পশ্চিমবঙ্গের ১৮ জন, উত্তর-পূর্বের দু'জন সাংসদ লোকসভায় শপথ নিলেন বাংলায়
বৃহস্পতিবার ছিল লোকসভার সাংসদদের শপথগ্রহণ। এদিন অস্থায়ী স্পিকার কমলনাথের তত্ত্বাবধানে অন্তত অর্ধেক সাংসদ শপথবাক্য পাঠ করেন। বাকিরা আগামীকাল শপথ নেবেন। এদিন লোকসভার সদস্য হিসাবে প্রথম শপথ নেন নরেন্দ্র মোদী। একে একে বাকিরা। সংস্কৃতে শপথ নেন উমা ভারতী, সুষমা স্বরাজ, হর্ষবর্ধন, মীনাক্ষি লেখি, সাহেব সিং, ভুবনচন্দ্র খান্ডুরি, কেশবপ্রসাদ মৌর্য প্রমুখ বিজেপি সাংসদ।
বাংলায় প্রথম শপথবাক্য পাঠ করেন শিলচরের কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেব। তার পর পশ্চিমবঙ্গের বাইরের আর এক সাংসদ বাংলায় শপথ নেন। তিনি হলেন ত্রিপুরার সিপিএম সাংসদ শঙ্করপ্রসাদ দত্ত। তাঁর দিকে ইংরেজিতে লেখা শপথবাক্য এগিয়ে দেওয়া হলে তিনি স্পষ্ট বলেন, "বাংলায় পড়ব। বাংলা কপিটা দিন।"
পরপর বিভিন্ন রাজ্যের সাংসদদের পর পালা আসে পশ্চিমবঙ্গের। একদম শেষে। বৃহস্পতিবার রাজ্যের ৩৯ জন সাংসদ শপথগ্রহণ করেছেন। গরহাজির ছিলেন তিনজন যথা দীপক অধিকারী (দেব), অধীররঞ্জন চৌধুরী এবং দীনেশ ত্রিবেদী। পশ্চিমবঙ্গের সাংসদদের শপথবাক্য পাঠ শুরু হয় কোচবিহারের রেণুকা সিনহাকে দিয়ে। তিনি ইংরেজিতে শপথ নেন। বাংলায় যে সাংসদরা শপথ নিয়েছেন, তাঁরা হলেন বিজয়চন্দ্র বর্মন (জলপাইগুড়ি, তৃণমূল কংগ্রেস), তাপস পাল (কৃষ্ণনগর, তৃণমূল কংগ্রেস), কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর (বনগাঁ, তৃণমূল কংগ্রেস), কাকলি ঘোষদস্তিদার (বারাসত, তৃণমূল কংগ্রেস), ইদ্রিশ আলি (বসিরহাট, তৃণমূল কংগ্রেস), অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (ডায়মন্ড হারবার, তৃণমূল কংগ্রেস), সুব্রত বক্সি (কলকাতা দক্ষিণ, তৃণমূল কংগ্রেস), প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় (হাওড়া, তৃণমূল কংগ্রেস), রত্না দে নাগ (হুগলী, তৃণমূল কংগ্রেস), শুভেন্দু অধিকারী (তমলুক, তৃণমূল কংগ্রেস), সন্ধ্যা রায় (মেদিনীপুর, তৃণমূল কংগ্রেস), সৌমিত্র খান (বিষ্ণুপুর, তৃণমূল কংগ্রেস), সুনীল মণ্ডল (বর্ধমান পূর্ব, তৃণমূল কংগ্রেস), মমতাজ সংঘমিত্রা (বর্ধমান-দুর্গাপুর, তৃণমূল কংগ্রেস), অনুপম হাজরা (বোলপুর, তৃণমূল কংগ্রেস), শতাব্দী রায় (বীরভূম, তৃণমূল কংগ্রেস), মহম্মদ সেলিম (সিপিএম, রায়গঞ্জ) এবং বদরুদ্দজোহা খান (সিপিএম, মুর্শিদাবাদ)।
সাঁওতালি ভাষায় শপথ নিয়েছেন ঝাড়গ্রামের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ উমা সোরেন। তাঁর পোশাক ছিল অভিনব। ব্লাউজে ও শাড়ির পাড়ে জোড়াফুল চিহ্ন এবং বড়-বড় অক্ষরে লেখা মা-মাটি-মানুষ।
সাংসদরা সবাই ঈশ্বর বা আল্লার নামে শপথ নিলেও বনগাঁর সাংসদ কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর শপথ নেন 'ঠাকুর হরিচাঁদ'-এর নামে। আর শপথ শেষে তিনি বলেন "জয় হরিচাঁদ জয় গুরুচাঁদ।"
ইদ্রিশ আলি শপথবাক্য পাঠ শেষ করে স্লোগান দিয়ে ওঠেন, "মা-মাটি-মানুষ জিন্দাবাদ।"
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বোলপুরের সাংসদ অনুপম হাজরা শপথবাক্য শেষ করে বলেন, "জয় বাংলা, জয় বাঙালি।"