
উদ্বোধনে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী, টানা ৫ বছর ডুরান্ড কাপ 'খেলা হবে' কলকাতাতেই
দিল্লিতে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছিল ডুরান্ড কাপ। এশিয়ার প্রাচীনতম ক্লাব ফুটবলের টুর্নামেন্ট তাই এবার থেকে ২০২৫ সাল অবধি প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হবে কলকাতাতেই। গত বছর করোনা পরিস্থিতিতে ডুরান্ড কাপ আয়োজন সম্ভব হয়নি। দিল্লির বাইরে এসে গত ২০১৯ সালে প্রথমবার কলকাতায় আয়োজিত হয়েছিল ডুরান্ড কাপ। সমর্থকদের বিপুল সাড়া দেখে তাই শুধু এ বছর নয়, আগামী পাঁচ বছর ফুটবলের মক্কাতেই ডুরান্ড আয়োজনের ঘোষণা করা হল।

উদ্বোধনে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী
রবিবার ৫ সেপ্টেম্বর বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ডুরান্ড কাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ ফোর্ট উইলিয়ামে ডুরান্ড কাপের সাংবাদিক বৈঠকে ট্রফিগুলি আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচিত হল। উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়া ও যুবকল্যাণমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি, ইস্টার্ন কম্যান্ড হেড (এসএম, ভিএলএম) কোয়ার্টারের চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল কমল রেপ্সওয়াল। আরও খুশির খবর ডুরান্ড কাপ দর্শকশূন্য গ্যালারিতে হবে না। অরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, ১৩০তম ডুরান্ড কাপের প্রথম থেকেই সীমিত সংখ্যক দর্শককে মাঠে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই স্টেডিয়ামগুলির দর্শকাসনের ৫০ শতাংশে দর্শকদের প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু ডুরান্ডে প্রথম দিকে স্টেডিয়ামের অর্ধেক ভর্তি করা না হলেও ক্রমান্বয়ে দর্শকের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে ডুরান্ড কাপ কমিটি। করোনা পরিস্থিতির কারণেই এই সিদ্ধান্ত। ডুরান্ড কাপ কমিটি জানিয়েছে, সবকিছু ঠিকঠাক চললে টুর্নামেন্টের পরের দিকে স্টেডিয়ামের ৫০ শতাংশে দর্শক প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে রাজ্য সরকারের নিয়ম মেনে। এবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে ডুরান্ড কাপের যৌথ আয়োজনের দায়িত্বেও রয়েছে রাজ্য সরকার।

৫ বছর টানা কলকাতায়
সেনা-কর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল রেপ্সওয়াল জানিয়েছেন, তিন বছর বন্ধ থাকার পর ২০১৯ সালে ডুরান্ড কাপ আয়োজন করা হয়েছিল কলকাতায়। দর্শকদের মধ্যে যে বিপুল উন্মাদনা লক্ষ্য করা গিয়েছে, সেই সঙ্গে রাজ্য সরকারের তরফেও দারুণভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। টুর্নামেন্ট সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতর একযোগে সহযোগিতা করেছে। এর ফলে ২০২৫ সাল অবধি কলকাতাতেই ডুরান্ড কাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ডুরান্ড কাপ শুরু হয়েছিল ১৮৮৮ সালে। ইংলিশ এফএ কাপ ১৮৭১ সালে এবং স্কটিশ কাপ শুরু হয় ১৮৭৪ সালে। ফলে বিশ্বের প্রাচীনতম টুর্নামেন্টের নিরিখে ডুরান্ড তৃতীয় স্থানে এবং এশিয়ার প্রাচীনতম।

ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান এবার নেই
২০১৯ সালে কলকাতায় মোহনবাগানকে ২-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল গোকুলম কেরালা। ১৩০তম ডুরান্ড কাপে অবশ্য ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান অংশ নিচ্ছে না। তবে মহমেডান স্পোর্টিং খেলবে। ১৬টি দল থাকছে ডুরান্ড কাপে যার মধ্যে আইএসএলের পাঁচটি দল- বেঙ্গালুরু এফসি, এফসি গোয়া, জামশেদপুর এফসি, কেরালা ব্লাস্টার্স ও হায়দরাবাদ এফসি থাকছে। মহমেডানই প্রথম ভারতীয় ক্লাব হিসেবে ডুরান্ড জিতেছিল। সাদা-কালো ব্রিগেডের সঙ্গেই আই লিগের গোকুলম, সুদেবা এফসি থাকছে। দিল্লি এফসি ও বেঙ্গালুরু ইউনাইটেডের পাশাপাশি ডুরান্ডে অংশ নেবে আর্মি গ্রিন, আর্মি রেড, ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স, ইন্ডিয়ান নেভি, অসম রাইফেলস ও সিআরপিএফ। ৫ সেপ্টেম্বর শুরু হবে ডুরান্ড কাপ, ফাইনাল ৩ অক্টোবর। বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন ছাড়াও খেলাগুলি হবে মোহনবাগান মাঠ ও কল্যাণী পুরসভার স্টেডিয়ামে। ১৮৮৮ সালে ডুরান্ড কাপ প্রথম অনুষ্ঠিত হয় শিমলায়। তখন এর নাম ছিল আর্মি কাপ। ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মি ট্রুপ ছাড়া কেউ অংশ নিতে পারত না। পরে অন্য দলগুলির জন্য খুলে যায়। এই টুর্নামেন্টের পরে নাম বদলায়, ১৮৮৪ থেকে ১৮৯৪ সাল অবধি ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার বিদেশ সচিব পদে থাকা স্যর মর্টিমার ডুরান্ডের নামে এই টুর্নামেন্টটি নামাঙ্কিত হয়।