আনিস খান হত্যা-কাণ্ডে ধৃত দুই পুলিশকর্মীর পুলিশ হেফাজত, কোন দিকে মোড় নিচ্ছে তদন্ত
আনিস খান হত্যা-কাণ্ডে ধৃত দুই পুলিশকর্মীর পুলিশ হেফাজত, কোন দিকে মোড় নিচ্ছে তদন্ত
হাওড়ার আমতার ছাত্র নেতা আনিস খান হত্যার ঘটনায় তধৃত দুই পুলিশকর্মীদের এবার নিজেদের হেফাজতে নিল সিট। দুই পুলিশকর্মীকে গ্রেফতারের পর জেল হেফাজত দেওয়া হয়েছিল। তাদের টিআই প্যারেড সম্পন্ন হওয়ার পরদিন আদালতে পেশ করার পর নিজেদের হেফাজতে চান তদন্তকারী অফিসাররা। বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
আনিস-তদন্তে প্রথম থেকেই সিবিআই দাবি করে আসছিলেন আনিসের বাবা ও দাদারা। হয় সিবিআই, নতুবা আদালত। এই দুইয়ে অনড় ছিলেন তাঁরা। তাঁরা কখনই চাননি পুলিশ বা সিট দিয়ে তদন্ত হোক। মুখ্যমন্ত্রী সিট গঠন করার পরও আনিসের বাবা ও দাদা অনাস্থা প্রকাশ করে গিয়েছেন। তাঁরা সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড় থেকেছেন।
শেষমেশ হাইকোর্ট নির্দেশ দেওয়ার পর তাঁরা সিটের সঙ্গে সহযোগিতা করতে শুরু করেন। হািকোর্ট বৃহস্পতিবার সিটের তদন্তে আস্থা রেখেছে। তারপরই আনিসের বাবা, দাদা বা পুরো পরিবার তদন্তে সহযোগিতা করা শুরু করেন। ওইদিন রাতেই টিআই প্যারেডের জন্য আনিসের বাবাকে নোটিশ দিয়ে আসে সিট। সেইমতো শুক্রবার উলুবেড়িয়া উপ-সংশোধনাগারে গিয়ে ধৃতদের টিআই প্যারেডে উপস্থিত হন আনিসের বাবা সালেম খান।
তবে পুলিশের গাড়িতে তিনি টিআই প্যারেডে যাননি। তিনি তাঁণৃর আইনজীবীর গাড়িতে করে উপসংশোধনাগারে যান দোষীদের চিহ্নিত করতে। কিন্তু কাউকেই চিহ্নিত করতে পারেননি তিনি। তারপর আনিসের পরিবারের পক্ষের আইনজীবী জানান, আনিসের খোয়া যাওয়া মোবাইল ছাদ থেকেই পাওয়া গিয়েছিল। তা প্রথমে পুলিশ বা সিটকে দিতে সম্মত ছিলেন না আনিসের পরিবারের সদস্যরা। হইকোর্ট নির্দেশ দেওয়ার পর এদিন সেই মোবাইল তুলে দেওয়া হয় সিটের হাতে।
এদিন ধৃত দুই পুলিশকর্মীকে আদালেকত পেশ করা হয়। সিটের তদন্তকারী অফিসারকে ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছেন। তাই আদালতের কাছে তাঁরা পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই আবেদন মঞ্জুর করার পর নিজেদের হেফাজতে নিয়ে এদিনই জেরা শুরু করবেন সিটের সদস্যরা।
আনিস খানের বাবা টিআই প্যারেডে দোষীদের চিহ্নিত করতে না পারলেও তদন্তকারীরা ধৃত দুই পুলিশকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আর কারা গিয়েছিল সেদিনের অভিযানে। তাঁদের যাওয়ার মোটিভ কী ছিল, সেদিন আনিস খানের বাড়িতে যাওয়ার পর কী ঘটনা ঘটেছিল। আনিস খানের মৃত্যু কীভাবে হল তা জানতে চাইছেন তদন্তকারী অফিসাররা।
এদিকে আনিস খানের হত্যার বিচার চেয়ে পাঁচলার পানিয়াড়ায় হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করে এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই নেতা-কর্মীরা। শুক্রবার আমতা থানা ঘেরাওয়ার পর এদিন হাওড়া পুলিস সুপারের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই। তাঁরা জানান, তাঁদের বিক্ষোভ-অবস্থান লাগাতার চলবে।