১২ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে মেঝেতে পড়ে করোনাতে আক্রান্তের দেহ, শহরে প্রকট হচ্ছে অমানবিক ছবি
প্রায় ১২ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে কোভিডে মৃতের দেহ। পরে সংবাদমাধ্যম মারফত খবর জানাজানি হতে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। শুধু তাই নয়, এই ঘটনায় এলাকার মানুষের তৎপরতায় উদ্যোগ নেওয়া হয়।
প্রায় ১২ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে কোভিডে মৃতের দেহ। পরে সংবাদমাধ্যম মারফত খবর জানাজানি হতে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
শুধু তাই নয়, এই ঘটনায় এলাকার মানুষের তৎপরতায় উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই ঘটনায় হাওড়ার জগাছা থানা এলাকার সাঁত্রাগাছি ষষ্ঠীতলায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
জানা গিয়েছে, কোভিডে আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে মঙ্গলবার রাত দেড়টা নাগাদ বাড়িতেই মৃত্যু হয় গোপাল চক্রবর্তী ( ৬৪ ) নামের ওই ব্যক্তি।
বাড়িতে তখন থেকেই পড়ে থাকে তাঁর দেহ। পরিবারের সদস্যরা জগাছা থানা থেকে শুরু করে হাওড়া পুরসভা সর্বত্র যোগাযোগ শুরু করেন। এমনটাই অভিযোগ।
শুধু তাই নয়, পরিবারের আরও অভিযোগ, বুধবার সকাল গড়ালেও কোনও ব্যবস্থা হয়নি। এই ঘটনায় চরম হয়রানির শিকার হতে হয় পরিবারের লোকজনদের। পরিবারের সদস্যরা জানান, হাসপাতালে বেডের অভাবে রোগী ভর্তি হতে পারছেন না খবর পেয়ে দক্ষিণ হাওড়া এরিয়া কমিটির রেড ভলেন্টিয়ারের কর্মীরা এগিয়ে এসে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।
তাঁরাই বাড়িতে এসে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করে দেন। বুধবার হাসপাতালে ভর্তি করার যাবতীয় ব্যবস্থা করেন। কিন্তু তার আগেই মঙ্গলবার রাতে গোপালবাবুর মৃত্যু হয়। এদিকে, দীর্ঘক্ষণ বাড়িতে করোনা রোগীর মৃতদেহ পড়ে থাকায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারাও।
শেষপর্যন্ত পুরসভার কর্মীরা উদ্ধার করে নিয়ে যায় করোনায় মৃতের দেহ। একই ছবি দক্ষিণ দমদমেও। দক্ষিণ দমদমের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের পল্লিশ্রী এলাকার ঘটনা। গত কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন ৬৪ বছরের সুমতি ধর। পরীক্ষা করালে তাঁর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। বাড়িতেই ছিলেন তিনি।
এরপর মঙ্গলবার রাত থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাঁর। অক্সিজেনে খোঁজ করেও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
এরপর ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ বাড়িতেই মৃত্যু হয় ওই মহিলার। মৃত্যুর পর পরিবারের আরও একটা কঠিন লড়াই।
সৎকারের ব্যবস্থা করার জন্যও কাঠ খড় পোড়াতে হয় অনেক। অ্যাম্বুলেন্স চেয়েও পাওয়া যায়নি। ফলে মৃতের আত্মীয়ারা জানিয়েছেন, বেশ কয়েক ঘণ্টা হয়ে গেলেও বাড়িতে পড়ে ছিল মৃতদেহ।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন আগে একই ভাবে হাওড়ার ব্যাঁটরায় একই ছবি ধরা পড়ে।
জানা যায়, কোভিডে আক্রান্ত হয়ে রবিবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ মারা যান হরিধন ভট্টাচার্য ( ৫৩ ) নামের ওই ব্যক্তি। প্রায় ৭ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকে কোভিডে মৃতের দেহ। পরে সংবাদ মাধ্যম মারফত খবর জানাজানি হতে তৎপরতা শুরু হয়।
ইতিমধ্যে বাংলায় করোনা পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। বেড, অ্যাম্বুলেন্স সহ সমস্ত কিছু ঠিক রয়েছে বলে সরকারের তরফে আশ্বাস দেওয়া হলেও বাস্তবে অন্য ছবি ধরা পড়ছে! কবে বদলাবে এই ছবি? আতংকে শহরবাসী।