লকডাউনে কাজ গিয়েছে মায়ের, প্রিয়জনের পেট চালাতে পড়া ছেড়ে চা বিক্রি করে লড়াই কিশোরের
নারী–পুরুষের বিভেদ করতে করতে মাঝে মাঝে আমরা এটা ভুলে যাই আত্মত্যাগ শুধু নারীই নয়, পুরুষও করতে পারে। তারই জীবন্ত চিত্র ধরা পড়ল মুম্বইতে। কোভিড–১৯ লকডাউনের সময় মায়ের চাকরি চলে যাওয়ার কারণে সংসারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিল ১৪ বছরের এক কিশোর। সেই জন্য সে তার পড়াশোনা বন্ধ রেখে মাকে আর্থিক সহায়তা করতে চা বেচতে শুরু করে, যাতে তার বোন অনলাইনে পড়াশোনা করতে পারে।

মুম্বইয়ের ভেন্ডি বাজার সংলগ্ন এলাকায় শুভন একটি দোকানে চা তৈরি করে এবং তা কাছাকাছি এলাকায় বিক্রি করে। তার নিজের কোনও দোকান নেই। শুভনের বাবা ১২ বছর আগে মারা যান এবং তারপর থেকে একা মা সন্তানদের মানুষ করতে চাকরি করতে শুরু করে। তিনি একটি স্কুল বাসের অ্যাটেনডেন্ট হিসাবে কাজ করতেন কিন্তু লকডাউনের কারণে ওই স্কুলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য তাঁর চাকরিও চলে যায়।
মুম্বই বাজারে চা দিতে দিতে শুভন বলে, 'আমার বোন অনলাইনে ক্লাসের মাধ্যমে পড়াশোনা করছে। আমার স্কুল খুললে আমি আবার পড়াশোনা শুরু করব।’ নিজের পরিবারের বিষয়ে বলতে গিয়ে শুভন বলে, 'আমার মা স্কুল বাসে অ্যাটেনডেন্ট ছিলেন কিন্তু স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আমাদের আর্থিক অনটন শুরু হয়। আমি ভিন্ডি বাজারের একটি দোকানে চা তৈরি করি এবং তা নাগপাড়া ও অন্যান্য জায়গাতে বিক্রি করি। আমি দিনে ৩০০–৪০০ টাকা উপার্জন করি, তার থেকে কিছুটা মাকে দিই এবং খুব অল্পই জমিয়ে রাখতে পারি।’
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে ৮০ বছরের বৃদ্ধ দম্পতি দিল্লির মালভিয়া নগরের রাস্তায় স্টল দিয়ে খাবার বিক্রি করছেন। তাঁদের সাক্ষাতকারে উঠে আসে লকডাউনের সময় তাঁদের কতটা আর্থিক কষ্টের মধ্য দিয়ে চলতে হয়েছিল। এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বহু তারকাই তা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন এবং তারপরই ক্রেতাদের ভিড় জমতে শুরু করে দোকানে, যা দম্পতির ভাগ্য ফিরিয়ে দেয়।
