আর্জেন্তিনার ফুটবল মাঠে ধুন্ধুমার! তুমুল অশান্তিতে মৃত ১, আহত বেশ কয়েকজন
ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল স্টেডিয়ামে সংঘর্ষ ও তার জেরে পদপিষ্ট হয়ে অন্তত ১৩১ জনের মৃত্যুর ঘটনার রেশ কাটেনি। তার মধ্যেই ফের ফুটবল মাঠে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। তাতে একজনের মৃত্যু হলো। শিশু-সহ আহত বেশ কয়েকজন। এবারের ঘটনাটি ঘটেছে আর্জেন্তিনায়। মারাদোনার ক্লাব বোকা জুনিয়র্সের খেলা চলাকালীন।
আর্জেন্টাইন প্রিমেরা ডিভিশনের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল বোকা জুনিয়র্স ও জিমনাসিয়া। খেলাটি হচ্ছিল লা প্লাতায় কারমেলো জেরিলো স্টেডিয়ামে। এই স্টেডিয়ামটি রাজধানী বুয়েনস আইরেস থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে। সমসংখ্যক ম্যাচে বোকা জুনিয়র্স ও জিমনাসিয়ার পয়েন্টের ব্যবধান ৫। চারটি রাউন্ড বাকি রয়েছে, তাতেই নিশ্চিত হবে খেতাব কার দখলে যাবে। বোকা জিমনাসিয়াকে হারালেই চলে যেতে পারতো পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। জিমনাসিয়া ঘরের মাঠে শেষ ম্যাচ জিতলে থাকতো খেতাব জয়ের দৌড়ে, পয়েন্ট তালিকার চারে উঠে আসার হাতছানিও ছিল। ফলে এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিকে কেন্দ্র করে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে ছিল তুমুল উন্মাদনা।
স্টেডিয়াম ছিল দর্শকঠাসা। অশান্তির সূত্রপাত, অনেক ফুটবলপ্রেমী জোর করে স্টেডিয়ামে ঢোকার চেষ্টা করায়। পুলিশ রবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। সংঘর্ষের আঁচ ছড়িয়ে পড়ে স্টেডিয়ামের মধ্য়েও। প্রাণরক্ষার তাগিদে অনেকেই ফেন্সিং ভেঙে মাঠের মধ্যে ঢুকে পড়েন। পড়িমরি করে দর্শকদের অনেককেই শিশুদের কোলে নিয়ে মাঠে ঢুকতে দেখা যায়। টিয়ার গ্যাস থেকে পাঁচ থেকে বাঁচার জন্য কেউ বসে পড়েন, অনেকে শুয়েও পড়েন। সকলেরই মনে তখনও গেঁথে ইন্দোনেশিয়ার ঘটনার কথা। যেখানে ফুটবল মাঠে সংঘর্ষের জেরে ৩২ শিশু-সহ ১৩১ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
বুয়েনস আইরেস প্রভিন্সের নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী সের্হিও বেরনি জানিয়েছেন, ফুটবল মাঠে এই পরিস্থিতির মধ্যে ৫৭ বছরের এক ব্যক্তি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। তাঁকে সরাসরি স্টেডিয়াম থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি। ৯ মিনিট খেলা চলার পরই এই ঘটনায় ম্যাচটি স্থগিত করে দেওয়া হয়। তখনও অবধি কোনও দলই গোল পায়নি। ফুটবলদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা রেখেই ম্যাচ স্থগিতের সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে। রেফারি হার্নান মাস্ত্রাঞ্জেলো বলেন, মাঠে আমাদের সকলেরই অসুবিধা হচ্ছিল। গ্যাস প্রয়োগের জেরে আমাদের স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের ক্ষেত্রেও অসুবিধা হচ্ছিল। নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না থাকাতেই খেলা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। বোকা জুনিয়র্সের লিগশীর্ষে যাওয়ার অপেক্ষা বাড়ায় হতাশা ব্যক্ত করেন ক্লাবকর্তারা।