দক্ষিণ কোরিয়ার সনের মাস্ক-চমক! বিশ্বকাপে বিরল ঘটনার পিছনে কোন কারণ?
ফিফা বিশ্বকাপের ম্যাচে আজ উরুগুয়ের মুখোমুখি দক্ষিণ কোরিয়া। যদিও খেলা শুরুর আগে থেকেই নজরে কোরিয়ান সন হিউং-মিন। তিনি যেভাবে এই ম্যাচ খেলতে নামলেন, এমনকী কাতারে অনুশীলনেও যে বস্তুটি তিনি ব্যবহার করছেন, ফুটবল মাঠে তা কার্যত বিরল। আইপিএলের ঋষি ধাওয়ান হয়ে উঠলেন দক্ষিণ কোরিয়ার এই ফুটবলার।
এবারের বিশ্বকাপে দক্ষিণ কোরিয়ার সাফল্য অনেকটাই নির্ভর করছে সন হিউং-মিনের উপর। গত কয়েক মরশুম ধরেই দুরন্ত ছন্দে টটেনহ্যান হটস্পারের এই ফুটবলার। এটি তাঁর তৃতীয় বিশ্বকাপ। মনে করছে শেষ বিশ্বকাপও। আর সেখানেই তাঁর দিকে যাবতীয় ফোকাস। খেলা তো বটেই, তাঁর প্রোটেকটিভ ফেস মাস্কের জন্যও। ৩০ বছরের এই গোলমেশিনের ফুটবল মাঠে নয়া লুক কোন কারণে তা জানতে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে আগ্রহও তুঙ্গে। কিন্তু একটা কথা বলে রাখা ভালো, এটা কোনও প্রতিবাদ জানানোর পন্থা নয়। নয় কোনও ফ্যাশন স্টেটমেন্ট।
টটেনহ্যামের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মার্সেইয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলতে গিয়ে চলতি মাসের শুরুর দিকে মুখে চোট লাগে সনের। চ্যান্সেল এমবেম্বার সঙ্গে সংঘর্ষে চোখের কাছে হাড় ভেঙে যায়। এতে আশঙ্কা করা হয়েছিল বিশ্বকাপ থেকে সন হয়তো ছিটকে যাবেন। টটেনহ্যামের তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়, সন হিউং-মিনের বাঁ চোখের কাছে যে চোট লেগেছে তা সারাতে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। অপারেশনের পর মেডিক্যাল স্টাফদের তত্ত্বাবধানে তাঁর রিহ্যাব চলবে বলেও জানানো হয়।
তবে বিশ্বকাপে সন খেলছেন। মুখে ফের চোটের আশঙ্কা এড়াতেই এই প্রোটেকটিভ ফেস মাস্ক পরেই খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। খেলার সময় চোট লাগতেই পারে। তবে ফের যাতে সনের চোট বড় আকার না নেয় তার ঢাল হিসেবেই কাজ করবে এই ধরনের ফেস মাস্ক। চোট লাগার পরও বিশ্বকাপ খেলতে পারার সবুজ সঙ্কেত পাওয়ায় স্বস্তি পেয়েছিলেন সন নিজেও। ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লিখেছিলেন, দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন ছোটবেলা থেকেই সকলে দেখে। আমিও ব্যতিক্রমী ছিলাম না। আমি বিশ্বকাপ মিস করছি না। দেশের হয়ে খেলার জন্য আমি মুখিয়ে রয়েছি। সেই অপেক্ষারই অবসান হয়েছে আজ।
এই ফেস মাস্কের ব্যবহার ফুটবলের দুনিয়ায় কার্যত বিরল হলেও ব্যবহার যে হয় না তা নয়। ২০২০ সালের ইউরোয় জার্মানির আন্টোনিও রুডিগার মুখকে বাঁচাতে এই ধরনের প্রোটেকটিভ ফেস মাস্ক ব্যবহার করেছিলেন। গত সেপ্টেম্বরে একই পথে হেঁটেছিলেন চেলসির তারকা পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং। তবে বিশ্বকাপে এই ধরনের মাস্ক পরে খেলার ঘটনা এই প্রথম। চিকিৎসক বা ফার্মাসিস্টের সঙ্গেই এই ধরনের ফেস মাস্ক ব্যবহার করতে হয়। চোখ বা চোখের কাছে চোট থাকলে নাক, গাল-সহ মুখমণ্ডলের বিভিন্ন হাড়কে আঘাতের হাত থেকে রক্ষা করতে বিশেষ সুরক্ষা নিয়ে এগুলি তৈরি করা হয়। জানা গিয়েছে, এগুলির দাম ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি।