Exclusive: প্রিয় ‘ভৌমিক দা’র প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ভারতীয় ফুটবলের আইকন, অতীতের পাতা উল্টে করলেন স্মৃতিচারণ
প্রিয় ‘ভৌমিক দা’র প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ভারতীয় ফুটবলের আইকন, অতীতেরপাতা উল্টে করলেন স্মৃতিচারণ
সুভাষ ভৌমিকের প্রয়াণে ভারতীয় ফুটবলে সমাপতন ঘটেছে এক অধ্যায়ের। ফুটবলার হিসেবে দেশ এবং ক্লাবকে যেমন ভরিয়ে দিয়েছেন, তেমনই কোচ হিসেবে অন্য মাত্র যোগ করেছেন ভারতীয় ফুটবলে। তাঁর হাত ধরে দেশের মাটিতে এসেছে আশিয়ান কাপ, সান মিগুয়েল আন্তর্জাতিক কাপ। এই খেতাব শুধু ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকেই আন্তর্জাতকি মঞ্চে পরিচিতে এনে দেয়নি, মানবৃদ্ধি করেছে ভারতীয় ফুটবলেরও।
সুভাষ ভৌমিকের অকাল প্রয়াণে মর্মাহত ভারতীয় ফুটবলের আইকন ভাইচুং ভুটিয়া। গুরু-শিষ্যর মধুর সম্পর্কের মধ্যেই সুভাষ হয়ে উঠেছিলেন পাহাড়ি বিছের বন্ধু। আশিয়ান জয়ী গুরুর মৃত্যুতে গভীর শোকবিহ্বল প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। ওয়ানইন্ডিয়া বাংলা'র সঙ্গে আলোচনায় বাইচুং-এর গলা শুনেই বোঝা যাচ্ছিল ময়দানের ভোম্বল দার চলে যাওয়াটা কতটা কষ্ট দিয়েছে তাঁকে।
সুদূর সিকিম থেকে বাইচুং রবিবার বললেন, "সুভাষ দার সঙ্গে বহু সুখের স্মৃতি রয়েছে আমার। এক সঙ্গে বহু টুর্নামেন্ট আমরা জিতেছি। কিংবদন্তি কোচ ছিলেন সুভাষ দা। উনি চলে যাওয়ায় ভারতীয় ফুটবলের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।"
আশিয়ান জয়ের প্রসঙ্গ তুলে এনে পাহাড়ি বিছে বলেন, "আশিয়ান কাপের জন্য দারুণ প্রস্তুতি করিয়েছিলেন ভৌমিক দা। ওনার জন্য ওই স্তরের প্রতিযোগীতায় ভাল পারফর্ম করতে পেরেছিলাম আমরা।" পি কে বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ্য ছাত্র সুভাষ ভৌমিক গুরুর পেপ-টক অস্ত্র রপ্ত করে ছিলেন ভাল মতোই। তবে, তার পেপ-টক ছিল একটু অন্য রকম। বাইচুং-এর কথায়, "ভৌমিক দার পেপ-টক একটু অন্য রকম ছিল। পিকে'দার অন্য রকম ছিল, এই বিষয়ে ভৌমিকা দা'র নিজস্ব স্টাইল ছিল। অনেক বেশি আগ্রাসী পেপ-টক ছিল ওনার।" উল্লেখ্য, অমল দত্তের ডায়মন্ট সিস্টেম চুরমার করে দেওয়ার ম্যাচে পি কে বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম অস্ত্র ছিলেন তরুণ বাইচুং। পিকে-র ড্রেসিংরুমে তিনিও সাক্ষী থেকেছিলেন বিখ্যাত পেপ টকের।
সুভাষ ভৌমিকের সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত সমীকরণের প্রসঙ্গও উঠে আসে আলোচনায়। ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তি বাইচুং ভুটিয়া এই প্রসঙ্গে বলেন, "আমার সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল ভৌমিক দার। অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা হত, এমনও হয়েছে যে বেশ কিছু বিষয়ে আমার সঙ্গে ওনার মতামত মেলেনি, তর্ক হত। কিন্তু এই রকম ছিল না যে সেটা ধরেই সে বসে রইল। ভৌমিক দা একটু তর্ক করলেও দু'সেকেন্ডের মধ্যে সব কিছু ভুলে যেত। খুব সোজাসাপটা একজন মানুষ ছিলেন, ওনার মনে যেটা আসত সেটাই বলতেন। নিজের পরিবারের সদস্যদের মতো ছিল ওনার সঙ্গে আমার সম্পর্ক।"
সুভাষ ভৌমিক এবং বাইচুং ভুটিয়ার যুগলবন্দী একাধিক সাফল্য এনে দিয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। আশিয়ান কাপ, সান মিগুয়েল আন্তর্জাতিক কাপের মতো আন্তর্জাতিক ট্রফি ছাড়াও এই জুটি লাল-হলুদকে উপহার দিয়েছে ন্যাশনাল ফুটবল লিগ, কলকাতা লিগ, আইএফএ শিল্ড একাধিক সর্ব ভারতীয় খেতাব।