বিজেপির মিছিলে সিপিএমের পতাকা ঘিরে হুলুস্থূল-কাণ্ড, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিতর্ক হুগলিতে
বিজেপির মিছিলে সিপিএমের পতাকা ঘিরে হুলুস্থূল-কাণ্ড, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিতর্ক হুগলিতে
পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের পর হুগলির হারিটে দেখা গিয়েছিল বিজেপির মিছিলে সিপিএমের পতাকা। আবার সেই হুগলিতে এক মিছিলে উড়ল দুই দলের পতাকা। এবার শুধু একসঙ্গে পতাকা উড়ব না, তা নিয়ে জোর বিতর্ক তৈরি হল। মিছিল চলাকালীন স্থানীয় সিপিএম কর্মী মিছিলকারীর হাত থেকে কেড়ে নিলেন পতাকা।
একসঙ্গে দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে মিছিল
শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের এক সমবায় নির্বাচনে বিজেপি ও সিপিএম একসঙ্গে মিছিল করেছিল। সেখানে দলীয় পতাকা দেখা না গেলেও চেনা মুখ ছিলেন মিছিলে। ফলে বুঝতে অসুবিধা হয়নি বিজেপি-সিপিএমের যৌথ মিছিল। তারপর দুই পরস্পরবিরোধী রাজনৈতিক দল প্রকাশ্যে একসঙ্গে দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে মিছিল করে হুগলিতে।
সিপিএমের পতাকাগুলি কেড়ে নেন এক কর্মী
আবারও সেই হুগলিতেই বিজেপির পদ্ম আর সিপিএমের কাস্তে হাতুড়ি তারাকে একসঙ্গে পত পত করে উড়তে দেখা গেল। এবার হুগলির সুগন্ধায় বিজেপির ডেপুটেশনের মিছিলে সিপিএমের দলীয় পতাকা উড়ল। মিছিল চলাকালীন সেই মিছিল থেকে সিপিএমের পতাকাগুলি কেড়ে নিলেন স্থানীয় এক সিপিএম কর্মী, যা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।
বিজেপির ডেপুটেশনে সিপিএমের পতাকা
বুধবার সুগন্ধ্যা পঞ্চায়েতে বিজেপির ডেপুটেশন কর্মসূচি ছিল। সেই কর্মসূচিতে দেখা গেল সিপিএমের পতাকাও। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা দুর্নীতির অভিযোগে সুগন্ধ্যা মোড় থেকে মিছিল করে সুগন্ধ্যা পঞ্চায়েত অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।
সিপিএমের পতাকা হাতে বিজেপির মিছিল
বিজেপির বিক্ষোভ-মিছিলে দেখা যায় সিপিএমের পতাকা উড়তে। বিজেপির মিছিলে সিপিএম এর পতাকা দেখে স্থানীয় এক সিপিএম কর্মী শতদ্রু দাস সেই পতাকা কেড়ে নেন। যাদের হাতে সিপিএমের পতাকা দেখা গিয়েছিল, তাঁরা বলেন আমরা বহুদিন ধরে সিপিএম করি। কিছু না পেয়ে আমরা বিজেপির মিছিলে যোগ দিয়েছি।
আসলে এটা পুরোটাই বিজেপির সাজানো
স্থানীয় ওই সিপিএম কর্মী শতদ্রু দাস বলেন, সিপিএমের কোনও মিটিং এ ধরনের সিদ্ধান্ত হয়নি। যারা এইসব ফ্ল্যাগ নিয়ে এসে মিছিল করছে, তাঁরা সিপিএম করার যোগ্য নন। তাঁরা দলের কোনও পদেও নেই। আর বিজেপির সঙ্গে সিপিএমের কোন যোগসূত্রও নেই। তাই আমি নিজের দায়িত্বে এই পতাকা কেড়ে নিয়েছি। আসলে এটা পুরোটাই বিজেপির সাজানো।
পরিকল্পিতভাবে ঝান্ডা কুড়িয়ে এনে মিছিল
সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সদস্য মনোদীপ ঘোষ এ প্রসঙ্গে বলেন, একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। কয়েকদিন আগে এটা দাদপুরে হয়েছে, আবার এখানে হচ্ছে। বিজেপি তাদের মিছিলে পরিকল্পিতভাবে ঝান্ডা কুড়িয়ে এনে নিজেদের কর্মীদের হাতে তুলে দিয়ে বলছে সিপিএমকর্মী।
রাজ্যের রাজনীতিতে এরকম কালচার ছিল না
তিনি বলেন, এই সমস্ত জিনিস পুরনো হয়ে গেছে। দাদপুরের ঘটনার পর সারা রাজ্যের মানুষ এটা জানে। পুরানো কৌশল তারা আবার সুগন্ধ্যাতে করার চেষ্টা করেছে। এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ-সহ এখানকার বামপন্থী কর্মীরা এই ঘটনায় সরাসরি প্রতিবাদ করেছেন। আমাদের রাজ্যের রাজনীতিতে এরকম কখনও কালচার কখনও ছিল না। এসব বিজেপি করছে।
একসঙ্গে মিছিল নিয়ে বিজেপির দাবি
অন্যদিকে বিজেপি হুগলি জেলা সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা ও সুবিধা ভোগ করছে এবং সেটা নিয়ে দুর্নীতি করছে। যাদের পাওয়ার কথা তারা বঞ্চিত থাকছে। দেখা যাচ্ছে ৩৪ বছরে সিপিএমের বহু মিছিল-মিটিংয়ে কর্মীরা হেঁটেছিল, তাঁরাও কিছু পায়নি। তাই তারা বিজেপির মিছিলে যোগ দিয়েছে।
গেরুয়া পতাকার সঙ্গে দেখা গেল লাল ঝান্ডাও
হুগলির পোলবায় আবাস যোজনা, একশো দিনের দিনের কাজে তৃণমূলের পঞ্চায়েতের দুর্নীতির প্রতিবাদে বিজেপির মিছিলে দেখা গিয়েছিল সিপিএমের অন্তর্ভুক্তি। বিজেপির মিছিলে দলীয় পতাকা হাতে পা মেলাতে দেখা গিয়েছিল সিপিএমের কতিপয় কর্মী-সমর্থককে। বিজেপির গেরুয়া পতাকার সঙ্গে দেখা গেল সিপিএমের লাল ঝান্ডাও।
বিজেপি সঙ্গে কোনও সংস্রব তারা মানবেন না
এবার সুগন্ধ্যায় একই ছবি দেখা যাওয়ার পর সিপিএম প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, এসব বিজেপি করছে। তারা দেখানোর চেষ্টা করছে সিপিএমও তাঁদের সঙ্গে মিছিলে শামিল। কিন্তু সিপিএম খোলাখুলিই জানিয়ে দিয়েছে, বিজেপি সঙ্গে কোনও সংস্রব তারা মানবেন না। তাঁরা মানছেনও না। সিপিএম একাই প্রতিবাদ করতে জানে, করছেও।
বিজেপি নানা ফন্দিফিকির শুরু করেছে
আসলে বিজেপিতে লোক নেই। তাঁরা সিপিএম থেকে লোক জোগাড় করে নিয়ে যাচ্ছে। লোক জোগাড় করে ঝান্ডা কুড়িয়ে কি আর সংগঠন চলে। সিপিএম সাফ জানিয়ে দিয়েছে, আন্দোলন সিপিএমের মজ্জায় রয়েছে। সিপিএম আন্দোলন করেছে বলে হালে পানি না পেয়ে বিজেপি নানা ফন্দিফিকির শুরু করেছে।
কংগ্রেস-সিপিএম উভয়েই টিপ্রাকে চাইছে জোটে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে জল মাপছেন প্রদ্যোৎ