মধ্যপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে বাবার মতোই কি পরিস্থিতির শিকার জ্যোতিরাদিত্য! কোন ঘটনার পুনরাবৃত্তি
সদ্য সমাপ্ত ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে খানিকটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে কংগ্রেস।
সদ্য সমাপ্ত ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে খানিকটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে কংগ্রেস। 'পদ্ম' শিবিরে 'হাতে'র থাবা বসানোর পর ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস শিবির আবারও ফুটতে শুরু করেছে আত্মবিশ্বাসে। এরমধ্যে রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী বাছাই ঘিরে খানিকটা অস্বস্তিতে পড়তে হয় রাহুল শবিরকে। উল্লেখ্য, মধ্যপ্রদেশে সিন্ধিয়া রাজ পরিবারের সন্তান তথা কংগ্রেসের তরুণ তুর্কী জ্যোতিরাদিত্য বনাম বর্ষীয়ান নেতা কমলনাথকে ঘিরে মুখ্যমন্ত্রী পদের আভ্যন্তরীন লড়াই খানিকটা প্রকাশ্যে আসে। শেষমেশ মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেন কংগ্রেসের ডাকসাইটে নেতা কমল নাথ। অন্যদিকে, উপ মুখ্যমন্ত্রিত্বের গদি ছেড়ে দেন জ্য়োতিরাদিত্য। আর এই ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে ফের একবার মধ্যপ্রদেশে সিন্ধিয়া রাজ পরিবার ঘিরে উস্কে যায় ইতিহাসের এক চেনা অধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রিত্বের হাতছানি ও মাধব রাও সিন্ধিয়া
ঘটনা প্রায় ৩০ বছর আগের। সেই সময়ও কং রাজনীতিতে জ্যোতিরাদিত্যর মতো করেই জনপ্রিয়তা পাচ্ছিলেন তাঁর বাবা তথা দাপুটে কংগ্রেস নেতা মাধব রাও সিন্ধিয়া। সময়টা ১৯৮৯ সাল। সেই সময় অর্জুন সিং এর নেতৃত্বাধিন সরকারের বিরুদ্ধে লটারি দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে সম্ভাবনাময় নামের তালিকায় প্রথমেই আসে মাধব রাও সিন্ধিয়ার নাম।
কীভাবে এগোয় ঘটনাক্রম?
সেই সময়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব মধ্যপ্রদেশ ঘিরে সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত হচ্ছিল। সমস্ত নজর ছিল রাহুল গান্ধীর বাবা তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা রাজীব গান্ধীর ওপর। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন এমন আভাস পেয়ে দিল্লি থেকে ভোপাল পৌঁছে যান মাধব রাও। কিন্তু শেষ মুহূর্তে অর্জুন সিংয়ের চাপে পড়ে কংগ্রেস মোতিলাল ভোরাকে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলে ঘোষণা করে। তখত হাত থেকে ছিটকে যায় জ্যোতিরাদিত্যর বাবা প্রয়াত কংগ্রেস নেতা মাধব রাও সিন্ধিয়ার।
জ্যোতিরাদিত্যর পরিস্থিতি
২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়ে মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস আসতেই অনেকেই মনে করেছিল , রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে জ্যোতিরাদিত্যর মতো তরুণ নেতাকেই মুখ্যমন্ত্রিত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু যাবতীয় আলোচনায় জল ঢেলে ৭২ বছরের কমলনাথকেই মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বেছে নেয় কংগ্রেস। ফের একবার এই পদ থেকে ব্রাত্য থাকে সিন্ধিয়া রাজপরিবার।
জ্যোতিরাদিত্যর বক্তব্য
মুখ্যমন্ত্রিত্ব না পাওয়ায় নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এক টিভি সাক্ষাৎকারে জ্যোতিরাদিত্য জানান, বাবা মাধবরাওয়ের মতোই তাঁর কোনও লোভ নেই মসনদের প্রতি। এর আগে জ্যোতিরাদিত্যকে মধ্যপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য কংগ্রেস হাইকমান্ড প্রস্তাব দেয়। যদিও তা ফিরিয়ে দেন সিন্ধিয়া রাজবংশের এই সন্তান। এরপর তাঁকে মধ্যপ্রদেশের প্রদেশ সভাপতি করার জন্য জোরদার দাবি তোলা হয় মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের তরফে। তবে এই সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে রাহুল গান্ধি কোনপথে এগোন, তা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। কারণ অনেকেই জ্যোতিরাদিত্য, সচিন পাইলটদের মতো তরুণ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে রাহুলের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতার তুলনা টানতে শুরু করেছেন এখনই। যা কংগ্রেস রাজনীতিত গান্ধী পরিবারের দাপটের ক্ষেত্রে খুব একটা স্বস্তিবোধন নয়, বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।