বিদ্যাসাগর সেতুতে ঘাপটি মেরে বসেছিল এসটিএফ, সিনেমার কায়দায় জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার
বিদ্যাসাগর সেতুতে ঘাপটি মেরে বসেছিল এসটিএফ, সিনেমার কায়দায় জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার
সিনেমাকেও হার মানাবে এ দৃশ্য। একেবারে ফিল্মি কায়দায় বিদ্যাসাগর সেতু থেকে জঙ্গি ধরলেন এসটিএফের অফিসাররা। বিদ্যাসাগর সেতু ধরে আসছিল দুই যুবক। সেতুর আড়ালে ওঁত পেতে কলকাতা পুলিশের এসটিএফের অফিসারর পাকড়াও করল তাদের। এসটিএফের বিশেষ অভিযানে হাওড়ার দুই যুবক গ্রেফতার হল জঙ্গি-যোগে।
দুই যুবক প্রথমে কিছু বুঝতে পারেনি। তবে খানিকক্ষণ পরেই তারা বুঝতে পেরে যায় তাদের ট্র্যাপে ফেলে দিয়েছে পুলিশ। কিন্তু বুঝতে পেরেও বিশেষ ফায়দা তুলতে পারেনি তারা। কলকাতা পুলিশ সিনেমার কায়দায় তাদের ধরে ফেলে। জেহাদি জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগসাজোশের অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়।
ধৃত দুই যুবকের নাম সৈয়দ আহমেজ ও শেখ সইদ। সৌয়দ আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এমটেকের ছাত্র বলে জানা গিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে রয়েছে। সেই অভিযোগেই কলকাতা পুলিশের এসটিএফের জালে ধরা পড়েছে হাওড়ার দুই যুবক। এরা হাওড়া থানা এলাকার আফতাবউদ্দিন মুন্সি লেনের বাসিন্দা। এবং অন্যজন শিবপুরের গোলাম হোসেন লেনের বাসিন্দা।
ধৃত দুই যুবককে বিদ্যাসাগর সেতু পেরিয়ে খিদিরপুর থেকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। শুক্রবার রাতে কলকাতা পুলিশের বিশেষ দল ওই দুই যুবককে তাদের বাড়িতে নিয়ে এসে তল্লাশি চালায়। ভোর রাত পর্যন্ত চলে তল্লাশি। ল্যাপটপ, মোবাইল-সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র উদ্ধার করে তারা।
শনিবার তাদের কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হয়। যে যুবকের বাড়ি আফতাবুদ্দিন মুন্সি লেনে, তাদের পরিবারের লোকজন কোনও কথা বলতে চাননি। প্রতিবেশীরা নাম বলতে পারছেন না। তবে সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত যুবকের বাবা অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মচারী। এক প্রতিবেশী রোশন আলি জানালেন, শুক্রবার রাতে সাদা পোশাকে পুলিশ এসে অভিযুক্তকে নিয়ে যায়।
গত প্রায় ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে এলাকায় ৫ তলা আবাসনের ৩ তলার ফ্ল্যাাটে থাকত ধৃত। এলাকায় ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত ধৃত বছর ত্রিশের ওই যুবক। সে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার হতে পারে তা ভাবতেই পারছেন না এলাকার বাসিন্দারাও। তবে এদিন সরকারি আইনজীবী চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন। তারা দু-জনে অস্ত্র জোগাড়ের চেষ্টায় ছিলেন বলে আদালতে জানান তিনি।
তবে তাদের অতীতে কোনও অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার রেকর্ড নেই। ধৃত ছাত্রের পরিবারের সদস্যরা আদালত চত্বরে একই অভিযোগ করেন। যদিও সরকারি আইনজীবী পাল্টা দাবি করেন, ধৃতদের সঙ্গে জঙ্গি গোষ্ঠীর যোগসূত্র রয়েছে। সেই প্রমাণ তাদের হাতে আছে। দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের পুলিশ হেফাজতে রাখার জরকার। অভিযুক্ত দু-জনকে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।