অনবদ্য প্রত্যাবর্তন, রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে স্পেনকে হারিয়ে গ্রুপ লিডার হয়ে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে জাপান
অনবদ্য প্রত্যাবর্তন, রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে স্পেনকে হারিয়ে গ্রুপ লিডার হয়ে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে জাপান
অসাধারণ প্রত্যাবর্তন, ঠিক যেন জার্মানি ম্যাচের প্রত্যাবর্তন। প্রথমার্ধে স্পেনের বিরুদ্ধে ০-১ গোলে পিছিয়ে থেকে ২-১ গোলে গ্রুপের শেষ ম্যাচ জিতে নিল জাপান। এই জয়ের ফলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিল জাপান। গ্রুপের দুই হেভিওয়েট জার্মানি এবং স্পেন উভয় দলকেই ২-১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করল জাপান। গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে জাপান মুখোমুখি হবে রাশিয়া বিশ্বকাপের রানার্স ক্রোয়েশিয়ার। লুকা মদ্রিচের ক্রোয়েশিয়া নিজেদের গ্রুপের রানার্স হয়ে শেষ ষোলোর যোগ্যতা অর্জন করেছে।
স্বপ্নের বিশ্বকাপ কাটছে জাপানের। জাপানের ফুটবল ইতিহাসে বিশ্বকাপে একই গ্রুপে জার্মানি, স্পেনের মতো হেভিওয়েট দলের বিরুদ্ধে জয় এর আগে কখনও আসেনি। এ দিন আন্ডারডগ হয়েই মাঠে নেমেছিল জাপান। নক-আউট পর্ব থেকে কোয়ালিফাই করার জন্য এই ম্যাচ থেকে ১ পয়েন্ট হলেও প্রয়োজন ছিল জাপানের কারণ অপর ম্যাচে জার্মানির দল কোস্টা রিকাকে পরাজিত করে। এই ম্যাচ থেকে নূনতম ১ পয়েন্ট প্রয়োজন ছিল জাপানের।
গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে জাপান। ম্যাচের ১১ মিনিটে রাইট ব্যাক সিজার অ্যাজপিলিকুইতার ক্রস হেডে জালে জড়িয়ে দেন আলভারো মোরাতা। এটাই ছিল মোরাতোর প্রথম স্টার্ট চলতি বিশ্বকাপে। এর আগের দুই ম্যাচে পরিবর্তন ফুটবলার হিসেবে নেমেছিলেন তিনি। এর আগে পরিবর্তন ফুটবলার হিসেবে দুই গোল করা মোরাতা এ দিন নিজের তৃতীয় গোলটি করেন। এ দিন প্রথম একাদশে অনেকগুলি পরিবর্তন করেছিলেন স্পেনের কোচ লুই এনরিকে। ড্যানি কারভাহাল, জর্ডি আলবা, ফেরান টোরেসের মতো প্রথম একাদশের ফুটবলারদের বেঞ্চে রেখেই তিনি শুরু করেন। তবে, স্পেনের প্রথমার্ধের খেলা দেখে বোঝার উপায় ছিল না দ্বিতীয়ার্ধে জাপান এই দলকেই নাকানি চোবানি খাওয়াবে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই স্পেনের উপর চাপ বাড়ায় জাপান। প্রথম দশ মিনিটে স্পেনের রক্ষণদূর্গে একের পর এক আক্রমণ তুলে আনে জাপান। এই আক্রমণের ঝড়েই তছনছ হয়ে যায় স্পেনের রক্ষণদূর্গ। আড়াই মিনিটের মধ্যে স্পেনকে ম্যাচে ব্য়াকফুটে ফেলে দেয় জাপান। পর পর দুই গোল তুলে আনে এশিয়ার জায়েন্টরা। ৪৮ মিনিটে তাকিফুসা ডোয়ানের পরিবর্তে নামা রিতসু ডোয়ান জাপানের হয়ে প্রথম গোলটি করেন এবং সূর্যদয়ের দেশকে সমতায় ফিরিয়ে আনেন। জুনিয়া ইতোর পাস থেকে গোল করে যান তিনি। এই গোলের কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফের গোল পায় জাপান। দ্বিতীয় গোলটি করেন এও টানাকা। ইউতো নাগামোটোর পরিবর্তে নামা কৌরু মিতোমার পাস থেকে জাপানের দ্বিতীয় গোলটি করে যান এও টানাকা। বল লাইনের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার আগের মুহূর্তে দুরন্ত পাস বাড়িয়েছিলেন মিতোমা। ২-০ গোলে পিছিয়ে পরার পর স্পেনের কোচ একাধিক পরিবর্তন করেন। এতে ঝাঁঝ বাড়ে স্পেনের খেলার। ম্যাচ ৯০ মিনিটের দিকে যত এগোচ্ছিল ততই আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ছিল স্পেনের। তবে, শেষ পর্যন্ত কোনওটাই স্পেনকে ম্যাচে সমতা ফেরানোর গোলের পথ দেখাতে পারেনি। স্পেনর এই ম্যাচে হেরে যাওয়ায় জার্মানি বিদায় নিল বিশ্বকাপ থেকে। কারণ গোল পার্থক্যে জাপানের থেকে এগিয়ে ছিল জার্মানি। সেক্ষেত্রে স্পেন যদি ম্যাচটা ড্র-ও রাখতে পারত তা হলে গোল পার্থক্যে জার্মানি পৌঁছে যেত শেষ ষোলোয়। জাপান ৫ ডিসেম্বর শেষ ষোলোর ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে মুখোমুখি হবে।