সিপিআইএম-এর নেতার পরিবার থেকে তৃণমূল নেতা হিসেবে রকেট গতিতে উত্থান কুন্তলের! কীভাবে হল এত প্রতিপত্তি
শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ইডির হাতে গ্রেফতার কুন্তল ঘোষ। তাঁর বাবা ছিল এলাকার সিপিআইএম নেতা। পঞ্চায়েত প্রধানও ছিলেন। শুধু হুগলি নয় সারা রাজ্যেই কুন্তল ঘোষের মতো এরকম অনেক পরিবার পাওয়া যাবে।
বাবা ছিলেন সিপিআইএম এর পঞ্চায়েত প্রধান। ছেলে তৃণমূল যুব নেতা থেকে জায়গা করে নেয় তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে। মাত্র স্বল্প কয়েক বছরেই রাজনীতিতে রকেট গতিতে উত্থান কুন্তলের।
একেবারে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছাকাছি। কুন্তল ঘোষকে কী বলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা, কী বলছেন স্থানীয় সিপিআইএম নেতৃত্ব।
বাবা ছিলেন সিপিআইএম-এর পঞ্চায়েত প্রধান
শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডির হাতে গ্রেপ্তার তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ। উল্লেখ করা প্রয়োজন, কুন্তলের বাবা স্বপন ঘোষের নাম ডাক ছিল সিপিআইএম নেতা হিসেবে। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত শ্রীপুর বলাগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন স্বপন ঘোষ।
স্থানীয় সিপিআইএম নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়া
সিপিআইএম পরিবার থেকে এসে তৃণমূলের নেতা হিসেবে করকেট গতিতে উত্থান প্রসঙ্গে সিপিআইএম জেলা কমিটির সদস্য অতনু ঘোষ বলেন, এরকমটা গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়েই আছে। একটা সময় পরিবারটা সিপিআইএম-এর সঙ্গে ছিল। তখন কুন্তল বাচ্চা ছেলে। স্বপন ঘোষও ভাল মানুষ ছিলেন। কিন্তু স্বপন ঘোষের পর তার ছেলে কুন্তলের রাজনীতিক অর্থ হল, অর্থ উপার্জন করা। তিনি কটাক্ষ করে বলেছেন, এখন তৃণমূল করা মানে রোজগার করা, বিষয়টি এই জায়গায় চলে গিয়েছে। না হলে ২০১৬-তে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে রকেট গতিতে উত্থান হয় কী করে, সেই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ।
পাশাপাশি অতনু ঘোষ কুন্তলের গ্রেফতার প্রসঙ্গে বলেন, সে যে গ্রেপ্তার হবে এটা সময়ের অপেক্ষা ছিল। শিক্ষাক্ষত্রে বড় স্ক্যাম হয়েছে। এখানে শুধু কুন্তল নয়, ওরকম আরও অনেক কুন্তলই বলাগড়-সহ রাজ্য জুড়ে রয়েছে।
গ্রামের বাড়ির সামনে ভিড় স্থানীয়দের
শনিবার
সকালে
চিনার
পার্কের
অভিজাত
আবাসন
থেকে
কুন্তল
ঘোষকে
গ্রেপ্তার
করে
ইডি।
বলাগরের
যুব
নেতার
গ্রেপ্তারে
অবশ্য
হাতবাক
তাঁর
গ্রামের
বাসিন্দারা।
সকাল
থেকেই
বাড়ির
সামনে
ভিড়
জমান
স্থানীয়রা।
বর্তমানে
কুন্তলের
গ্রামের
বাড়ি
তালাবন্ধ।
তিনি
বেশিরভাগ
সময়
কলকাতার
ফ্ল্যাটেই
থাকেন
বলে
জানিয়েছেন
এলাকার
বাসিন্দারা।
তার
বাড়ি
দেখাশোনার
দায়িত্বে
রয়েছেন
একজন
কেয়ার
টেকার।
এছাড়া
তাঁর
তিন
পোষ্য
কুকুরকে
দেখভালের
জন্য
একজন
লোক
এবং
বাড়িতে
কার্তিক
এবং
শিব
ঠাকুর
নিত্যপুজোর
জন্য
একজন
ব্রাহ্মণ
প্রতিদিন
আসেন
বলে
জানিয়েছেন
স্থানীয়রা।
এঁরা
সবাই
মাস
মাইনে
পান
কুন্তলের
থেকে।
বাড়ির
কেয়ার
টেকার
দীপক
বিশ্বাস
জানিয়েছেন,
তিনি
প্রতিদিন
একবার
করে
এসে
বাড়ি
পরিষ্কার
পরিচ্ছন্ন
করেন।
কুন্তল
ঘোষ
মাঝে
মধ্যে
তাঁর
পরিবার
নিয়ে
আসত।
গ্রামবাসী
গিরিশ
বিশ্বাস
বলেন,
কুন্তলের
বাবাকে
তিনি
চিনতেন,
ভাল
লোক
ছিলেন।
ওদের
একটা
সারের
দোকান
ছিল।
অ্যালুমিনিয়ামের
কারখানাও
ছিল।
স্বচ্ছল
পরিবারের
সন্তান
কুন্তল
ঘোষ
যদি
শিক্ষা
দুর্নীতিতে
জড়িয়ে
থাকে,
তাহলে
শাস্তি
হোক,
বলেছেন
তিনি।
পাড়া প্রতিবেশীদের পাশে দাঁড়াতেন
প্রতিবেশী মালবিকা রায় জানিয়েছেন, কুন্তলকে ছোটবেলা থেকেই চেনেন। পাড়ায় খুব দান ধ্যান করত কুন্তল। কারও বিয়ে আবার কোনও পরিবারে কেউ মারা গেলে পাশে দাঁড়াত কুন্তল। তবে শিক্ষা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গ তাঁরা কিছু জানেন না বলেও জানিয়েছেন তিনি। কিছুদিন আগেই কুন্তল ঘোষ গ্রামের বাড়িতে এসেছিল পরিবার নিয়ে। পরিবার নিয়ে পাড়ার সবার সঙ্গে পৌষ মাসে পিকনিকও করে গিয়েছে। তবে এর পরে তাঁকে এই বাড়িতে দেখা যায়নি।
ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ও একাধিক বিএড কলেজের মালিক
এলাকা বাসিন্দারা জানিয়েছেন, জিরাট পাটুলিগ্রামে বাচ্চাদের জন্য একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল রয়েছে কুন্তলের। বছর তিনেক আগে জনৈক সাধন দাসের থেকে ৩৫ লক্ষ টাকায় স্কুল বাড়িটি কেনেন কুন্তল, জানিয়েছেন, সাধন দাসের ভাই উৎপল দাস। এর আগে পাশেই একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলত স্কুল। মাস চারেক আগে ভাড়া বাড়ি ছেড়ে কুন্তলের কেনা বাড়িতে স্কুল শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, কয়েকটি জেলায় একাধিক বিএড কলেজ রয়েছে কুন্তলের। সেই সুবাদে মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ বি এড কলেজ সংগঠনের সভাপতি তাপস মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। সেই তাপস মণ্ডলের অভিযোগেই এদিন গ্রেফতার করা হয়েছে কুন্তল ঘোষকে। তাপস মণ্ডল কুন্তল ঘোষের বিরুদ্ধে ১৯ কোটি টাকার রসিদের হিসেব দিলেও ইডির দাবি, এই অঙ্কটা ৩০ কোটির আশপাশে।
ভারত জোড়োর পরে এবার হাত সে হাত জোড়ো অভিযান! মোদী সরকারের বিরুদ্ধে 'চার্জশিট' কংগ্রেসের