আধার কার্ড না থাকায় বন্ধ রেশন, ঝাড়খণ্ডে অনাহারে প্রাণ গেল নাবালিকার
আধার কার্ড না হওয়ায় রেশন বন্ধ হয়ে যায় ঝাড়খণ্ডের সিমডেগা এলাকায় অনাহার, অপুষ্টিতে প্রাণ গেল দুস্থ পরিবারের ১১ বছরের বালিকার
মোদীর ডিজিটাল ইন্ডিয়ার গেরোয় অনাহার, অপুষ্টিতে প্রাণ গেল দুস্থ পরিবারের ১১ বছরের বালিকার। অন্তত এমনই অভিযোগ মানবাধিকার কর্মীদের। আধার কার্ড না হওয়ায় রেশন বন্ধ হয়ে যায় ঝাড়খণ্ডের সিমডেগা এলাকার ওই পরিবারের। এরপরই অনাহারে, অপুষ্টিতে মৃত্যু হয় তার। খাদ্য নিরাপত্তা আইনে ওই পরিবারের বিশেষ সুযোগ- সুবিধা পাওয়ার কথা থাকলেও আধার কার্ড না থাকায় সেই তালিকা থেকে ওই পরিবারের নাম বাদ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
ঝাড়খণ্ডের সিমডেগা জেলার করিমতি গ্রামে গত ৬ মাস ধরেই রেশন বন্ধ কোয়েলি দেবীর পরিবারের। তিনি আধার কার্ড পাননি। ফলে কেন্দ্রের নিয়ম অনুযায়ী রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার নম্বর যোগ না হওয়ায় রেশনের তালিকা থেকে তাঁর পরিবারের নাম বাদ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ খাদ্য সুরক্ষার অধিকার নিয়ে কাজ করা সমাজকর্মীদের। বিপিএল পরিবার হওয়ায় তিনি অন্ত্যোদয় যোজনায় বিশেষ সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা তাঁর। কিন্তু কোয়েলি দেবী সহ ১০টি পরিবারের এভাবেই নাম কাটা যাওয়ায় গত ৬ মাস ধরে রেশন তুলতে পারেননি তাঁরা। যার ফলে অনাহার, অপুষ্টিতে গত ২৮শে সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় কোয়েলি দেবীর ১১ বছরের মেয়ে সন্তোষী কুমারীর।
খাদ্য সুরক্ষাকর্মীদের অভিযোগ, এই ৬ মাস ধরে স্কুলের মিড ডে মিল খেয়েই বেঁচে ছিল সন্তোষী। কিন্তু দুর্গাপুজোর ছুটি পড়ে যাওয়ায় ৭-৮ দিন কিছু খেতে পায়নি সে। যার জেরেই তার মৃত্যু হয়। অবশ্য রাজ্য সরকার এই অভিযোগ মানতে নারাজ। ঝাড়খণ্ড সরকারের দাবি, অনাহারে নয়, ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয় সন্তোষীর মৃত্যু হয়েছে। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, রাজ্য়ের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষই আধার কার্ডের আওতায় চলে এসেছে। এমনকী আধার না থাকলেও তাদের রেশন দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি রাজ্য সরকারের।
এভাবে রেশনের তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে ঝাড়খণ্ড সরকার সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছে বলে অভিযোগ মানবাধিকার কর্মীরা। তাঁদের দাবি, গোটা ঝাড়খণ্ডজুড়েই এটা রোজকার সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কখনও ইন্টারনেট থাকে না, কখনও বিদ্যুৎ থাকেনা, ফলে আধারকার্ড সংযোগ করা সম্ভব হয় না।