বুট কেনার পয়সা ছিল না, সেই রোনাল্ডোকে আজও ভোলেননি সিআরসেভেন
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, একজন ব্যক্তিত্ব, তারকা, কিন্তু তাঁর মধ্যে আজও বাঁচে মানুষ রোনাল্ডো, যে আজও নিজের অতীতকে ভোলেনি।
আজকের তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে সবাই চেনে। পৃথিবীর সেরা ধণীদের তালিকায় তাঁর নাম ওপরের দিকে। কিন্তু একটা দিন ছিল যখন সামাণ্য বুট কেনার টাকাও তাঁর ছিল না। সেই সময়ের দিনগুলোও ভোলেননি রোনাল্ডো, ভোলেননি তাঁর লড়াইয়ের সঙ্গীদের।
বয়স যখন মাত্র সাত
তখন তিনি মাত্র সাত বছরের বালক। বাবা সিএফ অ্যান্ডোরিনহা দলের কিট ম্যান ছিলেন। তাঁরই হাত ধরে ফুটবল মাঠে যেতেন তিনি। বাবা বেঞ্চে বসে তাঁকে তাতাতেন। কিন্তু মা -বোনের আগ্রহ ছিল না। বাবা নিয়মিত তাঁর পারফরম্যান্সের গল্প বাড়িতে বলতেন।
প্রথম যেদিন মা মাঠে গেলেন
কিন্তু দিনের পর দিন ক্রিশ্চিয়ানোর খেলার প্রশংসা শুনতে শুনতে একদিন মাঠে এলেন তাঁর মা ও বোন। কত ম্যাচেই তো কত তাবড় দর্শকদের সামনে খেলেছেন। কিন্তু সে দিনের মা-বোনের সামনে ফুটবল খেলার স্মৃতি আজও তাঁর মনে অম্লান।
ছিল না বুট কেনার পয়সা
মেদেইরাতে যখন থাকতেন জীবনযুদ্ধ ছিল মারাত্মক। স্বাচ্ছন্দ্যের লড়াই লড়তে লড়ত এগোচ্ছিল রোনাল্ডোদের পরিবার। অবস্থা এমন ছিল যে নতুন বুট কেনার পয়সাও ছিল না ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর।
স্পোর্টিং লিসবনে শুরু নতুন লড়াই
মাত্র ১১ -বছরে পরিবারকে ছেড়ে স্পোর্টিং লিসবনের অ্যাকাডেমিতে যোগদান। পরিবার ছেড়ে থাকার নিদারুণ কষ্টের মধ্এযই ফুটবলটা খেলতেন। একা একা কেঁদে দিন কেটেছে। তবে সে সময় থেকেই রোনাল্ডোর গুণ নিয়ে প্রশ্ন ছিল না কারোর মনে। প্রথমে সতীর্থ পরে কোচরা তাঁকে দৈত্য বলতেন।
ফিটনেসে জোর
খুব ছোটোখাটো চেহারার রোনাল্ডোকে নিয়ে প্রশ্ন তুলতেন অনেকে। ফলে ফিজিক্যাল ফিটনেসে জোর দেওয়ার বিষয়টা বুঝতে পারছিলেন, ফলে আলাদা করে শারীরিক কসরতের ওপর যোগ দিতেন। রাতে ডর্মিটরি থেকে লুকিয়ে বেরিয়েও জিম করতেন।
ম্যান ইউয়ের প্রতি টান
টেলিভিশনে ম্যান ইউয়ের খেলা দেখেই বড় হয়ে ওঠা। ছোট ক্রিশ্চায়ানোকে ভীষণ টানত রেড ডেভিলস। স্বপ্ন দেখতে দেখতেই নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি করছিলেন তিনি, একদিন খেলবেনই ওই দলে।
পারফরম্যান্স ও স্বীকৃতি
কঠিন লড়াই এগিয়ে এসে জাত চেনানো, ম্যান ইউয়ের জার্সি গায়ে খেলা ব্যালন ডি অর জেতাও যেন স্বপ্নপূরণের উড়ানের প্রথম ধাপ। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর মনে আজও অম্লান সেই স্মৃতি। যা কোনও দিনই হারাবে না স্মৃতির মণিকোঠা থেকে।
রিয়াল মাদ্রিদে পা রাখা
একটা জায়গা করে নেওয়ার পরও স্বস্তি ছিল না। নিজেক নতুন জায়গায় নতু করে প্রমাণের খিদেতে ইংল্যান্ড থেকে স্পেনে পাড়ি। রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি গায়ে রোনাল্ডো যা করেছেন তা কারোর অজানা নয়। তাই সমর্থকদের কাছে রিয়াল আর রোনাল্ডো আজ তাই কার্যত সমার্থক।
ফুটবলার রোনাল্ডো ও বাবা রোনাল্ডো
শুধু ফুটবলার নয়, রিয়াল মাদ্রিদে খেলার সময়েই প্রথমবার বাবা হন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ফুটবলার হওয়ার পাশাপাশি বাবা হওয়ার অনুভূতিও একইরকমের বিশেষ তাঁর কাছে।
সি আর সেভেনের মানবিক মুখ
শুধু নিজের সন্তান নয়, পিছিয়ে পড়া শিশুদের জন্যও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন 'মানুষ' রোনাল্ডো। তাঁর ২০১৩-র ব্যালন ডি অর ট্রফি ৬লাখ ইউরোতে নিলাম হয়েছে, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা। 'মেক এ উইশ' ফাউন্ডেশনের বাচ্চাদের দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা খাতে যা দান করেছেন সিআর সেভেন।