৬৮ দিন অনশন করে মৃত্যু হায়দ্রাবাদের কিশোরীর
হায়দ্রাবাদ, ৮ অক্টোবর : মোট ৬৮ দিন স্বেচ্ছ্বায় অনশন করে হায়দ্রাবাদে মৃত্যু হল এক নিছক ১৩ বছরের কিশোরীর। জৈন রীতি মেনে চৌমাসের পূর্ণ তিথিতে এই ধরনের আচার করা হয়। যার ফলে অন্ন-জল ত্যাগ করে স্বর্গ লাভের জন্য দেহ প্রস্তুত হয়। একে জৈন ধর্মানুযায়ী বলা হয় সান্থারা প্রথা। [হাসপাতালে লোডশেডিং, মোবাইলের আলোয় জন্ম নিল সদ্যজাত]
আরাধনা নামে কিশোরীটি অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। এতদিন অনশন তাকে কেন করতে দেওয়া হল তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। গত সপ্তাহে প্রায় ১০ সপ্তাহের অনশন শেষ করে হাসপাতালে ভর্তি হলে আরাধনা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। [নাগপুরে যুবকের দেহ থেকে ১৮ সেন্টিমিটার লেজ কেটে বাদ দিলেন চিকিৎসকেরা]
আরাধনার মৃত্যুর পরে তাঁকে 'বাল তপস্বী' আখ্যা দিয়ে প্রায় ৬ হাজার মানুষ শেষযাত্রায় অংশ নেন। কিশোরীর মৃত্যুকে সকলে মিলে উদযাপন করেন। [কবর থেকে বের করে মৃত আত্মীয়ের "মেক-ওভার"! এটাই প্রথা এখানে!]
জানা গিয়েছে, কিশোরী আরাধনার পরিবারের সেকেন্দ্রাবাদে গয়নার ব্যবসা রয়েছে। কেন তারা বাড়ির মেয়েকে অনশনে বসতে দিলেন তা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তোলেন। জবাবে বাড়ির লোকেরা জানান, এই ধরনের উপাচার অনেকেই করেন। জৈন সমাজে তাদের লোকে কদর করে। [১০৪ বছর বয়সী বৃদ্ধার নিতম্ভে অস্ত্রোপচার করে রেকর্ড গড়লেন চিকিৎসকেরা]
তবে এই ধরনের প্রথা সাধারণত বয়স্করা পালন করেন যারা জীবন উপভোগ করে ফেলেছেন। আরাধনার মতো কিশোরী যার সামনে পুরো জীবন পড়ে ছিল সে কেন এমন কাজ করল তা বিস্ময়ের বলে জৈন সমাজের একজন মন্তব্য করেছেন।
এসব অভিযোগ শুনে আরাধনার পরিবার জানাচ্ছে, গোটা ঘটনাই সকলে জানতেন। এর আগেও ৪১ দিনের অনশন করেছিল আরাধনা। সেবার সে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছিল।
এবারের ঘটনাও সকলে জানতেন। অনশন চলাকালীন শীর্ণ আরাধনাকে বধূরূপে সকলে বরণ করেছেন, রথে বসিয়ে ছবি তুলেছেন। এমনকী তেলঙ্গানার মন্ত্রী তা নিয়ে খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। এবং স্থানীয় বিধায়ক বিবি পাতিল আরাধনার সান্থারা হওয়া নিয়ে অনুষ্ঠানেও যোগ দিয়েছেন।
ফলে সকলের চোখের সামনেই বলা যায় একটি কিশোর প্রাণ ধর্মকে আঁকড়ে ধরকতে গিয়ে বলিদান দিয়ে ফেলল। শিশুর অধিকার রক্ষা নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলির তাই আবেদন, ধর্মীয় কারণে কেউ নিজের জীবনকে বিপদে ফেলুক, এরকম কাজ যেন আর কেউ না করে। ধর্মীয় নেতারা যেন এই বিষয়ে নজর দেন।