অসমে করোনার দোসর বন্যা! ব্রহ্মপুত্রের রোষে মৃত ৪০, ক্ষতিগ্রস্ত ২ লক্ষেরও বেশি
দেশে ক্রমেই বেড়ে চলছে করোনা সংক্রমণ৷ এরই মাঝে বন্যার জেরে অসমে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা৷ গত মাসের শেষ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছিল ৩০-এর মধ্যে৷ অসমের বরপেতায় বন্যায় আরও একজনের মৃত্যু হল৷ এর জেরে ক্রমেই অসমে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে।
৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে
এখনও পর্যন্ত বন্যায় রাজ্যে ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে অসমের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর৷ ১১টি জেলার পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে ৷ তবে রাজ্যের ১২ জেলায় দু'লক্ষের বেশি মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত৷
ডিব্রুগড় জেলায় ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে
অসম বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের অধিকর্তারা জানিয়েছেন, গত তিন সপ্তাহে রাজ্যে বহু মানুষ বন্যায় মারা গেছেন ৷ মরিগাঁও, তিনসুকিয়া, ধুবরি, নগাঁও, নলবাড়ি, বরপেতা, ধেমাজি, উদলগুরি, গোয়ালপাড়া এবং ডিব্রুগড় জেলায় ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে৷
ধসের কারণে ২৪ জনের মৃত্যু
পাশাপাশি ২২ মে-র পর থেকে ধসের কারণে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ শিবসাগর, বঙ্গাইগাঁও, হোজাই, উদলগিরি, মাজুলি, পশ্চিম করবী অ্যাংলং, দারাং, কোকরাঝাড়, ধুবরি, জোরহাট, ডিব্রুগড়, দক্ষিণ সালমারা, কামরূপ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে৷ বন্যার প্রভাব পড়েছে নলবাড়ি, বরপেতা, গোয়ালপাড়া, মরিগাঁও, নওগাঁও, গোলাঘাট, ধেমাজি, লখিমপুর, চরাইদেও, বিশ্বনাথ, চিরং এবং তিনসুকিয়ায়৷
২৬ হাজার ৯১০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট
বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের তরফে আরও জানানো হয়েছে, ৩৪৮টি গ্রামের দু'লক্ষ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত৷ ২৬ হাজার ৯১০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে৷ রাজ্যের ২৫টি ত্রাণ শিবিরে মোট ১০৯৫ জন আশ্রয় নিয়েছেন৷ বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকায় উদ্ধারকাজ চলছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। বন্যা কবলিত এলাকায় করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে কি না সেদিকেও খেয়াল রাখার জন্য ডেপুটি কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
১.২১ লক্ষ গৃহপালিত পশু ক্ষতিগ্রস্ত
সবমিলিয়ে রাজ্যে ১.২১ লক্ষ গৃহপালিত পশু এবং ১.২৭ লক্ষ পোলট্রি ক্ষতিগ্রস্ত৷ অসমের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন একযোগে বন্যা কবলিত মানুষজনকে উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে৷ পাশাপাশি তাঁদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে৷ তাছাড়া বন্যার জলে প্রায় ১,৬৮,২১০ হেক্টর কৃষিজমির ক্ষতি হয়েছে৷
ভারী বৃষ্টি হচ্ছে উত্তর-পূর্ব জুড়ে
সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, শুধু অসম নয়, ভারী বৃষ্টি হচ্ছে উত্তর-পূর্বের মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশেও। ব্রহ্মপুত্র সহ অন্য কয়েকটি নদীতেও জলের স্তর বাড়ছে। প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকায় জল ঢুকছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়ালের সঙ্গে অসমের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। এই পরিস্থিতিতে অসমকে কেন্দ্রের তরফে সবরকম সাহায্য করা হবে বলে আশ্বাস দেন।