সর্ব ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সচিবের পদ থেকে ইস্তফা বিতর্কিত কুশল দাসের
সর্ব ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সচিবের পদ থেকে ইস্তফা বিতর্কিত কুশল দাসের
অবশেষে দিল্লির ফুটবল হাউস থেকে একটা জগদ্দল পাথরকে সরানো গেল। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সরে দাঁড়ালেন দীর্ঘ সময় ধরে সর্ব ভারতীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এআইএফএফ)-এর দায়িত্ব সামলানো কুশল দাস।
এই পদত্যাগের ফলে এআইএফএফ-এর সঙ্গে কুশল দাসের দীর্ঘ ১২ বছরের সম্পর্কের সমাপ্তি ঘটল। কুশলের আমলের শেষের দিকে তাঁর একাধিক কাজ এবং এআইএফএফ-এর ক্রিয়কলাপ নিয়ে বিভিন্ন প্রকার বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তাঁর সময়ে যে ভাবে আই লিগের মান খর্ব করা হয়েছে এবং একদা দেশের শীর্ষ লিগকে দ্বিতীয় সারিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে তা সাধারণ ফুটবলপ্রেমী থেকে শুরু করে বহু প্রাক্তন ফুটবল তারকা মেনে নিতে পারেনি।
কুশল দাসের পদত্যাগ করার কথা সামনে আনে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। নাম না প্রকাশের শর্তে ফুটবল হাউসের এক শীর্ষ স্থানীয় কর্তা পিটিআই'কে বলেছেন, "হ্যাঁ, শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে উনি পদত্যাগ করেছেন।" ২০১০ সালে ফুটবল সর্বোচ্চ আসনে বসা কুশল দাস ২০ জুন থেকে ছুটিতে ছিলেন।
২০২০ সালে এআইএফএফ-এর নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল কিন্তু একাধিক বার বলেও যখন এআইএফএফ নির্বাচনের প্রক্রিয়ার জন্য কোনও রকম উদ্দ্যোগ নেয়নি তখন এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে দেশের শীর্ষ আদালত। প্রফুল প্যাটেলের নেতৃত্বাধীন কমিটি'কে অকেজ করে সুপ্রিম কোর্ট ভারতীয় ফুটহলে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে। এই কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এআইএফএফ-এর পুরনো কমিটি অকেজ হয়ে পড়ে। কিছু দিন আগেই সামনে আসে এক জ্যোতিষীর ফার্মকে এআইএফএফ ১৬ লক্ষ টাকা দিয়েছে যাতে এএফসি এশিয়ান কাপের মূল পর্বে পৌঁছন সুনীল ছেত্রীরা। কিন্তু যে সংস্থার নাম এবং ঠিকানা রয়েছে এআইএফএফ-এর রেকর্ডে তার বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব নেই। ফলে আর্থিক তছরূপের অভিযোগও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কুশলকে জেরা করলেও কোনও ঠিক উত্তর তিনি দিতে পারেননি। ফলে কুশল সহ এই সমস্ত কাজে যুক্ত বাকিদেরও রক্তচাপ যত দিন গড়াচ্ছিল ততই বাড়ছিল।
কিছু দিন আগে ফিফা এবং এএফসি'র প্রতিনিধি দল এবং কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অরূরাগ ঠাকুরের সঙ্গে বৈঠক করেন সিওএ-এর প্রতিনিধিরা। ফিফা ফুটবল বড়িতে কোনও বাইরের হস্তক্ষেপকে মন্যতা দেয় না। ফিফার তরফ থেকে জানানো হয়েছে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে না হলে অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা বিশ্বকাপের হোস্টিং রাইটস হারাবে ভারত।
কুশল দাসের বিরুদ্ধে এআইএফএফ-এর অভ্যন্তরীন বৈঠকে মদ্যপ অবস্থায় উপস্থিত হওয়ারও অভিযোগ উঠেছিল, কিছু দিন আগে এআইএফএফ-এর অভ্যন্তরে এক মহিলা কর্মীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগও ওঠে দাসের বিরুদ্ধে। তবে, সেই সময়ে প্রফুল প্যাটেলের এআইএফএফ তাঁকে ক্লিনচিট দেয়। এই ঘটনার কোনও তদন্ত না করেই কুশলকে ক্লিনচিট দেওয়া হয়েছে এমমটাই শোনা গিয়েছিল সেই সময়ে। এই মুহূর্তে সর্ব ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী সচিব হিসেবে হিসেবে কাজ করছেন লিগ সিইও সুনন্দ ধর।