এসসিও সামিটে প্রথম পূর্ণ সদস্য দেশ হিসেবে যোগ দিয়েছে ভারত, সম্মেলন বিষয়ে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
এই প্রথম ভারত পূর্ণাঙ্গ সদস্য হিসাবে যোগ দিয়েছে এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে। এবছরের এই সম্মেলন বিষয়ে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে নিন।
শনিবারই চিনের কুইংদাও শহরে সেদেশের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অবশ্য মোদী কুইংদাওতে এসেছেন এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে। গত বছর কাজাখাস্তানের আস্তানা শহরে এই অর্গানাইজেশনের পূর্ণ সদস্য হিসাবে ভারত ও পাকিস্তানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। সেই সম্প্রসারণের পর এটি প্রথম এসসিও সামিট। এই সম্মলনে ভারত সন্ত্রাসবাদদের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক ও বিশ্বব্যপী পদক্ষেপের নেওয়া ও বাণিজ্য সম্প্রসাকরণের জন্য কার্যকরি সংযোগ সংযোগের পক্ষে সওয়াল করবে বলে জানা গিয়েছে। সম্মেলন চলকালীন চিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আরও বেশ কয়েকবার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করার কথা মোদীর। সেইসঙ্গে আরও কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা প্রধানমন্ত্রীর। একনজরে এসসিও শীর্ষসম্মেলন ২০১৮ -র কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দেখে নেওয়া যাক।
১. শনিবার স্থানীয় সময় বেলা ১টা বেজে ২০ মিনিট নাগাদ পূর্ব চিনের শানডং প্রদেশএর শহর কুইংদাও-তে এসে পৌঁছান মোদী। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই জিনপি-এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন মোদী। বানিজ্য ও বিনিয়োগে পারস্পরিক সহায়তা বৃদ্ধি-সহ সামগ্রিক ভাবে দুদেশের বন্ধন মজবুত করার ব্যাপারে দুই নেতাই জোর দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
২. এই নিয়ে এবছর দ্বিতীয়বারের মতো চিন সফরে এসেছেন মোদী। শনিবারের বৈঠকের মাত্র ছয় সপ্তাহ আগেই চিনের ইউহান শহরে ঘরোয়া বৈঠক করেছিলেন মোদী ও শি। ওই বৈঠক থেকেই দুই দেশএর সম্পর্ক উন্নত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।
৩. আটটি এসসিও-র পূর্ণ সদস্যের দেশ ও চারচি রপর্যহবেক্ষক দেশ ছাড়াও অন্যআন্য আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলির নেতারাও উপস্থিত থাকছেন এসসিও-র শীর্ষ সম্মেলনে। সম্মেলনে সন্ত্রাসবাদ, চরমপন্থা এবং মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপশি আরও বেশ কিছু প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথে।
৪. সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন বা এসসিও এর পূর্ণ সদস্যদেশগুলি হল, চিন, ভারত, রাশিয়া, কাজাখস্তান, কিরঘিজিস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান এবং পাকিস্তান। পর্যবেক্ষক দেশ হিসেবে আছে আফগানিস্তান, ইরান, মঙ্গোলিয়া, এবং বেলারুশ।
৫. এই বছরের শীর্ষ সম্মেলনে ভারত এসসিও সদস্যদের দেশগুলির মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য আঞ্চলিক সংযোগ প্রকল্পের গুরুত্বের উপর জোর দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইরানের চাবাহার বন্দর প্রকল্প বা সম্পদ-সমৃদ্ধ মধ্য এশিয়ার দেশগুলিতে যোগাযোগ সহজ করার জন্য ৭২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ ট্রান্সপোর্ট করিডোরের মতো সংযোগ প্রকল্পগুলির উপর জোর দিচ্ছে ভারত।
Prime Minister Narendra Modi meets Chinese President Xi Jinping at the welcome ceremony of Shanghai Cooperation Organisation (SCO) Summit in Qingdao. #China pic.twitter.com/VlvTMUG8Yg
— ANI (@ANI) June 10, 2018
৬. শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি চিন-ভারত সম্পর্কের উন্নতির চেষ্টাও চলবে। প্রধানমন্ত্রী মোদী ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দুই দিনে আরও কয়েকবার বৈঠকে বসবেন। তাতে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারত চায় চিনের আইটি ও ফার্মাসিউটিকাল সেক্টর মুক্ত বানিজ্যের জন্য খুলে দিক। গত বছর এই দুই ক্ষেত্রে চিনের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৫১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
৭. প্রধানমন্ত্রী মোদী এসসিও শীর্ষ সম্মেলন্র পাশাপাশিই সদস্য দেশগুলির প্রায় পাঁচ- ছজন নেতার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন বলে জানা গিয়েছে। পাকিস্তান থেকে বৈঠকে যোগ দিয়েছেন সেদেশের প্রেসিডেন্ট মামনুন হোসেন। মোদীর আলোচনার তালিকায় তাঁর নামও আছে কিনে সে বিষয়টি নিশ্চিত নয়।
৮. বিভইন্ন আন্তর্ঝাতিক ফোরামেই ভারত পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদের পরিকাঠামো ভাঙতে ইসলামাবাদের উপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। ভারত দাবি জানিয়েছে পাকিস্তানের মদতেই ওই সন্ত্রাসবাদীরা মাথা চাড়া দিচ্ছে। এই ফোরামেও তার পুণরাবৃত্তি হবে না অন্য পথে হাঁটহবে ভারত, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে কৌতূহল রয়েছে। কারণ এই ফোরামে বলতে গেলে ভারত সঙ্গীহীন।
৯. কুইংদাওতে ভারতের প্রতিনিধি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি জানিয়েছেন, এসসিও-র পূর্ণ সদস্যের দেশ হওয়ার পর থেকে গত একবছরে এসসিও-র দেশগুলির সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এবারের সম্মেলনের পর তা আরও বাড়বে বলে আশআ করেছেন তিনি।
১০. বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪২ শতাংশ এসসিও-র ৮ সদস্য দেশের। পাশাপাশি বিশ্বের ২২ শতাংশ স্থলভাগ রয়েছে এই দেশগুলির দখলে, এবং জিডিপির ২০ শতাংশ আসে এসসিও-র সদস্যদের থেকে। এই সংস্থার মূলতঃ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতার লক্ষ্যে কাজ করে।