চেন্নাইয়ে ৬ মাস ধরে গণধর্ষণের শিকার বধির নাবালিকা! আটক ১৮ জন
চেন্নাইয়ে ৬ মাস ধরে এক ১১ বছর বয়সী মেয়েকে ধর্ষণ করেছে ১৫ জনেরও বেশি পুরুষ। ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে।
১১ বছরের বধির এক কিশোরী। গত ৬ মাস ধরে তাদের হাউসিং কমপ্লেক্সের মধ্যেই তাকে ক্রমাগত ধর্ষণ করে আসছিল ২৩ থেকে ৬৬ বছর বয়সী ১৫ জনেরও বেশি পুরুষ। অবশেষে গত ১৩ জুলাই অসম্ভব পেটে যন্ত্রণা অনুভব করায় কিশোরী মুখ খোলে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে।
না, এটা কোনও প্রান্তিক এলাকার ঘটনা নয়। এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে ঝাঁ চকচকে চেন্নাই শহরের এক হাউসিং কমপ্লেক্সে। ৩০০টি ফ্ল্য়াটের সেই কমপ্লেক্সে কখনও তাকে ধর্ষণ, কখনও গণধর্ষণ করেছে হাউসিং কমপ্লেক্সেরই সিকিওরিটি স্টাফ, লিফ্ট চালক, প্লাম্বার, হাউসকিপিং স্টাফ, এমনকী বাইরের লোকেরাও।
পুলিশ জানিয়েছে, অত্যাচারের শুরু হয়েছিল চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। রবি নামে ৬৬ বছরের লিফ্ট চালক ওই কিশোরীকে হাউসিং কমপ্লেক্সেরই এক নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। কিশোরীটি ভয়ে বাড়িতে কিছু না জানানোয় পেয়ে বসে রবি।
দিন কয়েক বাদে আবার সে কিশোরীর উপর চড়াও হয়। এবার সঙ্গে ছিল আরও দুজন, তারা বাইরের লোক। তিনজনেই মদ্যপ ও মাদকের প্রভাবে ছিল বলে জানিয়েছে কিশোরীটি। ওইদিন তাকে গণধর্ষণ করা হয়। সে ঘটনার ভিডিও তুলে কিশোরীটিকে ভয় দেখানো হয়। ঘটনার কথা কাউকে জানাতে বারণ করা হয়। কিশোরীটিও ভয়ে কাউকে কিছু জানায়নি।
এরপর থেকে ওই কিশোরীর ধর্ষণ প্রায় নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়। বাড়তে থাকে ধর্ষকের সংখ্যা। তারা অ্যাপার্টমেন্টের গেটে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করত। স্কুল থেকে ফেরার পথেই ওই কিশোরীকে পাকড়াও করত তারা। তারপর কখনও ওয়াশরুমে, কখনও টেরাসে, কখনও জিমে কখনও বেসমেন্টে কখন বা ফাঁকা থাকা কোনও ফ্লোরে নিয়ে গিয়ে তার উপর চলত অত্যাচার।
18 men held for allegedly sexually harassing an 11-year-old girl for over a period of 7 months in Chennai. The accused involve security men, lift operator & water suppliers in the apartment where the minor girl stays. Police investigation underway pic.twitter.com/DcJIUhwDCG
— ANI (@ANI) July 17, 2018
কিশোরীর মা জানিয়েছেন, কাজের সূত্রে কিশোরীর বাবা সকাল সকাল বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। তার দিদি পড়াশোনা করতে অন্য শহরে থাকে। কিশোরীর স্কুল থেকে ফিরতে দেরী হচ্ছে দেখে তিনি মনে করতেন খেলাধূলা করতে গিয়ে দেরী হচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি জেনেছেন, সেই সময়ে তাঁর মে.য়ের উপর চলত চরম অত্যাচার। কখনও ধর্ষণের সময় তার চোখমুখ বেঁধে দেওয়া হত, কখনও তার গলায় পেচিয়ে দেওয়া হত বেল্ট, কখনও বা তাকে মাদক মেশানো ঠান্ডা পানীয়ও খাইয়ে দেওয়া হত।
ছ'মাসের এই অত্যাচারের পর অসম্ভব পেটে ব্যথা হওয়াতেই বাধ্য হয়ে সব ঘটনা দিদিকে জানায় কিশোরীটি। তারপরই বাড়ির লোকজন সব কথা জানতে পারে। গত রবিবার তার মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়েছে। সোমবার মহিলা কোর্টে তার হয়ান নথিবদ্ধ করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে আটক ১৮ জনের মধ্যে ৩ জন ইতিমধ্যেই তাদের দোষ স্বীকার করেছে।