ইংল্যান্ডের তিন ফুটবলারকে বর্ণবিদ্বেষমূলক আক্রমণ, ওয়েম্বলিতে ব্রিটিশদের গুন্ডামি
ইতালির কাছে ইংল্যান্ড ইউরো কাপ ফাইনালে পরাস্ত হতেই ইংল্যান্ডের তিন ফুটবলার জাডোন স্যাঞ্চো, মার্কাস রাশফোর্ড ও বুকায়ো সাকা বর্ণবিদ্বেষমূলক আক্রমণের শিকার হলেন। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও ব্রিটেনের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বা এফএ। এই তিনজনই টাইব্রেকারে গোল করতে ব্যর্থ হন।
বর্ণবিদ্বেষের শিকার
বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে ইউরো কাপের ম্যাচ শুরুর আগে দেখা গিয়েছে ইংল্যান্ডের ফুটবলাররা হাঁটু গেঁড়ে বসে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার প্রতিবাদে যে ক্রীড়াবিদরা প্রথমে প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিলেন তাঁদের মধ্যে জাডোন স্যাঞ্চো ছিলেন অন্যতম। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে খেলা রাশফোর্ড গত মে মাসে ইউরোপা লিগ ফাইনালে পরাজয়ের পরও বর্ণবিদ্বেষমূলক আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন। বৈষম্যমূলক আক্রমণ বেড়ে চলায় গত এপ্রিলে বিভিন্ন ক্লাব, ফুটবলার, অ্যাথলিট ও বিভিন্ন ক্রীড়া নিয়ামক সংস্থা চার দিনের সোশ্যাল মিডিয়া বয়কটের পথে হেঁটে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। এই বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলি যথাযথ ভূমিকা পালন করছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে। গত এপ্রিলে ইনস্টাগ্রাম জানায় একটি টুল ব্যবহার করলে আপত্তিকর মেসেজ ফিল্টার করে নেওয়া যাবে। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ যে হয়নি গতকাল ওয়েম্বলিতে ফাইনাল শেষ হতেই তা পরিষ্কার। সোশ্যাল মিডিয়ায় ফের বর্ণবিদ্বেষের শিকার হলেন ইংল্যান্ডের তিন ফুটবলার।
নিন্দায় জনসন
স্ত্রী-কে নিয়ে গতকাল ওয়েম্বলিতে নিজে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি এই বর্ণবিদ্বেষমূলক আক্রমণের নিন্দা করে বলেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করার বদলে ইংল্যান্ড দলের সককে নায়কের সম্মান দেওয়া উচিত। যাঁরা এই মারাত্মক সব মন্তব্য করছেন তাঁদের নিজেদেরই নিজেদের প্রতি লজ্জিত হওয়া উচিত। ব্রিটেনের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বা এফএ ফুটবলারদের পাশে দাঁড়িয়ে ঘটনার নিন্দা করে বলেছে, এই ধরনের কাজ বন্ধ করতে সরকারের উচিত কঠোর বিধি এনে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তি দেওয়া। সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলিও দায়িত্ব এড়াতে পারে না। দোষীদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে শাস্তির পথ ত্বরান্বিত করার পক্ষেও সওয়াল করেছে এফএ। ঘটনার তদন্তে নেমে মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, দোষীদের রেয়াত করা হবে না।
ব্রিটিশদের গুন্ডামি
ফাইনালে ইংল্যান্ডের হারের পর ব্রিটিশদের গুন্ডামিরও সাক্ষী থেকেছে ওয়েম্বলি। ব্যারিকেড ভাঙা থেকে স্টেডিয়ামের বাইরে তাণ্ডব চলেছে। খেলার শেষে ইতালি সমর্থকদের আক্রান্ত হতে হয় বলেও অভিযোগ, পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকর্মীদের। এর আগে ব্যারিকেড ভেঙে অনেকে টিকিট ছাড়াও স্টেডিয়ামে প্রকাশ করেছিলেন বলেও জানিয়েছে পুলিশ। স্টিউয়ার্ড ও পুলিশকর্মীদের সঙ্গে রীতিমতো ঠেলাঠেলিতেও জড়িয়ে পড়েছিলেন কিছু অত্যুৎসাহী সমর্থক। এর আগে প্রতিপক্ষ দলের জাতীয় সঙ্গীত চলাকালীন ব্রিটিশ ফুটবলপ্রেমীদের আচরণ থেকে শুরু করে ডেনমার্কের গোলকিপারের চোখে লেজার রশ্মি ফেলায় ইংল্যান্ড দলকে জরিমানার মুখে পড়তে হয়েছে। টিকিট ছাড়া মাঠে ঢুকে পড়ার ছবি ভাইরাল হতেই এফএ জানিয়েছে, এ ধরনের ঘটনা ইংল্যান্ড দলের পক্ষে তীব্র অস্বস্তিদায়ক, একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের সংগঠকরা প্রথমে টিকিট ছাড়া কারও প্রবেশের বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন। যদিও পরে পুলিশ এই ঘটনার কথা জানানোয় ঢোঁক গিলে আয়োজকরা বলে, কিছু সংখ্যক মানুষ এভাবে ঢুকেছিলেন। ভবিষ্যতে কীভাবে এই ধরনের ঘটনা এড়ানো যায় সেটা দেখা হচ্ছে।
According to @MelissaReddy_ some ticketless England fans have broken into Wembley. Joyous scenes all round! #wembleystadium #Wembley #ItalyEngland https://t.co/FFc0kQfX90
— Tommasi (@IamTomOB) July 11, 2021
Wembley security powerless to stop ticketless #ENG fans jumping the perimeter walls before kick-off#Euro2020Final pic.twitter.com/vkMeAFee4Q
— Neil Barker (@Mockneyrebel) July 11, 2021
Where Boris Johnson leads… https://t.co/yyDZtMMjig
— James O'Brien (@mrjamesob) July 11, 2021