কন্যা শিশু: ফিনল্যান্ডে একদিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী হলো ১৬ বছরের তরুণী
কন্যা শিশু: ফিনল্যান্ডে একদিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী হলো ১৬ বছরের তরুণী
নারী-পুরুষের সমতার ক্ষেত্রে ফিনল্যান্ডকে প্রায়ই আদর্শ উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়।
কিন্তু সে দেশের প্রধানমন্ত্রী সান্না মারিন লিঙ্গ-সমতার লড়াইকে আরও একধাপ সামনে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, এবং ১৬ বছরের এক তরুণীকে একদিনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে দিয়েছেন।
ফিনল্যান্ডের 'একদিনের প্রধানমন্ত্রী' হিসেবে তরুণী আভা মার্টো নতুন কোন আইন তৈরি করতে পারবেন না। কিন্তু অন্যদিনের মতোই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি ফিনিশ রাজনীতিবিদদের সাথে বৈঠক করেন। বিশেষভাবে প্রযুক্তিখাতে নারীদের অধিকার নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেন।
মেয়ে শিশুদের নিয়ে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক দিবসকে সামনে রেখে ফিনল্যান্ডে এই ক্ষমতার হাতবদল ঘটে।
কন্যা শিশুদের অধিকার তুলে ধরতে জাতিসংঘ প্রতিবছর ১১ই অক্টোবর সারা বিশ্বে এই দিনটি পালন করে থাকে।
ফিনল্যান্ড এ নিয়ে গত চার বছর ধরে 'গার্লস টেকওভার' নামে এক আন্তর্জাতিক কর্মসূচি পালন করে আসছে।
এই কর্মসূচিতে সারা বিশ্বের কিশোরী ও তরুণীরা বিভিন্ন দেশে রাজনীতি, ব্যবসা এবং অন্যান্য খাতের প্রধান হিসেবে একদিনের জন্য দায়িত্ব পালন করে।
আরও পড়তে পারেন:
- কন্যাশিশুর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি কী বদলেছে?
- ভারতে ১৩২টি গ্রামে কোন মেয়ে শিশু জন্মায়নি?
- 'ওরা বলছিল 'হামিল', কিন্তু আমি বুঝি নাই'
চলতি বছর মেয়ের জন্য ডিজিটাল দক্ষতা এবং প্রযুক্তিখাতে সুযোগসুবিধা বৃদ্ধির ওপর জোর দেয়া হচ্ছে।
এই কর্মসূচিতে কেনিয়া, পেরু, সুদান এবং ভিয়েতনাম থেকে মেয়েদেরকে বাছাই করা হয়েছে।
বুধবার এ নিয়ে এক বৈঠকে ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী আভা মার্টো বলেন, "এই কাজ নিয়ে আজ কথা বলতে পেরে আমি খুবই খুশি। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি, আমাকে যে একথা বলতে হচ্ছে তা আমি মোটেও বলতে চাই না। গার্লস টেকওভার আন্দোলন হচ্ছে, সেটাও হওয়া উচিত না।"
"কারণ, বাস্তবতা হলো আমরা এখনও লিঙ্গ-সমতা অর্জন করতে পারিনি। বিশ্বের কোথাও এটা হতে পারেনি। এক্ষেত্রে আমাদের অনেক অগ্রগতি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনও আরও অনেক কাজ বাকি রয়ে গেছে।"
এই টিনএজার অল্প বয়স থেকেই পরিবেশ এবং মানবাধিকার সংক্রান্ত আন্দোলনের সাথে যুক্ত রয়েছে।
বুধবার ওই বিশেষ দিনে আভা মার্টোর শেষ কাজ ছিল হবে প্রধানমন্ত্রী মারিনের সাথে বৈঠক করে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করা এবং প্রযুক্তিখাতে লিঙ্গ-সমতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা।
প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বের এই সাময়িক হাতবদলের আগে সান্না মারিন এক ভাষণে প্রযুক্তিখাতে সবার সমান অধিকারের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
"প্রযুক্তির সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে দেশে দেশে, এবং দেশের মধ্যে যেন কোন বিভেদ সৃষ্টি না হয়," ভাষণে মন্তব্য করেন তিনি।
গত বছর সারা বিশ্বে লিঙ্গ-সমতার ওপর বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম যে তালিকা তৈরি করেছে, সেই তালিকায় ফিনল্যান্ডের অবস্থান ছিল তৃতীয়।
মিজ মারিনও ফিনল্যান্ডে গত বছরের নির্বাচনে জিতে বিশ্বে সবচেয়ে কম বয়সী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ওই সময় তার বয়স ছিল ৩৪ বছর।
তার নেতৃত্বাধীন জোট সরকারে শরিক দল রয়েছে মোট চারটি - তার মধ্যে তিনটি দলের প্রধানই হলেন নারী।
বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর:
- যে কারণে ভেঙ্গে ফেলা হল আবরারের স্মৃতিতে তৈরি স্তম্ভ
- আমেরিকায় নির্বাচন ২০২০: চীন ও রাশিয়া কাকে বিজয়ী হিসেবে দেখতে চায়?
- পঙ্খীরাজ-জামাইভোগ-লক্ষ্মীজটা - যে হাজারো ধান হারিয়েছে বাংলাদেশ