বিশ্বকাপে মেসি ছাড়াও আর্জেন্টিনার এই পাঁচ ফুটবলারের দিকে নজর রাখতে ভুল করবেন না
বিশ্বকাপে মেসি ছাড়াও আর্জেন্টিনার এই পাঁচ ফুটবলারের দিকে নজর রাখতে ভুল করবেন না
দীর্ঘ চার বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে বিশ্ব ফুটবলের সব থেকে বড় ইভেন্ট ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২-এর আসর আর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে বসতে চলেছে কাতারে। এ বারের বিশ্বকাপকে ঘিরে ফুটবল বিশ্বের উন্মাদনা একে বারেই অন্য উচ্চতায় পৌঁছিয়েছে। বড় কিছু না ঘটলে এটিই শেষ বিশ্বকাপ হতে চলেছে বিশ্ব ফুটবলের সর্বকালের দুই সেরা নক্ষত্র লিওনেল মেসি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর। ফলে মেসি এবং রোনাল্ডো এই বিশ্বকাপকে একক দক্ষতায় অন্য উচ্চতায় যে নিয়ে যাবে সেই বিষয়ে কোনও সংশয় নেই। এক নজরে দেখে নিন কাতার বিশ্বকাপে মেসি ছাড়াও আর্জেন্টিনার কোন পাঁচ তারকার দিকে নজর রাখবেন।
অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া:
লিওনেল মেসির পর আর্জেন্টিনা দলের প্রধান ফুটবলার অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। আর্জেন্টাইন দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড ডি মারিয়া। তাঁর বাম পায়ের জাদুতেই নিয়ন্ত্রিত হয় আর্জেন্টিনার মাঝমাঠের অনেকটা। মেসি- ডি মারিয়া জুটি আর্জেন্টিনাকে আরও বেশি ভয়ানক করে তোলে প্রতিপক্ষের সামনে। কোপা আমেরিকা ফাইনালে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে ম্যাচ উইনিং গোলটিও করেন ডি মারিয়া। তাঁর উইং বরাবর দৌড় প্রতিপক্ষ ডিফেন্সকে ফালাফালা করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
লাউতারো মার্টিনেজ:
আর্জেন্টিনার আক্রমণ ভাবে লিওনেল মেসির অন্যতম সঙ্গী লাউতারো মার্টিনেজ। ২০২১/২২ মরসুমটা দারুণ গিয়েছে ইন্টার মিলানের এই স্ট্রাইকারের। ৪৯ ম্যাচে ২৫ গোল করেছিলেন তিনি। এই মরসুমে ২১ ম্যাচে ইতিমধ্যেই করে ফেলেছেন ১৪টি গোল। নিজের গতি জন্য এবং মার্কারকে পরাস্ত করে গোল করার জন্য বিখ্যাত মার্টিনেজ। ২০১৮ থেকে আর্জেন্টিনার জার্সিতে ৪০ ম্যাচে ২১টি গোল তিনি করেছেন। আর্জেন্টিনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মার্টিনেজ। তাঁর মতো বিশ্বমানের স্ট্রাইকার লে থাকলে বিশ্বের সেরা প্লে-মেকার মেসির কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়।
রড্রি ডি পল:
আর্জেন্টিনা ফুটবলের অন্যতম আবিষ্কার রড্রি ডি পল। কোপা আমেরিকা জয়ের কয়েক দিনের মধ্যেই এই ফুটবলারকে মোটা অঙ্কে সই করায় অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ। আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডের প্রধান কাণ্ডারী হয়ে উঠেছেন ধীরে ধীরে ডি পল। যেমন গোল করার ক্ষমতা রাখেন, তেমনই রাখেন গোল করানোর ক্ষমতা। একই রকম ভাবে প্রতিপক্ষের আক্রমণের চাপও প্রবল ভাবে কখনওই রড্রি নিজে মাঠে থাকাকালীন ডিফেন্সের উপর পড়তে দেন না। এক কথায় এক জন কমপ্লিট মিডফিল্ডার রড্রি ডি পল। মেসির অত্যন্ত স্নেহধন্য এই ফুটবলারটি। আর্জেন্টিনার মাঝমাঠের ইঞ্জিন তিনি।
এমিলিয়ানো মার্টিনেজ:
বহু দিন পর এক জন দক্ষ গোলরক্ষক পেয়েছেন আর্জেন্টিনা। মার্টিনেজের মানের গোলরক্ষক এর আগে আর্জেন্টিনা কবে পেয়েছিল তা বলতে সমস্যায় পড়ে হবে পরিসংখ্যানবীদদেরও। একার হাতে কী ভাবে একটা দলকে টুর্নামেন্টে বাঁচিয়ে রাখা যায় তা মার্টিনেজ দেখিয়েছেন কোপা আমেরিকায়। কোপা আমেরিকায় অনফিল্ড গোল বাঁচানোর পাশাপাশি একাধিক পেনাল্টি কিকও সেভ করেছেন তিনি। কোপা আমেরিকার মতোই এটা প্রথম বিশ্বকাপ হতে চলেছে ২৮ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন গোলরক্ষকের।
লিসান্দ্রো মার্টিনেজ:
লিওনেল স্কোলানির দলে বেশির ভাব সময় ব্রাত্য থেকেছেন লিসান্দ্রো মার্টিনেজ। এখনও পর্যন্ত আর্জেন্টিনার জার্সিতে ১টি ম্যাচই তিনি খেলেছেন কারণ নিকোলাস ওটামেন্ডি, ক্রিশ্চিয়ান রোমেরোকে বেশি বার দলে সুযোগ দিয়েছেন স্কোলানি। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ডিফেন্ডার মার্টিনেজ এই মুহূর্তে প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার। অ্যারিয়াল ডুয়েলেও তিনি অন্যতম সেরা। ফলে আশা করা যায় ২৪ বছর বয়সী লিসান্দ্রো মার্টিনেজের দক্ষতাকে বিশ্বকাপে কাজে লাগাবেন স্কোলানি।
লিওনেল মেসি:
যাঁর কথা না বললে আর্জেন্টিনা দলটাই সম্পূর্ণ নয় সেই লিওনেল মেসির দিকে বিশ্বকাপ জয়ের জন্য তাকিয়ে থাকবে গোটা আর্জেন্টিনা। এই একটা মানুষই তো বিশ্বের কোটি কোটি আর্জেন্টিনা প্রেমী এবং তাঁর অনুগামীদের স্বপ্নের সওদাগর। মেসিকে নিয়ে যা বলা যায় ততটাই কম ফলে এই টুকুই যথেষ্ট যে যেই আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখতে সেই দলটার হৃদপিণ্ডের নাম লিওনেল মেসি।