আড়ি পাতার চেষ্টা করা হয় ১২১ জন ভারতীয়র হোয়াটসঅ্যাপে, সরকারকে সেপ্টেম্বরেও সতর্ক করেছিল সংস্থাটি
১২১ জন ভারতীয়র হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এবং সরকারকে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে এই তথ্য দিয়েছিল বলে দাবি করল হোয়াটসঅ্যাপ।
১২১ জন ভারতীয়র হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এবং সরকারকে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে এই তথ্য দিয়েছিল বলে দাবি করল হোয়াটসঅ্যাপ। মে মাসে আড়ি পাতা নিয়ে সতর্কতামূলক বার্তা পাঠানোর পর সরকারকে পাঠানো এটি দ্বিতীয় বার্তা ছিল বলে দাবি করল সংস্থাটি।
হোয়াটসঅ্যাপের এই দাবি মানতে নারাজ সরকার
হোয়াটসঅ্যাপে আড়ি পাতা নিয়ে চলতে থাকা বিতর্কে নিজেদের সাফাইতে সরাকরের একটি সূত্র বলে, হোয়াটসঅ্যাপ শুধু প্রযুক্তিগত ত্রুটির কথা জানিয়েছিল। এর আগে সরকারের পক্ষে দাবি করা হয়েছিল যে আড়ি পাতা সংক্রান্ত কোনও তথ্য হোয়াটসঅ্যাপের থেকে পায়নি তারা। অবশ্য হোয়াটসঅ্যাপ বিবৃতি জারি করে জানায় যে মে মাসে তারা সরকারকে আড়ি পাতা নিয়ে সতর্ক করেছিল। সরকার জানায় মে মাসে সরকারের প্রযুক্তিগত একটি সংস্থাকে ত্রুটির বিষয়ে জানিয়েছিল হোয়াটসঅ্যাপ। তবে সরকারের দাবি, সেই সময় স্পষ্ট করে আড়ি পাতার কথা জানানো হয়নি। এমন কি পেগাসাস ম্পাইওয়্যারেরও উল্লেখ ছিল না তাতে।
সংস্থার বক্তব্য
হোয়াটসঅ্যাপের এই বিষয়ে বক্তব্য,আমাদের মূল উদ্দেশ্য হোয়াটস্যাপ ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা রক্ষা করা। গত মে মাসেই একটি নিরাপত্তা বিষয়ক সমস্যা সমাধান করা হয় এবং ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে অবগত করা হয়। হোয়াটসঅ্যাপ আরও জানিয়েছে, তাদের কিছু প্রযুক্তিগত ত্রুটি ছিল। যার ফাঁকফোকর খুঁজে বের করেই এই হ্যাকিং চালানোর প্রচেষ্টা করা হয়েছে। এই বিষয়ে তারা ভারত সরকারকে গত মে মাসেই অবগত করেছিল।
অভিযোগ খারিজ করে বিজেপির
যদিও সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে বিজেপি নেতা অমিত মালভিয়া বলেন, "হোয়াটসঅ্যাপের বক্তব্যকে আমরা সর্বাঙ্গীন সত্য হিসেবে মানতে পারি না। সেই বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে সকারকে আক্রমণ করা যায় না।" তিনি আরও বলেন, "স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে যে ইজরায়েলের সংস্থা এনএসও-র তৈরি করা স্পাইওয্যার তারা তাদের কোনও সংস্থাকেই ব্যবহার করতে দেয়নি।"
সরকারকে কটাক্ষ বিরোধীদের
আড়ি পাতা নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপের কাছে জবাবদিহি চেয়েছে সরকার। তবে এই বিষয়ে সরকারকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। এই বিষয়ে সরকারকে তোপ দেগে টুইট করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধি। এক টুইট বার্তায় রাহুল লেখেন, "হোয়াটসঅ্যাপের থেকে সরকার জানতে চেয়েছে যে আড়ি পাতার জন্য এই প্রযুক্তি কে এনেছে। এটা অনেকটা দাঁসোকে এটা জিজ্ঞাসা করা মতো যে ভারতকে রাফাল বিক্রি করে সবথেকে লাভবান কে হয়েছে।"
সংসদে হোয়াটসঅ্যাপ বিতর্ক
এদিকে হোয়াটসঅ্যাপে আড়ি পাতা নিয়ে চলমান বিতর্কে সরকারকে জেরবার করতে কোমর বেঁধে নামতে চলেছে কংগ্রেস। জানা গেছে শীতকালীন অধিবেশনে এই নিয়ে সরকারকে কোণঠাসা করতে তৈরি হচ্ছেন অধীর চৌধুরীরা। হোয়াটসঅ্যাপের করা এই নতুন দাবিতে আরও উত্তপ্ত হতে চলেছে পরিস্থিতি। স্বরাষ্ট্র বিষয়ক সাংসদীয় কমিটি ইতিমধ্যেই সরকারকে নোটিস পাঠিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ নিয়ে চলা বিতর্কের বিস্তারিত বিবরণ চেয়েছে। ১৫ নভেম্বর কমিটির বৈঠক বসতে চলেছে। তাতে হোয়াটসঅ্যাপ ছাড়াও কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা হবে।