ইস্টবেঙ্গল হারাতে পারে শ্রী, আইএসএলে হতশ্রী দশার মধ্যেই লাল হলুদে আঁধার-শঙ্কা
কোয়েসের পর ফের ইনভেস্টর হারানোর পথে ইস্টবেঙ্গল। লাল হলুদ কর্তাদের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে আগামী মাসেই বিচ্ছেদের নোটিশ পাঠানো হতে পারে শ্রী সিমেন্টের তরফে। কালই এবারের আইএসএলে লাল হলুদের শেষ ম্যাচ। হতশ্রী পারফরম্যান্স তো আছেই, শুরু থেকেই বিনিয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের চাপানউতোর চলছে। তারই মধ্যে সারদার পাশাপাশি রোজভ্যালিকাণ্ডে নাম জড়িয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। নোটিশ পাঠিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সক্রিয় হয়েছে। সবমিলিয়ে ফের অন্ধকারের দিকে এগোচ্ছে ইস্টবেঙ্গল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও এফএসডিএল কর্তা তরুণ ঝুনঝুনওয়ালার উদ্যোগে একেবারে শেষ মুহূর্তে আইএসএল খেলার সুযোগ পায় লাল হলুদ। শ্রী সিমেন্ট লাল হলুদে ইনভেস্টর হয়ে আসায় গঠিত হয় শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশন। এসসি ইস্টবেঙ্গল নামে আইএসএলে খেলে লাল হলুদ। কিন্তু টার্ম শিট অনুযায়ী চূড়ান্ত চুক্তিপত্র স্বাক্ষর হওয়া নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা। জটিলতা কাটানোর উদ্যোগ নেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে দুই পক্ষের কথাবার্তাও হয়। তারপরও জটিলতা কাটেনি। মেল আর চিঠি চালাচালিতে দুই পক্ষের অনড় মনোভাবই তৈরি করেছে জটিলতা।
ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের দাবি, তাঁদের পাঠানো কাগজপত্র পেয়েও কোনও উত্তর দেওয়া হয়নি বিনিয়োগকারী সংস্থার তরফে। অন্যদিকে, শ্রী সিমেন্ট কর্তারা প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও জানা গিয়েছে, লাল হলুদের জন্য ৫০ কোটি টাকার বেশি তারা খরচ করেছে। অথচ ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে টার্ম শিটে সই করার পরেও শর্ত মেনে চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে সই করতে গড়িমসি করছেন লাল হলুদ কর্তারা। ৩১ মার্চের মধ্যে সেই চুক্তিপত্র সম্পাদনের কথা। টার্ম শিটের শর্ত অনুযায়ী, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের স্পোর্টিং রাইটস ও সম্পত্তি শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশনের কাছে হস্তান্তরের কথা। এর বিনিময়ে ইস্টবেঙ্গলের ২৪ শতাংশ অংশীদারিত্ব বা ইক্যুইটি পাওয়ার কথা। একইসঙ্গে জানানো হয় ১ সেপ্টেম্বরের আগে পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গলের কোনও আর্থিক দায়ভার বহন করবে না শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশন। যদিও আইএসএল খেলতে শুরুতে তাড়াহুড়ো করে টার্ম শিটে সই করলেও পরে নানা বিষয়ে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা বেঁকে বসেন বলে অভিযোগ। কিছু শর্তে লাল হলুদ কর্তাদের আপত্তি থাকায় তা জানিয়ে শ্রী সিমেন্টকে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু উত্তর আসেনি।
হরিমোহন বাঙ্গুরের সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, স্বাক্ষরিত টার্ম শিটের বাইরে নতুন কোনও শর্ত মানা হবে না। ইস্টবেঙ্গল কর্তারা অনড় থাকলে বিচ্ছেদের নোটিশ পাঠিয়ে আইনি পথে হাঁটবে শ্রী সিমেন্ট। আইএসএল আয়োজক এফএসডিএলকেও তা জানিয়ে দেওয়া হবে। সবমিলিয়ে আইএসএল অভিযান শেষের আগেই ফের আশঙ্কায় লাল হলুদ শিবির। এটিকে মোহনবাগান যখন সামনের মরশুমের দল নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছে তখন লাল হলুদের মশাল অন্ধকার ঢাকতে পারছে না।