ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২: শুরু হল দিন গোনা, আর বাকি ঠিক ৪ বছর - কতটা তৈরি কাতার, দেখুন ছবি
কাতার ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপের জন্য চার বছরের দিন গণনা শুরু হল বুধবার (২১ নভেম্বর)।
বুধবার (২১ নভেম্বর) থেকে শুরু হয়ে গেল দিন গোনা। আর ঠিক চার বছর বাকি কাতার ফিফা বিশ্বকাপের মাঠে বল গড়ানোর। দায়িত্ব পাওয়ার পরই কাতার জানিয়েছিল মধপ্রাচ্য তথা আরব দুনিয়ায় প্রথমবার আয়োজিত ফিফা বিশ্বকাপ সব দিক থেকেই হবে অতুলনীয়। বিশ্বকাপ শুরুর চার বছর আগে সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষার বিষয়ে তারা রীতিমতো আত্মবিশ্বাসী।
মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশের তীব্র গরমের কথা মাথায় রেখে প্রথা ভেঙে কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজিত হবে শীতকালে, ২১ নভেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে বিশ্বকাপের খেলা। সেই টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। স্টেডিয়াম ও অন্যান্য পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ সময়ানুযায়ীই চলছে। এই ব্যাপারে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও কয়েকটি ক্ষেত্রে নির্ধআরিত সময়ের আগেই কাজ শেষ হয়েছে।
|
আট স্টেডিয়াম
আয়োজকরা একমাসের বিশ্বকাপের জন্য মোট আটটি স্টেডিয়াম গড়ে তুলছেন। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আগামী দুই বছর অর্থাত বিশ্বকাপের বল গড়ানোর ২ বছর আগেই সবকটি স্টেডিয়ামই খেলা হওয়ার মতো জায়গায় চলে আসবে। রাজধানী দোহায় খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের কাজ অবশ্য ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে। স্টেডিয়ামটিকে নতুন করে গড়ে তুলে চলতি বছরের মে মাসেই পুনরায় উদ্বোধন করা হয়েছে। এই স্টেডিয়ামে বানো হয়েছে একটি এমন বাতালুকুল যন্ত্র যা স্টেডিয়ামের ভিতরের তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রিতে নামিয়ে আনতে পারে। গত মপসুমের আমির কাপের ফাইনাল খেলাটি হয়েছিল এই স্টেডিয়ামেই সেই খেলায় বার্সেলোনার প্রাক্তন ফুটবলার জাভির নেতৃত্বে খেলেছিল আল সাদ ও বার্সোলোনারই আরেক প্রাক্তনী মাইকেল লউড্রপের কোচিংয়ে আ রায়ান ক্লাব।
|
সর্বাধিক দূরত্ব ৭২ কিলোমিটার
এর আগে প্রতিটি বিশ্বকাপেই একেকটি স্টেডিয়ামের মধ্যে অনেকখানি করে দূরত্ব ছিল। কিন্তু এই প্রথম একটি বিশ্বকাপ হবে যেখানে একটি স্টেডিয়াম থেকে আরেকটিতে যেতে খুব বেশি হলে ঘন্টাখানেক সময় লাগবে। কারণ একমাত্র উত্তরের আল বাইত স্টেডিয়াম ছাড়া বাকি সবকটি ভেনুই রাজধানী দোহার ভিতরে বা তার আশপাশে অবস্থিত। দুটি স্টেডিয়ামের মধ্যে সর্বাধিক দূরত্ব মাত্র ৭২ কিলোমিটার। বিশ্বকাপের আয়োজক হিসাবে কাতারই হতে চলেছে সবচেয়ে ছোট দেশ। তবে ফিফা প্রেসিডেন্টের বক্তব্যে ইঙ্গিত মিলেছে যদি শেষ পর্যন্ত ৪৮ দেশের বিশ্বকাপ হয়, তাহলে কাতারের সঙ্গে আয়োজক হিসাবে অন্য কোনও দেশের নাম জুড়তে পারে।
|
অবিস্মরণীয় ঘটনা
স্থানীয় আয়োজক কমিটি (সুপ্রিম কমিটি ফর ডেলিভারি অ্যান্ড লেগাসি)-র সেক্রেটারি হে হাসান আল থাওয়াদি বলেছেন এই বিশ্বকাপ আরব দুনিয়ার জন্য এক অবিস্মরণীয় ঘটনা হতে চলেছে। বুধবার তিনি বলেন, চার বছর পর সমগ্র পৃথিবী থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ ২৮ দিনের ফুটবল দেখতে কাতারে আসবেন। আর কয়েকশ কোটি মানুষ টিভিতে স্মার্টফোনে, ট্য়াবলেটে চোখ রাখবে। যেসব দল অংশ নেবে, যে সমর্থকরা খেলা দেখবেন এবং আয়োজক দেশ - সবার জন্যই এ এক অবিস্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকবে।
|
বিপুল সম্ভাবনা
ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ানি ইনফ্য়ান্তিনো বলেছেন, সাংস্কৃতিক গতানুগতিকতাকে ভেঙে ফুটবলের মাধ্যমে বহু মানুষকে মেলাবার বিপুল সম্ভাবা রয়েছে কাতার বিশ্বকাপের। তাঁর মতে এই ইভেন্ট আরব দুনিয়ার কাছে সারা বিশ্বের কাছে নিজেদের পরিচিত করার অত্যন্ত বড় সুযোগ। আর বাকি পৃথিবীর কাছে সুযোগ একটা অতি সুন্দর দেশে এসে নতুন সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার, নতুন মানুষদের সঙ্গে মেশার, নতুন নতুন জায়গা দেখার।
|
ফিফা প্রেসিডেন্টের বার্তা
বিশ্বের ফুটবল-প্রেমীদের উদ্দেশ্যে ইনফ্যান্তিনো বলেছেন, '২০২২-এ কাতারে আসুন, মধ্যপ্রাচ্যে আসুন, আরব উপসাগরে আসুন এবং সেরা বিশ্বকাপ উপভোগ করুন।'