অসংযত জীবনযাপন, মাত্র ৪৯ বছরে প্রয়াত উরুগুয়ে-জুভেন্তাস-কাগলিয়ারির প্রাক্তন তারকা মিডফিল্ডার
অসংযত জীবনযাপন, মাত্র ৪৯ বছরে প্রয়াত উরুগুয়ে-জুভেন্তাস-কাগলিয়ারির প্রাক্তন তারকা মিডফিল্ডার
মাত্র ৪৯ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন উরুগুয়ের প্রাক্তন ফুটবলার ফাবিয়ান ও'নিল। দীর্ঘ দিন যকৃতের রোগে আক্রান্ত ছিলেন ফাবিয়ান এবং শেষ পর্যন্ত এই রোগেই প্রয়াত হলেন নিজের সময়ের অন্যতম সেরা অ্যাটাকিং মিডিফিল্ডার। তাঁকে একটা সময়ে জিনেদিন জিদান অভিহীত করেছিল তাঁর দেখা দেখা 'সব থেকে বেশি প্রতিভাবান ফুটবলার' হিসেবে।
খেলোয়াড় হিসেবে ফাবিয়ান ও'নিল ছিলেন যথেষ্ট দক্ষ। উরুগুয়ের জার্সিতে ১৯৯৩ থেকে ২০০২ পর্যন্ত খেলেছেন তিনি। ১৯ ম্যাচে দেশের হয়ে ২টি গোল রয়েছে তাঁরা। ইতালির ক্লাব ফুটবলে তাঁর পারফরম্যান্স ছিল নজরকাড়া। ১৯৯৬ সালে সিরি এ-তে খেলতে আসেন ফাবিয়ান সই করেন কাগলিয়ারিতে। এর পরের চার মরসুমে কাগলিয়ারির জার্সিতে ১২০ ম্যাচে ১২টি গোল করেছেন এবং একাধিক ঠিকানা লেখা গোলের পাস বাড়িয়েছেন। তাঁর পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়ে ২০০০-০১ মরসুমের জন্য জুভেন্তাস তাঁকে সই করায়।
ইউরোপীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা ক্লাবের হয়ে ওই মরসুমে ১৪টি ম্যাচ খেলেছিলেন লাতিন আমেরিকার এই ফুটবলার। সেই সময় জুভেন্তাসে খেলতেন জিদানও। তিনি কাছ থেকে দেখিছেলন ফাবিয়ানকে এবং সেই সময়ই তাঁর সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করে বলেছিলেন, তাঁর দেখা সব থেকে প্রতিভাবন ফুটবলার ফাবিয়ান। ২০০২ দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান বিশ্বকাপে উরুগুয়ের স্কোয়াডে ছিলেন এই ফুটবলার কিন্তু চোটের কারণে গ্রুপের একটি ম্যাচেও তিনি নামতে পারেননি। ওই বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে গিয়েছিল উরুগুয়ে।
ফাবিয়ান উচ্চমানের ফুটবলার হলেও তাঁর জীবনে শৃঙ্খলা বলে কোনও কথা ছিল না। অ্যালকোহলেই নিজেকে আবদ্ধ অধিকাংশ সময়, ফুটবলার জীবনে খেলার তাগিদে কিছুটা সংযত থাকতে হলেও খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর সুরাই ছিল তাঁর নিত্যক্ষণের সঙ্গী। ২০১৬ সালে জুন মাসে তাঁর গলব্লাডার অপারেশন হয় সেই সময় চিকিৎসকরা তিন বছর অ্যালকোহলের থেকে দূরে থাকতে বলেছিল তাঁকে কিন্তু মাত্র ১ মাস পরই তিনি সুরা পান শুরু করে দেন। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফাবিয়ান বলেছিলেন তিনি ১৪ মিলিয়ন শুধু উড়িয়েছিলেন ঘোড়া, মহিলা এবং জুয়ার জন্য। নিজের আত্মজীবনীতে তিনি উল্লেখ করেছেন মদ্যপ অবস্থায় একটি ক্যাটেল নিলামে অংশ নিয়ে ১১০৪টি গরুর পিছনে আড়াই লক্ষ ইউএস ডলার খরচ করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তাঁর শরীর আর তাঁর সঙ্গ দেয়নি। চিকিৎসকদের লাগাতার চেষ্টা স্বত্ত্বেও উরুগুয়ে ফুটবল হারায় তার অন্যতম প্রতিভাবান সন্তানকে।