তেলেঙ্গানার বিরুদ্ধে ১৮ মামলা সুপ্রিম কোর্টে, নোটিশ কেন্দ্রকে
আগাগোড়া ভুলে ভরা তেলেঙ্গানা বিলটি গায়ের জোরে লোকসভায় পাশ করিয়েছিল ইউপিএ তথা কংগ্রেস। সেই সময় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল টিভি সম্প্রচারও। ফলে সমালোচনা হয় বিস্তর। এর পর বিলটি যখন রাজ্যসভায় ওঠে, তখন সমর্থন দেওয়া সত্ত্বেও তার সাংবিধানিক ত্রুটি নিয়ে সরব হয়েছিল বিজেপি। রাজ্যসভাতেও পাশ হয়ে যাওয়ার পর অখণ্ড অন্ধ্রের সমর্থকরা হুমকি দিয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্টে মামলা করবেন। এঁরা অপেক্ষা করছিলেন বিলটি কবে আইনে পরিণত হয়, সেই জন্য। অবশেষে গত পয়লা মার্চ রাষ্ট্রপতি তাতে স্বাক্ষর করার পরই বিলটি আইনে পরিণত হয়। আর তার পরই শুরু হয় আইনি যুদ্ধের তোড়জোড়।
সূত্র অনুসারে, ১৮টি মামলা রুজু হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। প্রাথমিকভাবে সবগুলি মামলাই গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। অন্ধ্রের সদ্য পদত্যাগী মুখ্যমন্ত্রী কিরণকুমার রেড্ডি, ওয়াইএসআর কংগ্রেস সুপ্রিমো জগন রেড্ডি, সীমান্ধ্রের আইনজীবীদের সংগঠন, তেলুগু দেশম পার্টি ইত্যাদির তরফে এই মামলাগুলি রুজু করা হয়েছে। আছে সীমান্ধ্রের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলিও।
মামলাকারীদের দাবি, অন্ধ্রপ্রদেশ পুনর্গঠন আইন (২০১৩) সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক। বিভিন্ন ধারাগুলি সরাসরি চ্যালেঞ্জ করেছে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে। ফলে একে খারিজ করা হোক।
সব শুনে বিচারপতি এইচ এল দত্তুর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলেছে, এই আইনের সঙ্গে সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জড়িয়ে আছে। তাই মামলাগুলি সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠানো উচিত। তার আগে কেন্দ্রের মতামত জানতে হবে। তাই নোটিশ পাঠানো হচ্ছে সরকারকে।
প্রসঙ্গত, এর আগে যথাক্রমে ৭ এবং ১৭ ফেব্রুয়ারি অনুরূপ পিটিশন দায়ের হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। কিন্তু আদালত তখন তা সটান খারিজ করে দেয়। তখন বিচারপতিরা বলেছিলেন, "এখন বিল সংসদের বিবেচনাধীন। তাই বিলটি বিচার করার সময় এখনও আসেনি। আমরা মামলাকারীদের যুক্তি বুঝতে পারছি। আগে বিলটি আইনে পরিণত হোক। তার পর এর সাংবিধানিকতা আদালত বিচার করবে।"
সুভাষ কাশ্যপ, সি ভি মোহন রেড্ডি প্রমুখ সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অন্ধ্রপ্রদেশ পুনর্গঠন আইনে এমন অনেক ধারা রয়েছে, যা সংবিধানকে চ্যালেঞ্জ করেছে। সংবিধান হল দেশের সর্বোচ্চ আইন। এর বিরুদ্ধে কোনও আইন বলবৎ থাকতে পারে না। ফলে আইনটি 'সংবিধান-বহির্ভূত' বলে খারিজ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তেমন যদি হয়, তবে আবার গোড়া থেকে শুরু করতে হবে তেলেঙ্গানা গঠনের প্রক্রিয়া। আগামী ২ জুন জন্ম নেওয়ার কথা আলাদা তেলেঙ্গানার। তার আগে শীর্ষ আদালত স্থগিতাদেশও দিয়ে দিতে পারে। তা হলে থমকে যাবে গোটা প্রক্রিয়া।