তৃণমূলে 'বেসুরো' মমতা ঘনিষ্ঠ এক বিধায়ক! দল ও সরকারের কাজ নিয়ে ক্ষোভ
দলে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না কিংবা কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এই অভিযোগ নিয়ে সরব শতাব্দী রায় থেকে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সাংসদরা। শতাব্দী রায়ের সমস্যা মিটতে না মিটতেই বেসুরো হতে শুরু করছেন এক সময়কার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata banerjee) ঘনিষ্ঠ নেতারা। এবার দল ও সরকারের কাজ নিয়ে সরব হলেন উত্তরপাড়ার তৃণমূল কংগ্রেস (trinamool congress) বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল (prabir ghoshal)।

২০১৯-এর নির্বাচনের পরেই সংগঠনে পরিবর্তন
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ফল যেসব জেলায় খারাপ হয়েছিল, তার মধ্যে রয়েছে হুগলিও। খারাপ ফলের জেরে জেলা সভাপতির দায়িত্বে থাকা তপন দাশগুপ্তকে সরিয়ে দিলীপ যাদবকে সভাপতির আসনে বসানো হয়। কিন্তু তারপর থেকে যে কাজ হয়নি, তা জেলার নেতাদের অভিযোগ থেকেই পরিষ্কার। জেলায় দলের কাজ নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, প্রবীর ঘোষাল, অপরূপা পোদ্দাররা। সবারই প্রায় অভিযোগ, দলের কর্মসূচিতে ডাকা হচ্ছে না। দ্বন্দ্ব মেটাতে দলের সুপ্রিমো কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে চেয়ারম্যান করে কমিটি গঠন করে দেন। কিন্তু সমস্যা যে মেটেনি তা পরিষ্কার করে দিলেন উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক প্রবীল ঘোষাল।

সংগঠনে হওয়া পরিবর্তনে আদৌ কি কাজ হয়েছে
সংগঠনে পরিবর্তনে কাজ হয়নি বলেই অভিযোগ করেছেন উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেছেন, লোকসভায় খারাপ ফলের পরে সংগঠনে পরিবর্তন আনা হয়েছিল। কিন্তু সেই পরিবর্তনে কতটা কাজ হয়েছে তা নিয়ে সংশয় থেকে গিয়েছে। তাঁর দাবি দলের সংগঠনের পাশাপাশি সরকারি কাজে ত্রুটি রয়ে গিয়েছে। এব্যাপারে নিজের বিধানসভা এলাকার একটি রাস্তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। এই ধরনের সমস্যার সমাধান করতে না পারলে সামনের বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই কঠিন হবে বলে মনে করছেন তিনি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেষ্টা সত্ত্বেও ঘাটতি
প্রবীর ঘোষাল বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেষ্টা সত্ত্বেও উন্নয়নে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। সেই কারণে মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। তবে এব্যাপারে হুগলি জেলা তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ যাদব বলেছেন, প্রবীল ঘোষালের কোনও বক্তব্য থাকলে, তা দলের মধ্যে বলা উচিত। তিনি দাবি করেছেন, গত দশ বছরে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী যে কাজ করেছেন, তা কেউ করেনি।

এর আগেও সরব হয়েছিলেন প্রবীর ঘোষাল
তবে শুধু নতুন বছরেই নয়, পুরনো বছরেও সরব হয়েছিলেন প্রবীল ঘোষাল। হুগলি আসনে তৃণমূল প্রার্থীর পরাজয় সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, কিছু তৃণমূল নেতার মাতব্বরির জেরে বিজেপির কাছে আসন হারিয়েছে দল। শেওড়াফুলিতে তৃণমূলের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, দলের নেতারা নিজেদের মাতব্বর মনে করছেন। নিজেদের সংশোধন না করেই বিজেপিকে শত্রু বলে মনে করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেছিলেন, জেলায় দলের কর্মসূচিতে বিধায়কদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না। যে পরিস্থিতিতে কাজ হচ্ছে, তাতে বিরোধীপক্ষ জেলায় শক্তিশালী হচ্ছে এবং এর প্রভাব বিধানসভা নির্বাচনে পড়তে পারে বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
প্রবীর ঘোষালের ছবি ফেসবুক থেকে