আইএসএল ডার্বির পর কলকাতার দুই প্রধানে ভিন্ন ছবি, কী বলছেন দুই কোচ?
আইএসএলের কলকাতা ডার্বিতে জয়ের হ্যাটট্রিক এটিকে মোহনবাগানের। ১১ মিনিটের ব্যবধানে প্রথমার্ধে তিনটি গোল। সবুজ মেরুনের জয়ের ব্যবধান আরও বাড়তেও পারত। চুরমার হয়ে যেতে পারত ইস্টবেঙ্গলের ৫-০ গোলে ডার্বি জয়ের গর্ব। অরিন্দম ভট্টাচার্যের পরিবর্তে গোলকিপিংয়ে নজর কাড়া শুভম সেন লজ্জা কিছুটা কমিয়েছেন লাল হলুদের। এসসি ইস্টবেঙ্গল কোচ ম্যানুয়েল দিয়াজ মেনে নিয়েছেন, দল এখনও তৈরি নয়। অন্যদিকে, এটিকে মোহনবাগান দুটি ম্যাচ জিতে লিগশীর্ষ দখল করায় স্বাভাবিকভাবেই খুশি আন্তোনিও লোপেজ হাবাস।
এটিকে মোহনবাগান কোচ জানিয়েছেন, আক্রমণাত্মক খেলার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নেমেছিল তাঁর দল। মাঝে কিছুটা গাছাড়া মনোভাব দেখালেও ডার্বি জয়ের পর তা নিয়ে আর রুষ্ট নন হাবাস। তিনি বলেন, ম্যাচের আগে ফুটবলারদের বলেছিলাম ভালো করে খেলাটা গোছানোর কথা। তার পরে ব্যক্তিগত দক্ষতার কথা। সকলেই খুব ভালো খেলেছেন। শৃঙ্খলা বজায় রেখে সফল প্রয়াস, সব দিক থেকেই মন জয় করার মতো খেলেছেন, ফলে আমি খুশি।
Hero of the Match Joni Kauko with words of wisdom after our 3-0 win over rivals SC East Bengal 🤜🤛#ATKMohunBagan #JoyMohunBagan #আমরাসবুজমেরুন #HeroISL #SCEBATKMB pic.twitter.com/w4n53bysZl
— ATK Mohun Bagan FC (@atkmohunbaganfc) November 28, 2021
প্রথম ১০ মিনিট এসসি ইস্টবেঙ্গল আগ্রাসীভাবে শুরু করার পর বিপক্ষকে মেপে নিয়ে ঝড় তোলে সবুজ মেরুন। ১২ মিনিটে প্রথম গোল, ২৩ মিনিটে তৃতীয় গোল। এতেই বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে লাল হলুদ। হাবাসের কথায়, আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলারই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। ৪০ মিনিট পর্যন্ত সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলার পরে একটু গা ছাড়া মনোভাব এসেছিল। ফলে এসসি ইস্টবেঙ্গলেরও গোলের সুযোগ আসে। আমরাও আরও গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলাম। তবে ছেলেদের কিছু বলব না এই ম্যাচের পর। তাঁদের পারফরম্যান্সে আমি খুশি। দুই ম্যাচে তিন পয়েন্ট তো ভালোই, গোলপার্থক্যও যথেষ্ট ভালো রয়েছে আমাদের যা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
Pritam Kotal shares his thoughts after winning the Kolkata Derby 3-0!#ATKMohunBagan #JoyMohunBagan #আমরাসবুজমেরুন #HeroISL #SCEBATKMB pic.twitter.com/KazXGGCGsI
— ATK Mohun Bagan FC (@atkmohunbaganfc) November 28, 2021
ডিফেন্সে তিনজন রেখে শুরু করেছিলেন লাল হলুদ কোচ দিয়াজ। এটাই কি বিপক্ষের আক্রমণের প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়? এই প্রশ্নের উত্তরে হাবাসের জবাব, শৃঙ্খলা ও মানসিকতার দিক থেকে আমাদের ছেলেরা কমপ্লিট পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। আমাদের পরিকল্পনা ছিল গোল দেব, কিন্তু খাব না। এবার প্রথম ম্যাচে আমাদের দুই গোল হজম করতে হয়েছিল, যা ভালো নয়। এটিকে মোহনবাবাগানের পরের ম্যাচ গতবারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে। মুম্বইকে গতকালই পিছিয়ে পড়েও ৩-১ গোলে হারিয়েছে হায়দরাবাদ এফসি। হাবাস বলেন, ফুটবলাররা রিকভার করার পর আমরা এসসি ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের বিশ্লেষণ করে যাবতীয় ভুলগুলি চিহ্নিত করব। পরে বিপক্ষকে নিয়ে ভাবব।
Tomislav Mrcela shares his thoughts after a disappointing night for us.
— SC East Bengal (@sc_eastbengal) November 27, 2021
We pick ourselves up and go again in 3 days. #SCEBATKMB #WeAreSCEB pic.twitter.com/sqdvtIUVRO
লাল হলুদের স্প্যানিশ কোচ ম্যানুয়েল দিয়াজ মেনে নিয়েছেন প্রতিপক্ষের চেয়ে পিছিয়েই ছিল তাঁর দল। ফুটবলারদের একাধিক ভুলেও বিপক্ষের জয় পেতে সুবিধা হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন তিনি। দিয়াজের কথায়, আমাদের বিরুদ্ধে খুবই ভালো একটা দল নেমেছিল, যারা প্রতিপক্ষ হিসেবে বেশ কঠিন। ফলে পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলাই কঠিন হয়ে ওঠে। ফুটবলাররা একাধিক গুরুতর ভুল করেছেন। এ রকম দুর্দান্ত ও বিপজ্জনক দলের বিরুদ্ধে যে ভুলগুলি করা চলে না। আমরা আমাদের খেলাই খেলতে পারিনি। তিন দিনের মধ্যেই পরের ম্যাচে ওডিশার বিরুদ্ধে নামতে হবে আমাদের। সেই ম্যাচে ভালো খেলতেই হবে। এটিকে মোহনবাগানের তিনটি গোলের পিছনেই অবদান ছিল হুগো বুমোসের, তাঁকে আটকাতেই পারেনি লাল হলুদ। না ছিল ম্যান মার্কিং, না জোনাল মার্কিং। ছন্নছাড়া ফুটবল। দিয়াজ এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রতিপক্ষের ফুটবলারদের সঙ্গে আমাদের খেলোয়াড়দের দূরত্ব সব সময়ই ছিল। বুমোসের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা সেটাই হয়েছে। আমরা সমর্থকদের কষ্টটা বুঝতে পারছি। তবে এই মুহূর্তে এটিকে মোহনবাগান ও এসসি ইস্টবেঙ্গলের মধ্যে অনেকটা ফারাক আছে, এটা মানতেই হবে।