মুম্বইয়ের আর্থার রোড সংশোধনাগারে করোনা মুক্ত ১৭৭ জন বন্দি
মুম্বইয়ের আর্থার রোডের সংশোধনাগারের ১৮১ জন করোনা আক্রান্ত বন্দিদের মধ্যে ১৭৭ জন সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে উঠেছে। তাদের টেস্ট রিপোর্টে করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছিল। মহারাষ্ট্রের মধ্যে আর্থার রোডের সংশোধনাগারই প্রথম যেখানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের খোঁজ মেলে এবং দ্রুত সেই সংখ্যাটা বাড়তে থাকে।

১৭৭ জন সুস্থ
সংশোধনাগারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে কড়া সুরক্ষা বিধি মেনে চলার ফলেই পরিস্থিতির বদল হয়েছে। ১৮১ জনের মধ্যে শুধুমাত্র ১ জন পজিটিভ বলে জানা গিয়েছে এবং বাকিরা সেরে উঠেছে। যদিও এখনও তিনজন বন্দির রিপোর্ট আসা বাকি রয়েছে তবে বাদবাকি ১৭৭ জন সম্পূর্ণভাবে করোনা মুক্ত এবং তাদের রিপোর্টও নেগেটিভ এসেছে। জেল কর্তৃপক্ষ আশাবাদী বাকি চারজনের টেস্টের রিপোর্টও নেগেটিভ আসবে এক সপ্তাহের মধ্যেই।

আর্থার রোড সহ সব জেলই লকডাউনের আওতায়
সংশোধনাগারের আইজি দীপক পাণ্ডে বলেন, ‘আর্থার রোড সহ মুম্বইয়ের সব জেলই লকডাউনের আওতায় রয়েছে। এখনও একজন পজিটিভ রয়েছে এবং সেটাই আমাদেরকে সজাগ করে রেখেছে। আমরা দ্রুত আমাদের সব বন্দিদের করোনা টেস্ট করাই এবং ১৫৮ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। টেস্টের পর ফলাফল ২-৩দিন পরে আসে, এর মধ্যে আমরা ওই বন্দিদের আলাদা করতে পারিনি এবং আরও কিছু টেস্টের পর সংখ্যাটা ১৮১-তে পৌঁছাল।' তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের জেলের মধ্যেই কোয়ারেন্টাইনে রাখি এবং জেলের মধ্যেই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও মাল্টিভিটামিনের মাধ্যমে জেলেতেই চিকিৎসা শুরু করে দিই। আয়ুর্বেদ, হোমিওপ্যাথি ও ভেষজ ষুধ দিয়ে চিকিৎসা চলতে থাকে। সকলকে অবাক করে দিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে ১২০ জন বন্দি সুস্থ হয়ে উঠলেন। আমরা এরপরও চিকিৎসা চালিয়ে যাই এবং ফল সন্তোষজনক পাই।'

সংশোধনাগারের ২৮ জন কর্মী করোনা পজিটিভ
আইজি জানিয়েছেন যে সংশোধনাগারের ২৮ জন কর্মীও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তবে তাঁদের মধ্যে ২৬ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং অধিকাংশই ফের কাজে যোগ দিয়েছেন। এঁদের চিকিৎসা আর্থুর রোড সংশোধনাগারের বাইরে বিএমসির কোভিড সুবিধাযুক্ত জায়গায় হয়েছে।' তিনি জানিয়েছেন যে আর্থার রোডের সংশোধনাগারের কাছেই রয়েছে কস্তুর্বা হসাপাতাল, যেটি খুব বড় কোভিড হাসপাতালও। তাই এই সংশোধনাগারের বন্দিদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

বাইকুল্লা জেল নিরাপদ জায়গায় রয়েছে
জেল কর্তৃপক্ষ বলে, ‘মুম্বইয়ের অন্য সংশোধনাগার যেমন বাইকুল্লা জেল অনেকটা নিরাপদ জায়গায় রয়েছে। বাইকুল্লা জেলে মাত্র একজন মহিলা বন্দির করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে এবং তাঁর চিকিৎসাও চলছে। তবে একটি কথা আমি বলব যে জেজে হাসপাতালের চিকিৎসকরা এবং অন্যান্য কর্মীরা উল্লেখযোগ্যভাবে ভাল কাজ করেছেন যা আমাদের জেলে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করেছে।' আর্থার রোড জেলে করোনা সংক্রমিত হওয়ার অন্যতম কারণ হল এই জেলে অতিরিক্ত বন্দিদের ভিড় হয়ে গিয়েছে এবং যে কারণে কোভিড-১৯-এ মহারাষ্ট্রের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেল হিসাবে পরিচিত হয়ে যায়।

অতিরিক্ত বন্দি আর্থার জেলে
আর্থার জেলে বন্দি নেওয়ার সক্ষমতা কমপক্ষে ৮০৪ জনের, কিন্তু মহামারির সময় বন্দির সংখ্যা বেড়ে ৩৭০০ হয়ে যায়। এমনকী কম দোষযুক্ত অপরাধী এবং গর্ভবতী মহিলাদের হাই কোর্ট কর্তৃক দুই দফা প্রাথমিক জামিনের পরেও কারাগারে বন্দিদের সংখ্যা ২১০০ এরও বেশি। সংশোধনাগারে ভাইরাসের সপ্রকোপ কমানোর প্রসঙ্গে আইজি জানান যে প্রথাগত ও অপ্রথাগতভাবে বন্দিদের চিকিৎসা চালানো হয়েছে।

বন্যায় বিধ্বস্ত মহারাষ্ট্র , ১০ ফুট জলের তলায় কোলাপুর, ক্ষতিগ্রস্ত ২ লক্ষেরও বেশি