এসসি ইস্টবেঙ্গলের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে আইএসএল, সমর্থকদের সিংহভাগ চাইছেন মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ
চাপ বাড়াচ্ছে এফএসডিএল, শাসক-বিরোধী গোষ্ঠী ও সমর্থকদের সিংহভাগ চাইছে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ
লগ্নিকারী শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে চুক্তি সংক্রান্ত জট দ্রুত কাটিয়ে ফেলতে ইস্টবেঙ্গলকে কড়া বার্তা দিল আইএসএল। টুর্নামেন্টের আয়োজক সংস্থা এফএসডিএলের তরফে লাল-হলুদকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে গোটা পরিস্থিতিতে বিরক্ত ক্লাবের শাসক-বিরোধী গোষ্ঠী এবং সমর্থকদের সিংহভাগই, কর্তা দেবব্রত সরকারের অপসারণ দাবি করেছেন। এ সংক্রান্ত এক সোশ্যাল মিডিয়া প্রচার ও বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে দিদি (মুূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) চাইলেই এই বিতর্কের সমাধান হওয়া সম্ভব।
এফএসডিএল-এর কড়া বার্তা
নতুন মরসুমের চুক্তি নিয়ে লগ্নিকারী শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের যে দ্বন্দ্ব মেটার নামই নিচ্ছে, তা দ্রুত নিষ্পত্তি ঘটানোর নির্দেশ দিয়েছে ইন্ডিয়ান সুপার লিগ বা আইএসএলের আয়োজক সংস্থা ফুটবল স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড বা এফএসডিএল। মঙ্গলবার মুম্বইয়ে হওয়া সংস্থার বৈঠকে ইস্টবেঙ্গলকে সতর্ক করা হয়েছে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পরিস্থিতি অবিলম্বে স্বাভাবিক না হলে লাল-হলুদকে বাদ দিয়েই আগামী আইপিএলের সূচি তৈরি করা হবে।
বৈঠকে যোগ দিতে চায়নি ইস্টবেঙ্গল
মঙ্গলবার মুম্বইয়ে হওয়া এফএসডিএলের বৈঠকে না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এসসি ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু আইএসএলের আয়োজক সংস্থার কড়া ফতোয়ায় অবশেষে তাতে যোগ দেয় লাল-হলুদ। সেখানে তাদের নির্দেশ দেওয়া হয় শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি যেন অবিলম্বে সই করে কলকাতার ক্লাব। উল্লেখ্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে গত মরসুম শুরুর আগে শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। একদম শেষ মুহুর্তে আইএসএলে খেলার ছাড়পত্রও পেয়েছিল কলকাতার ঐতিহ্যশালী দল। অনেক দেরিতে অনুশীলন শুরু করে মোট ১১ দলের টুর্নামেন্টে নবম স্থানে শেষ করেছিল রবি ফাওলারের দল।
ক্লাব কর্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
নতুন মরসুম শুরুর আগে লগ্নিকারী সংস্থা শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জন্য ক্লাব কর্তা দেবব্রত সরকারকেই সরাসরি দায়ী করেছে ইস্টবেঙ্গের শাসক-বিরোধী এবং সমর্থকদের একটা অংশ। এই ইস্যুতে #NituOut #DidiBolleiSoiHobe শীর্ষক প্রচার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এক বিবৃতি জারি করে কর্তা দেবব্রত সরকারকে 'স্বার্থান্বেষী' বলে কটাক্ষ করে তাঁর অপসারণ দাবি করেছেন লাল-হলুদ সমর্থকদের ওই অংশ। বিক্ষোভকারীদের মোদ্দা কথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টায় শ্রী সিমেন্টের মতো প্রভাবশালী ইনভেস্টর ইস্টবেঙ্গলের সাথে যুক্ত হয়েছিল। তাই সেই দিদিই ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের ধমক দিয়ে শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে সই করাতে পারেন বলে ক্লাব সমর্থকদের তরফে আশা করা হয়েছে। বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী চাইলে তাঁরা নিজেদের দাবিদাওয়া সম্বলিত চিঠি তাঁকে পাঠাতেও রাজি। একমাত্র দিদি বললেই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করেন ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকরা।
ক্রিকেটার কেনাবেচায় 'না'
কদিন আগেই ফিফার কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হয় ইস্টবেঙ্গলকে। তরফে জানানো হয়েছে, ফুটবলারদের ২০১৯-২০ মরসুমের বেতন বকেয়া রেখেছে লাল-হলুদ। এই অবস্থায় নতুন মরসুমে কলকাতার ক্লাব ফুটবলার কেনাবেচা করতে পারবে না বলে ফিফার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আইএসএলের অন্য ক্লাব কেরালা ব্লাস্টার্সকেও নির্বাসিত করা হয়েছে। বিশ্ব ফুটবল নিয়ামক সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ফুটবলারদের ২০১৯-২০ মরসুমের বেতন বকেয়া রেখেছে লাল-হলুদ। এই অবস্থায় নতুন মরসুমে কলকাতার ক্লাব ফুটবলার কেনাবেচা করতে পারবে না। আইএসএলের অন্য ক্লাব কেরালা ব্লাস্টার্সকেও নির্বাসিত করা হয়েছে। কোয়েসের সঙ্গে বিচ্ছেদ এবং স্পোর্টিং রাইটস নিয়ে বিতর্কে ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের ২০১৯-২০ মরসুমের বেতন বকেয়া থেকে যায়। লগ্নিকারী সংস্থার তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ায় ফুটবলার ও সাপোর্ট স্টাফদের বকেয়া মেটানোর দায়িত্ব ক্লাব কর্তাদের। হাত গুটিয়ে রাখে শ্রী সিমেন্টও। ফলে এই ইস্যুতে লাল-হলুদের তরফে কোনও উদ্যোগ না দেখেই ফিফার তরফে কড়া পদক্ষেপ করা হয়।