ফল থেকে অনেকেই ফেরার চেষ্টা করছেন! গদ্দারদের আর দলে না ফেরাতে চেয়ে মমতার শরণে অরূপ
বাইরের রাজ্য থেকে ভাড়া করা সৈন্য এনে বাংলা দখল করা কোনওভাবেই সম্ভব নয়। মোদী, অমিত শাহদের নাম না করে এভাবেই তোপ দাগলেন তৃণমূল নেতা অরূপ রায়। পাশাপাশি দল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া বিশ্বাসঘাতক, গদ্দারদের আর দলে না ফেরাতেও তৃণমূল
বাইরের রাজ্য থেকে ভাড়া করা সৈন্য এনে বাংলা দখল করা কোনওভাবেই সম্ভব নয়। মোদী, অমিত শাহদের নাম না করে এভাবেই তোপ দাগলেন তৃণমূল নেতা অরূপ রায়।
পাশাপাশি দল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া বিশ্বাসঘাতক, গদ্দারদের আর দলে না ফেরাতেও তৃণমূল সুপ্রিমোর কাছে আবেদন জানান তিনি।
হাওড়ায় দলের সদর কার্য্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন এই বিধায়ক।
সেই বৈঠকেই অরূপ রায় বলেন, "যারা বিশ্বাসঘাতক, যারা দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, যারা যুদ্ধের সময়ে গদ্দারের মতো অন্য দলে চলে গিয়েছিলেন, তাঁদের যেন কোনওভাবেই আর দলে ফেরানো না হয় এটা আমাদের সকলেরই আবেদন দলের কাছে।"
অরূপ রায় দাবি করেন, হাওড়াতেও দলের এই বিশাল সাফল্য দেখে অনেকেই দলে আসতে চেয়ে যোগাযোগ করছেন। আমরা আমল দিইনি।
অরূপ রায় বলেন, "যারা বেরিয়ে গিয়েছিল, যারা আমাদের দল থেকে সুবিধা ভোগ করে আরেকটা দলের সুবিধা নিতে গিয়েছিল, তারা প্রলোভন আর অর্থের লোভে চলে গিয়েছিল। নির্বাচনে মানুষ তাদের যোগ্য জবাব দিয়ে এটা প্রমাণ করেছে আপদ বিদায় হয়েছে।"
এদিন হাওড়া সদরের সদ্যজয়ী রাণা চট্টোপাধ্যায়, গৌতম চৌধুরী, মনোজ তিওয়ারি, নন্দীতা চৌধুরী, প্রিয়া পাল, গুলশন মল্লিক, কল্যাণ ঘোষ, সীতানাথ ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে এক সাংবাদিক বৈঠক করেন অরূপ রায়। ওই বৈঠকে দলের সদরের সভাপতি ভাস্কর ভট্টাচার্য সকল জয়ী বিধায়ককে পুষ্পস্তবক দিয়ে দলের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান।
সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দলের সদরের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক অরূপ রায় এদিন নাম না করে মোদী, শাহ, নাড্ডা সহ যোগী আদিত্যনাথদের উদ্দেশ্যে একহাত নেন। বলেন, "ভাড়া করা সৈন্য এনে যুদ্ধ জেতা যায়না। বাইরে থেকে এসে ভাড়া করা সৈন্য দিয়ে বাংলা দখল করা যে সম্ভব নয়, সেটা এবার নির্বাচনে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে আরও একবার।
তৃণমূলের এই বিধায়ক আরও বলেন, আমরা নির্বাচনের আগে চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম হাওড়ায় ১৬ - ০ রেজাল্ট করব। মানুষের আশীর্বাদে সেটা সম্ভব হয়েছে। কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। মানুষ দু'হাত ভরে আশীর্বাদ করেছেন। আমরা জিতেছি। গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ ও অন্যান্য রাজ্য থেকে এসে বাংলার ক্ষমতা দখল করবে বাস্তবে এটা সম্ভব নয়। তা আবারও প্রমাণ হল।
অরূপ রায় বলেন, বাংলায় মমতার নেতৃত্বে তৃণমূলের শক্ত মাটি। শিকড় পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। সেই শিকড় উপড়ে ফেলার ক্ষমতা বিজেপি কেন, কোনও রাজনৈতিক দলেরই নেই।"
হাওড়ায় বিজেপির পার্টি অফিসে হামলা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূলের এই নেতা বলেন, "আমরা বিজেপিকে কোনও রাজনৈতিক দল বলে মনে করিনা। অপরের সমর্থন নিয়ে সিপিএমের ভোটে তারা যেটুকু ভোট পাবার পেয়েছে। তবে বিজেপির পার্টি অফিস ভাঙার মানসিকতা নেই বলে সাফ জানান অরূপবাবু।
শুধু তাই নয়, এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও কর্মী যুক্ত নয় তাও আরও একবার জানিয়ে দিয়েছেন অরূপ রায়। পাশপাশি এদিন তিনি আরও বলেন, "আমরা উৎশৃঙ্খল দলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নেমেছিলাম। নির্বাচন ঘোষণার আগে থেকেই বলেছিলাম ফলাফল ১৬-০ হবে। আমরা দেখিয়ে দিয়েছি আমাদের কথা কতটা সত্যি সেটা প্রমানিত হয়েছে। হাওড়ায় আমরা সকলেই নির্বাচিত হয়েছি। আমাদের বাংলার মানুষের প্রতি বিশ্বাস ছিল ২০০র বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসব। সেটাও সম্ভব হয়েছে।
তবে এদিন নিজেকে দলের একজন নিষ্ঠাবান কর্মী হিসাবে বলেই দাবি করেন অরূপ। বলেন, আমি একজন সৈনিক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কাজ করছি। দল যেভাবে কাজে লাগাবে সেইভাবে কাজ করব। তবে অনেক দলবদলু তৃণমূলে ফেরার জন্য যোগাযোগ করেছে। এমনটাই দাবি করেন তিনি।
তবে আমরা তাঁদের আমল দিইনি। যারা আমাদের দলের নির্বাচিত হয়েছেন, যারা বিধায়ক হয়েছেন তাঁদের সকলের একটাই দাবি যারা বিশ্বাসঘাতক, যারা দলের সঙ্গে নিমকহারামি করেছে সেই গদ্দারদের যাতে কোনওভাবে দলে না নেওয়া হয়।"