বন্ধের মুখে হাওড়ার শতাব্দী প্রাচীন যক্ষ্মা হাসপাতাল
বন্ধের মুখে হাওড়ার শতাব্দী প্রাচীন যক্ষ্মা হাসপাতাল
যক্ষ্মা চিকিৎসায় এককালে শহরে উন্নতমানের সরকারি হাসপাতাল ছিলনা। সেখানেই স্থানীয় ও রাজ্যের বিভিন্ন জেলার দুস্থ রোগীরা ভিড় জমাতো বিনা পয়সার চিকিৎসা হাসপাতালটিতে। আজ হাওড়ার আন্দুল রোডের যক্ষ্মা হাসপাতালটি করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর রোগীদের পরিষেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি ১৯৫৮ সালে বাম আমলে গড়ে ওঠা নিখরচায় পরিষেবার হাসপাতালটি নানা সমস্যার সম্মুক্ষীন হয়ে আজ বন্ধের মুখে। আর্থিক সংকটে শয্যাসায়ী রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দিতে পারলেও তিনবেলা খাওয়ার ও নানা খরচে দিশেহারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৫৮ সালে ডাঃ নিরঞ্জন চক্রবর্তী ও সিপিআইএমের প্রাক্তন কাউন্সিলার শনৎ কুমার চ্যাটার্জীর উদ্যোগে যক্ষ্মা হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ৬৩ বছর ধরে হাসপাতালে নিখরচায় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছে এমন তথ্য রয়েছে। এখনও একই রকম প্রচলন রয়েছে এই হাসপাতালটির। পচিঁশ বেডের হাসপাতালটিতে বর্তমানে সাতজন যক্ষ্মা রোগী শয্যাসায়ী রয়েছে। সঙ্গে তিনিজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক থেকে শুরু করে ১২ জন অস্থায়ী কর্মী।
জানা গিয়েছে, রোগী থাকলেও কোনোভাবে অর্থের যোগান নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তবে অর্থের অভাবে আজ বন্ধের মুখে যক্ষা হাসপাতাল। করোনা পূর্বে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। তবে করোনাকালে প্রথম থেকেই আর মেলেনা কোনো সাহায্য। যদিও হাসপাতালের ট্রাষ্টি বোর্ডের স্বল্প অনুদানে হাসপাতালের কিছুটা সমস্যা সুরাহা হলেও বিভিন্ন রকমের খরচের অভাবে যান্ত্রিক পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না রোগীদের।
বর্তমানে হাসপাতালটির দায়িত্বে থাকা সায়নী ভট্টাচার্য্য বলেন, 'এখানে বিনামূল্যে যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়। তবে রোগীর তুলনায় হাসপাতালের ব্যয় বেশি। চিকিৎসক ও অস্থায়ী কর্মীদের মাসিক বেতন দিতে চরম হিমশিম খেতে হচ্ছে। রোগীদের খাওয়া-দাওয়া, চিকিৎসকদের থাকার ব্যবস্থা পুরোপুরি হাসপাতাল বহন করে চলেছে।' এছাড়াও এবছর থেকে হাসপাতালে নিখরচায় দুস্থ মেধাবি ছাত্রীদের ফ্রিতে নার্সিং প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে অর্থের অভাবে হাসপাতালে পরিষেবা বিলীন হতে চলেছে।
এছাড়াও এলাকার দুস্থ মানুষদের কথা মাথায় রেখে সাপ্তাহিক বহির্বিভাগ খোলা হয়েছে। সেখানেও নিখরচায় চিকিৎসা পরিসেবার পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঔষধও ফ্রিতে দেওয়া হয়ে থাকে। আর্থিক সংকটের কারনে হাসপাতালের একাংশ পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এই নিখরচার হাসপাতালটি চালানোর জন্য কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে শুরু করে বিত্তবান ও সরকারের কাছে দৃষ্টি আকর্ষন করেছে। কেউ এগিয়ে এলে তারা স্বাভাবিক ছন্দে হাসপাতাল পরিচালনা করতে সক্ষম হবে বলে আশা করছেন।
বিজেপির কার্যালয় ভাঙচুরকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ভাটপাড়ায়