দশ নয়, দুর্গা প্রতিমা এখানে দ্বিভূজা, ভাঙা মূর্তিতেই শুরু হয় পুজো
অতীতের সেই জৌলুস আজ অনেকটা ফিকে হলেও পাল্টায়নি পুজোর নিয়ম রীতি। আনুমানিক তিনশো বছর পূর্বে হুগলী জেলার পান্ডুয়া থেকে জমিদারি স্থানন্তরিত হয়ার পর পাতিহাল গ্রামে পুজো শুরু করেন ধর্মপ্রাণ জমিদার বরদাপ্রসাদ মজুমদার। তৈরী হয় সুদৃশ্য দূর্গা দালান, কুমোরটুলির পাল পরিবারের থেকে আনা হত প্রতিমা।
ইতিহাস
এক বছর নৌকা করে কুমোরটুলি থেকে প্রতিমা আনার সময় ঘটল বিপত্তি গণেশের দুটি হাত গেল ভেঙে, এদিকে রাত পোহালেই পুজো কী করে ভাঙা মূর্তির পুজো হবে সেই নিয়ে চিন্তায় পড়লেন জমিদার, এদিকে নতুন মূর্তি গড়ার ও আর সময় নেই। সেই দিন রাতেই জমিদার কে স্বয়ং মা স্বপ্নে বলেন যে, 'ওই মূর্তিতেই আমি পুজো নেব' সেই থেকে আজও এখানের দূর্গা প্রতিমার গণেশের চারটির জায়গায় দুটি হাত যা এই পুজোর বিশেষ বৈশিষ্ট্য।
প্রতিমা
পরবর্তীতকালে কুমোরটুলির শিল্পীরা এখানে এসে প্রতিমা তৈরি করতেন। আজ অবশ্য স্থানীয় শিল্পীরাই প্রতিমা তৈরি করেন। জন্মাষ্টমীর দিন প্রথা মেনে হয় কাঠামো পুজো, তার পরেই দূর্গা দালানে শুরু হয় প্রতিমা তৈরির কাজ। আজও এক চালার সাবেকি মূর্তিতেই মা পূজিতা হচ্ছেন। আগে প্রতি পদের দিন থেকে বোধন বসতো। বর্তমানে অর্থবল ও লোকবলের অভাবে ষষ্ঠাদিকল্পে বোধন বসে। বহু আগেই উঠে গেছে বলি প্রথা। বর্তমানে এই পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যরাই কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন , পুজোর চারটি দিন তারা শিকরের টানে চলে আসেন নিজেদের বাড়িতে। সকলের কোলাহলে মুখরিত হয়ে ওঠে ভগ্নপ্রায় মজুমদার বাড়ি।
লেখক
এই
পুজোর
সঙ্গে
জড়িত
আছেন
বাংলা
বিখ্যাত
লেখক
আশুতোষ
দেব
এর
কথা,
যিনি
এই
পরিবারেরই
সদস্য
ছিলেন।
বরদাপ্রসাদ
মজুমদার
এর
মৃত্যুর
পর
বহু
দিন
তিনি
এই
পুজোর
দায়িত্ব
গ্রহণ
করেন।
এখানে
বিশেষ
উল্লেখ্য
যে
ওনারা
ইস্ট
ইন্ডিয়া
কোম্পানির
থেকে
দেব
উপাধি
লাভ
করেছিলেন।
আশুতোষ
দেবের
সময়
এই
পরিবারের
পুজোয়
বহু
খ্যাতনামা
সাহিত্যিক,
কবি
দের
পদধূলি
পড়েছিল।
আজ
আর
জমিদারি
নেই,
কালের
গর্ভে
সব
আজ
ধ্বংসস্তূপে
পরিনত
হয়েছে।
মায়ের পুজো
তবুও আজও দূর্গা পুজো এলে প্রান ফিরে পায় এই বাড়ি। পলেস্তারা খসা ঠাকুর দালানে পরে রঙের প্রলেপ। কত বৎসরের ইতিহাসের নিরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মজুমদার বাড়ি।এই পরিবারের দূর্গা পুজো পাতিহাল তথা জগৎবল্লভপুর এমনকি হাওড়া জেলার বনেদি বাড়ির পুজোর ইতিহাসকে গৌরবান্বিত করে।