করোনা মোকাবিলায় দেশ জুড়ে ২১ দিনের লকডাউন, নরেন্দ্র মোদীর ভাষণের হাইলাইটস একনজরে
করোনা মোকাবিলায় দেশ জুড়ে ২১ দিনের লকডাউন, নরেন্দ্র মোদীর ভাষণের হাইলাইটস একনজরে
দেশ জুড়ে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। করোনা থেকে বাঁচতে এর থেকে ভালো উপায় আর কিছু হতে পারে না বলেই তিনি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের ওপরও জোর দিয়েছেন তিনি। একনজরে দেখে নেওয়া যাক প্রধানমন্ত্রী মোদী কোন কোন বিষয়ে জোর দিলেন।
জনতা কার্ফু সফল
২২ মার্চ আমরা করোনা মহামারী নিয়ে লড়তে যে উদ্যোগ নিয়েছিলাম, তাকে প্রত্যেক ভারতবাসী সফল করেছেন। এতে উচ্চ মধ্য, নিম্নবিত্ত সকল শ্রেণির মানুষ এতে অংশ নিয়েছেন। এবং জনতা কার্ফুকে সফল করেছেন। আপনাদের সকলেরই এর জন্য প্রশংসা প্রাপ্য।
বিশ্বজুড়ে মহামারী
আপনারা দেখতে পাচ্ছেন বিশ্বজুড়ে কী অবস্থা। দেখছেন কীভাবে বিশ্বের বড় বড় দেশকে এই মহামারী অকেজো করে দিয়েছে। এমন নয় যে এই দেশগুলি এর মোকাবিলা করতে অপারগ। তবে ঘটনা হল করোনা মহামারী যেভাবে ছড়িয়েছে তা অভাবনীয়। এই দেশগুলিতে গত দুমাসে যেভাবে করোনা ছড়িয়েছে এবং তা পরীক্ষণ করে গবেষকরা বলছেন, এর থেকে বাঁচার একমাত্র মোক্ষম উপায় হল সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং। এছাড়া উপায় নেই।
একমাত্র মাত্র সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং
করোনা ছড়ানোর যে একমাত্র মাত্র সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং করেই তার চেন ভাঙা যাবে। শুধু অসুস্থদের জন্য সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং নয়, সকলের জন্য। এমনকী প্রধানমন্ত্রীর জন্যও তা প্রযোজ্য। তবে কিছু লোকের অবহেলার কারণে আগামী দিনে আমাদের প্রত্যেককেই বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। এবং তা কতটা ভয়াবহ তার আন্দাজ কেউ করতে পারবেন না।
সম্পূর্ণ লকডাউন
দেশের বিভিন্ন অংশে লকডাউন করা হয়েছে। এটাকে মান্যতা দিতে হবে। তাই দেশহিতে বড় ঘোষণা করছে কেন্দ্র। গোটা দেশে রাত ১২টা থেকে সম্পূর্ণ লকডাউন হতে যাচ্ছে। আপনাকে, আপনার পরিবার বাঁচানোর খাতিরে ঘর থেকে বেরোনোর বিষয়ে লক ডাউন করা হচ্ছে। সকলকে আটকানো হচ্ছে। এটা জনতা কার্ফুর থেকে এগিয়ে আর একটি কদম।
তিন সপ্তাহের লক ডাউন
করোনা মহামারী থেকে বাঁচতে এর থেকে ভালো উপায় কিছু হতে পারে না। এর ফলে অনেক আর্থিক ক্ষতি হবে। তবে দেশকে বাঁচাতে এটা করা প্রয়োজন। এই লকডাউন ২১ দিনের হতে চলেছে। অর্থাত তিন সপ্তাহের লক ডাউন হতে চলেছে।
তিন সপ্তাহের লক ডাউন
করোনা মহামারী থেকে বাঁচতে এর থেকে ভালো উপায় কিছু হতে পারে না। এর ফলে অনেক আর্থিক ক্ষতি হবে। তবে দেশকে বাঁচাতে এটা করা প্রয়োজন। এই লকডাউন ২১ দিনের হতে চলেছে। অর্থাত তিন সপ্তাহের লক ডাউন হতে চলেছে।
২১ বছর পিছিয়ে যাওয়ার ভয়
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কথা ধরলে ২১ দিন অন্তত প্রয়োজন করোনার মতো মহামারীকে আটকাতে। এটা না করা হলে আগামী ২১ বছর আমরা পিছনে চলে যাব। এটা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নয়, নাগরিক হিসাবে বলছি।
বাড়ির দরজায় লক্ষণরেখা
তাই আগামী ২১ দিন বাড়ি থেকে বেরোনো ভুলে যান। ঘরে থাকুন এবং ঘরেই থাকুন। এটাই আর্জি। আপনার বাড়ির দরজায় লক্ষণ রেখা টেনে দেওয়া হল। আপনার বাড়ির বাইরে বেরোনো একটি পা করোনাকে আপনার বাড়িতে ডেকে আনতে পারে।
বাড়িতে থাকুন
করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে প্রথমে একেবারে সুস্থ লাগে। করোনায় আক্রান্ত তা একেবারেই বোঝা যায় না। তাই ঘরে থাকুন। সুস্থ থাকুন। হু-র রেকর্ড বলছে, এই মহামারীতে আক্রান্ত রোগী এক সপ্তাহে লক্ষ লক্ষ মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে। ফলে এটা আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়তে পারে।
দ্রুত ছড়াচ্ছে ভাইরাস
বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের এক লক্ষে পৌঁছতে ৬৭ দিন লেগেছিল। তার পরে মাত্র ১১ দিনে আরও এক লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। তিন লক্ষে পৌঁছতে সময় লেগেছে চার দিন। ফলে আপনি আন্দাজ করতে পারবেন এই ভাইরাস কত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাই একে আটকানো অত্যন্ত কঠিন। চিন, ইতালি, আমেরিকা, স্পেন, ইরানে তা ছড়াতেই অবস্থা বেকাবু হয়ে গেছে। এবং মনে রাখবেন এই দেশগুলিতে স্বাস্থ্যব্যবস্থা দারুণ। তাও তা সামাল দেওয়া যায়নি।
কীভাবে করোনা মোকাবিলা
করোনার বিরুদ্ধে লড়াই কীভাবে করা যাবে? এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে, যে দেশে করোনা মোকাবিলা করা গিয়েছে সফলভাবে। সেখানে নাগরিকেরা সরকারের কথা শুনে চলেছেন। বাইরে বেরোননি। ফলে মন্ত্র একটাই, ঘর থেকে বেরোনো যাবে না। তাতে যা খুশি হয়ে যাক বাইরে। ঘরের দরজার লক্ষণরেখা পেরোনো যাবে না।
ধৈর্য ধরুন
এই সময় হল ধৈর্য ও অনুশাসনের সময়। দেশে যতক্ষণ লকডাউনের সময় চলছে তা পালন করুন। ঘরে থেকে সেই মানুষের কথা ভাবুন যারা নিজেদের কথা না ভেবে অন্যদের জন্য কাজ করছে। ডাক্তার, নার্স, প্যারা মেডিক্যাল স্টাফ, সাফাই কর্মচারী যারা দিনরাত সকলকে সুস্থ করতে দিনভর কাজ করে চলেছেন। আপনারা এদের জন্য প্রার্থনা করুন।
সকলকে ধন্যবাদ
করোনা নিয়ে কাজ করে চলেছে সংবাদমাধ্যম, দিনরাত কাজ করে চলেছেন পুলিশকর্মীরা। যারা আপনাদের বাঁচাতে দিনরাত কাজ করে চলেছেন। করোনা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকারগুলি কাজ করে চলেছে। লোকের যাতে অসুবিধা না হয় তার জন্য কাজ করে চলেছে। এবং আগামিদিনেও করবে।
দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ান
এই সময় দরিদ্রদের জন্য আরও ভয়ঙ্কর। গরিব মানুষের কষ্ট কম হয় সেজন্য নাগরিক সমাজ, নানা সংস্থা এগিয়ে এসেছে। তবে মনে রাখতে হবে, জীবন বাঁচাতে যা প্রয়োজন সেই বিষয়টিকে সর্বাগ্রে রাখতে হবে। কেন্দ্র সবরকমভাবে কাজ করে চলেছে। জনহিতে সরকার নানা কাজও করেছে।
কেন্দ্রীয় বরাদ্দ
কেন্দ্র এদিন করোনা থেকে লড়তে ১৫ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ করেছে। এই দিয়ে হাসপাতালের সামগ্রী থেকে ওষুধ, ভেন্টিলেটরর ইত্য়াদি কেনা হবে। সমস্ত রাজ্যকে বলা হয়েছে, এখন সমস্ত রাজ্যগুলির সবচেয়ে আশু কর্তব্য হল স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কাজ করা। এক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাও এগিয়ে এসেছে।
গুজব থেকে বাঁচুন
এই সময়ে নানা গুজব ছড়ায়। তাই আমার আর্জি, সমস্ত রকমের গুজব থেকে বাঁচুন। বিশেষজ্ঞদের কথা শুনে কাজ করুন। ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে কোনও ওষুধ খাবেন না। আশা করছি সকলে এই নির্দেশের পালন করবেন। ২১ দিন লম্বা সময়। তবে আপনার ও আপনার পরিবারের সুরক্ষায় এটাই একমাত্র পথ। তাই ধৈর্য ধরে থাকুন, আইনের নির্দেশ মেনে চলুন। সকলকে ধন্যবাদ।