
ফিফা বিশ্বকাপ নিয়ে মাতামাতি নাকি ধর্মবিরোধী কাজ! আজব দাবিতে শোরগোল কেরলে
কাতারে শুরু হয়েছে বিশ্বকাপ। কলকাতার মতো কেরলেও ফুটবল নিয়ে প্রবল উন্মাদনা চোখে পড়ে। আইএসএলেও দেখা গিয়েছে, কেরলের ফুটবলপ্রেমীরা স্টেডিয়াম ভরান প্রিয় দলের জন্য গলা ফাটাতে। কেরলের বিভিন্ন জায়গা সেজে উঠেছে বিশ্বকাপের সময়। মেসি, নেইমার, রোনাল্ডোদের বিশাল কাটআউট, বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের পতাকা টাঙানো হয়েছে। আর তাকেই ইসলাম-বিরোধী কাজ বলে দাবি করল এক মুসলিম সংগঠন।

আজব দাবি
সমস্ত কেরল জাম-ইয়াতুল উলামার অধীনস্থ কুতবা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাসার ফৈজি কুডাথাই একেবারেই ভালো চোখে দেখছেন না কেরলের বিভিন্ন জায়গায় ফুটবলারদের সুবিশাল কাটআউট ও পতাকা লাগানোর বিষয়টিকে। এমনকী পর্তুগালের উপনিবেশবাদের কথা স্মরণ করিয়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর দেশের পতাকা লাগাতেও নিষেধ করেছেন তিনি। ফৈজি কুডাথাই বলেছেন, পর্তুগাল উপনিবেশবাদের বিস্তার ঘটিয়ে অনেক দেশকে তাদের অধীনে এনেছিল। ফলে ওই দেশের পতাকা ওড়ানো ঠিক নয়। ভারতীয়দের অন্য কোনও দেশের পতাকা টাঙানো বা তা নিয়ে মাতামাতি করা উচিত নয় বলেও দাবি করেছেন তিনি।

ফুটবলপ্রেম ইসলাম-বিরোধী!
তিনি নিজে ফুটবল-বিরোধী নন বলে জানিয়েও কুডাথাই আরও বলেন, খেলাকে খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা নিয়েই দেখা উচিত। তবে যেভাবে সকলে ফুটবল জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন, তা যেভাবে নেশার মতো হয়ে যাচ্ছে, সেটা ঠিক নয়। ফুটবলপ্রেমীরা তারকাদের পুজো করছেন, এটা ইসলাম-বিরোধীও। নিজেদের দেশের পতাকা না লাগিয়ে অন্য দেশের পতাকা নিয়ে মাতামাতি চলছে। দেশের প্রতি ভালোবাসা চোখে পড়ছে না। ফলে সব কিছুরই একটা সীমা থাকা প্রয়োজন।

শিক্ষামন্ত্রীর পাল্টা
যদিও কুডাথাইয়ের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন, কেরলের শিক্ষামন্ত্রী ভি শিবনকুট্টি এবং ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগের নেতা এম কে মুনীর। তাঁরা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ফুটবল ও ফুটবল তারকাদের নিয়ে মাতামাতির ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার সকলেরই রয়েছে। শিবনকুট্টির কথায়, ফুটবলের কিংবদন্তিদের ভক্ত হয়ে যাওয়া, তাঁদের পুজো করার বিষয়টি ব্যক্তিস্বাধীনতার ব্যাপার। কেউই অন্যের সেই অধিকার খর্ব করতে পারেন না। কে কোন খেলা দেখবেন বা দেখবেন না, গান শুনবেন বা শুনবেন না, কোনও বই পড়বেন বা পড়বেন না, এটা সবারই ব্যক্তিগত পছন্দের উপর নির্ভর করে। আমাদের সংবিধান সেই অধিকার দিয়েছে। তার উপর কেউ নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারেন না।

সমর্থন করছে না মুসলিম সংগঠনও
কেরলের শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, কোনও সংগঠন সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করলে করতেই পারেন। কিন্তু কোনও মতামত কেউ গ্রহণ করবেন কিনা সেটা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিই ঠিক করে থাকেন। অন্যদিকে, মুনীর বলেছেন, শুধু পড়ুয়ারা নন, নানা বয়সের মানুষজনই খেলা দেখছেন। সমস্ত কি বলতে চাইছে তা তারাই বলতে পারবে। উল্লেখ্য, কেরলে ব্রাজিল ও আর্জেন্তিনার ফুটবল সমর্থক বেশি রয়েছেন। বিশ্বকাপ নিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে। কেরলে বেশ কয়েকটি থানায় বেশ কয়েকটি অভিযোগ দায়েরের নিরিখে মামলা রুজুও করেছে পুলিশ।
ফিফা বিশ্বকাপে তিউনিসিয়াকে হারাল অস্ট্রেলিয়া, উজ্জ্বল প্রি কোয়ার্টারে যাওয়ার আশা