্যানসেট মেডিকেল জার্নালের প্রকাশিত হয়েছিল এই তথ্য।
পরীক্ষার ফল
সেই পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই ভ্যাকসিন প্রয়োগের ৫৬ দিন পর ওই ১০৭৭ জনের শরীরে অ্যান্টিবডি এবং টি-সেল তৈরি হয়েছে। দ্বিতীয় পর্বে ১০০ জনকে দুটি দলের ভাগ করে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। একটি দল ছিল শিশুদের। অন্যটি পূর্ণ বয়স্কদের। তৃতীয় পর্বে এই পরীক্ষাটি এক হাজার লোকের উপর প্রয়োগ করা হবে।
ভারত বায়োটেক ও জাইডাসের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন
ভারতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ছাড়াও ভারত বায়োটেক ও জাইডাসের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন মানব দেহে পরীক্ষার জন্য ছাড়পত্র পেয়েছে। ২০ জুলাই গবেষকরা জানান, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি কোরোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিনটি সুরক্ষিত এবং প্রথম পর্যায়ে দেহে প্রয়োগের পর শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম।
আগের হিউম্যান ট্রায়ালের ফল
এর আগে প্রথম পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়ালে অতি স্বল্প সংখ্যক ব্যক্তির উপর ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। প্রয়োগের পর পরীক্ষা করে দেখা হয় ভ্যাকসিনের প্রভাবে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে কি না। দ্বিতীয় পর্যায়ে শিশু থেকে বয়স্ক-বিভিন্ন বয়সিদের কয়েকটি বিভাগে ভাগ করে নিয়ে শতাধিক মানুষের উপর ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। এই দুই ধাপে প্রধান লক্ষ্য থাকে মানবদেহের সুরক্ষা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর। তৃতীয় পর্যায়ে ভ্যাকসিন হাজার হাজার মানুষের উপর প্রয়োগ করে পরীক্ষা করা হয়।