আনিসের খুনের রাতে আরটি ভ্যানের ৪ পুলিশকর্মীকে ভবানীভবনে তলব! আমতায় গরহাজির ৪ সিভিক পুলিশকে নিয়ে জল্পনা
আনিসের খুনের রাতে আরটি ভ্যানের ৪ পুলিশকর্মীকে ভবানীভবনে তলব! আমতায় গরহাজির ৪ সিভিক পুলিশকে নিয়ে জল্পনা
শুক্রবার গভীর রাতে আনিস খানের (Anish Khan) অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর থেকে বাবা-সহ পরিবার খুনের অভিযোগ তুলেছেন এক পুলিশকর্মী এবং তিন সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। প্রথমের দিকে পুলিশের তরফে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন বহিরাগতদের কাজ হতে পারে। কিন্তু সময় যত যাচ্ছে, প্রশাসন কোথাও যেন ধাক্কা খাচ্ছে। প্রশাসনের শীর্ষমহল সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে, শুক্রবার গভীর রাতে সম্ভবত পুলিশই দিয়েছিল আনিসের বাড়িতে। এবার আমতা থানার চার সিভিক পুলিশ শনিবার থেকে কাজে আসছেন না বলেই জানা গিয়েছে।
ফের ময়নাতদন্তের আবেদনে পরিবারের না
আনিসের পরিবার বারে বারেই অভিযোগ করেছিল শুক্রবার বারে বারে পুলিশকে ফোন করা হলেও, রাতে আসার কোনও আগ্রহ দেখায়নি পুলিশ পরে শনিবার সকাল নটার পরে পুলিশ আসে। সেই সময় আনিসের দেহ তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবারের লোকেদের আমতা থানায় যেতে বলে। কিন্তু তারই মধ্যে উলুবেড়িয়ায় ময়নাতদন্ত করে ফেলা হয়। যা নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি ছিল আনিসের পরিবারের। আনিসের বাবা এবং দাদা আগেই জানিয়েছিলেন ফোন তারা সিটের হাতে তুলে দেবেন না। এ দিন সিটের তরফ থেকে পরিবারের কাছে ফের ময়নাতদন্তের জন্য দেহ তুলে দিতে আবেদন জানানো হলে, পরিবারের তরফে না বলে দেওয়া হয়। জানানো হয়, আদালত নির্দেশ দিলে কিংবা সিবিআই তদন্ত হলেই তারা ফের ময়নাতদন্তের অনুমতি দেবেন।
মঙ্গলবার রাতে আনিসের দাদাকে হুমকি ফোন
মঙ্গলবার গভীর রাতে আনিসের দাদা সাবির খানকে ফোনে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ফোনে হুমকি দিয়ে বলা হয়, সিবিআই তদন্তের দাবি করলে সবাইকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।
আরও চারজনকে ভবানীভবনে তলব
এদিন ভবানীভবনে তলব করা হয়েছে শুক্রবার রাতে আমতায় আরটি ভ্যানে থাকা ৪ পুলিশকর্মীকে। আনিসের বাবা অভিযোগ করেছিলেন একবার রাত ৩.৫০ এবং ফের ৪.৪০ নাগাদ থানায় ফোন করেছিলেন তিনি। দুবারই থানা থেকে পুলিশকর্মীদের খবর দেওয়া হয়েছিল ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য। কিন্তু আরটি ভ্যান আনিসের বাড়িতে যায়নি। ভোর ছটায় ছুটি হয়ে যায় আরটি ভ্যানের পুলিশকর্মীদের।
এখনও পর্যন্ত সাসপেন্ড ৪ পুলিশকর্মী
সোমবার রাতেই তদন্ত শুরু করেছিল সিট। তবে মঙ্গলবার সকালে জানা যায় আমতা থানার ৩ পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এঁরা হলেন এএসআই নির্মল দাস, কনস্টেবল জিতেন্দ্র হেমব্রম এবং হোমগার্ড কাশীনাথ বেরা। তিনজনের শাস্তির কারণ কাজে গাফিলতি বলেই এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে। এঁরা তিনজনই রাতে আরটি ভ্যানে ছিলেন বলে সূত্রের খবর। শুক্রবার গভীর রাতে আনিসের মর্মান্তিক পরিণতির পরে তাঁর বাবা একাধিকবার পুলিশের সাহায্য চেয়েছিলেন। কিন্তু তা পাননি বলে অভিযোগ।
বেপাত্তা ৪ সিভিক ভলাল্টিয়ার
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার গভীর রাতে আনিসের মৃত্যুর পর শনিবার থেকে আমতা থানায় কাজে আসছেন না চার সিভিক ভলান্টিয়ার। এর হল কৌশিক চক্রবর্তী, প্রতীম ভট্টাচার্য, সৌরভ খাঁড়া এবং অরিজিৎ পোল্লে। স্থানীয়দের অভিযোগ আমতা বাসস্ট্যান্ড থেকে কলেজ মোড় পর্যন্ত এরা দাপিয়ে বেড়াত। এদের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগও করেছেন স্থানীয়রা। অরিজিৎ রসপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের ছেলে বলে জানা গিয়েছে। বাকিদের স্থানীয় পরিচয় তৃণমূল কর্মী হিসেবে। তবে এঁদের কেউ সেই রাতে আনিসের বাড়িতে গিয়েছিল কিনা তা এখনও পরিষ্কার নয়।
আনিস-কাণ্ডে সিবিআই দাবিতে সহমত শুভেন্দু, পরিবারকে দেবেন আইনি সহায়তা
Recommended Video