স্পেনকে রুখে বিশ্বকাপে ভেসে থাকল জার্মানি, গ্রুপ ই-র কোন দল কোথায় দাঁড়িয়ে?
ফিফা বিশ্বকাপের ম্যাচে আল বাইত স্টেডিয়ামে স্পেনকে রুখে দিল জার্মানি। ৬২ মিনিটে করা আলভারো মোরাতার গোলে স্প্যানিশ আর্মাডা চলতি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় জয় যখন ছিনিয়ে নেওয়ার দিকেই এগোচ্ছিল। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে যখন জার্মানির বিদায় নেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, তখনই স্বস্তি দিল নিকলাস ফুলক্রুগের অনবদ্য গোল। যেটি বিশ্বকাপে আপাতত ভাসিয়ে রাখল জার্মানিকে।
|
প্রথমার্ধ গোলশূন্য
বিশ্বকাপে এই নিয়ে পাঁচবার জার্মানির মুখোমুখি হলো স্পেন। লা রোখা ব্রাজিলের বিরুদ্ধেও বিশ্বকাপে পাঁচটি ম্যাচ খেলেছে। প্রথম তিনটি সাক্ষাতে জার্মানদের পরাস্ত করতে না পারলেও ২০১০ সালের সেমিফাইনালে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল। সেবার খেতাবও জেতে স্পেন। ১২ বছর পর বিশ্বকাপের আসরে অবশ্য এদিন ড্র করেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো স্পেনকে। ম্যাচের প্রথমার্ধে বল বেশিরভাগই ছিল স্পেনের দখলেই, কিন্তু গোলমুখ খোলা যাচ্ছিল না। কাউন্টার অ্যাটাকে বিপজ্জনক লাগছিল জার্মানিকেও। ৭ মিনিটের মাথায় ড্যানি অলমোর প্রয়াস রুখে দেন জার্মান গোলরক্ষক ম্যানুয়াল নয়্যার, বল ক্রসবারে প্রতিহত হয়। ৩৩ মিনিটে সহজ সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি ফেরান তোরেস। অলমোর থেকে বল পেয়ে গোলকিপারকে পরাস্ত করার দরকার ছিল, কিন্তু বার্সেলোনায় খেলা স্পেনের তারকা ক্রসবারের বাইরে মেরে বসেন। ৪০ মিনিটে জার্মানির আন্টোনিও রুডিগার হেডে স্পেনের জালে বল পাঠান। যদিও রেফারি ভার প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে অফ সাইডের কারণে সেই গোলটি বাতিল করে দেন। বিরতিতে খেলার ফল ছিল গোলশূন্য।
|
স্পেনকে রুখে দিল জার্মানি
৬২ মিনিটে আলভারো মোরাতা ম্যাচের প্রথম গোলটি করেন। জর্ডি আলবা নীচু ক্রস বাড়িয়েছিলেন, যাকে গোলে রূপান্তরিত করেন পরিবর্ত হিসেবে নামা মোরাতা। স্বাভাবিকভাবেই এরপর সমতা ফেরাতে মরিয়া ওঠে জার্মানি। ৭০ মিনিটে থমাস মুলারকে তুলে নিয়ে নিকলাস ফুলক্রুগকে নামান হ্যান্সি ফ্লিক। ৭৩ মিনিটে জামাল মুসিয়ালার প্রয়াস অনবদ্য দক্ষতায় বাঁচান স্পেনের গোলকিপার উনাই সিমোন। ফুলক্রুগ নামার পর থেকেই জার্মানদের আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ে। যার সুফল মেলে ৮৩ মিনিটে। লিরয় জানে বল বাড়ান মুসিয়ালাকে লক্ষ্য করে, তিনি ভালোভাবে বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেননি। বল পেয়ে যান সতীর্থ ফুলক্রুগ। তিনি জোরালো শটে গোল করে সমতা ফেরাতে সহায়তা করেন জার্মানিকে। এরপর শেষ অবধি জয়সূচক গোল করার প্রয়াস চালাতে থাকলেও ফিনিশিং টাচের অভাবে সিমোনকে পরাস্ত করা যায়নি।
|
পয়েন্ট ভাগাভাগি
এই ম্যাচে পয়েন্ট ভাগাভাগি হওয়ায় ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ই গ্রুপের শীর্ষে রইল স্পেন। যদিও তাদের শেষ ষোলো নিশ্চিত হলো না। জার্মানি ২ ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার চার নম্বরে অর্থাৎ সকলের শেষে রয়েছে। বৃহস্পতিবার স্পষ্ট হয়ে যাবে এই গ্রুপ থেকে কোন দুটি দল রাউন্ড অব সিক্সটিনে যাবে। জার্মানি গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলবে কোস্টা রিকার বিরুদ্ধে। স্পেন খেলবে জাপানের বিরুদ্ধে। স্পেনের কাছে কোস্টা রিকা সাত গোল হজম করে পরাস্ত হলেও রবিবার জাপানকে হারিয়ে দিয়েছে ১-০ গোলে। জাপান ও কোস্টা রিকা ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট করে সংগ্রহ করেছে। জাপান তিনটি গোল করেছে, হজম করেছে তিনটি, ফলে গোলপার্থক্য শূন্য। কোস্টা রিকার গোলপার্থক্য মাইনাস ১।
|
শেষ ষোলোর সমীকরণ
স্পেন যদি শেষ ম্যাচে জাপানকে হারিয়ে দেয় তাহলে সরাসরি পৌঁছে যাবে প্রি কোয়ার্টারে। এমনকী জাপানের বিরুদ্ধে ড্র করলেও স্পেনের শেষ ১৬-এ যাওয়া নিশ্চিত হয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই স্প্যানিশ আর্মাডার গোলপার্থক্য ৭। আটটি গোল করেছে, হজম করেছে একটি। জাপানকে জিততেই হবে পরের রাউন্ডে যেতে হলে। জাপান যদি ড্র করে তাহলে তাদের পয়েন্ট হবে চার, স্পেনের পাঁচ। জার্মানি শেষ ম্য়াচে জিতলে চার পয়েন্টে পৌঁছাতে পারবে। কোস্টা রিকা যদি জার্মানিকে হারিয়ে দেয় তাহলে তাদের পয়েন্ট হবে ৬। কিন্তু কোস্টা রিকা ও জার্মানি ম্যাচ যদি ড্র হয় এবং স্পেন-জাপান ম্যাচও অমীমাংসিতভাবে শেষ হয় তাহলে স্পেনের সঙ্গে পরের রাউন্ডে যাবে জাপানই। কোস্টা রিকা পয়েন্টের নিরিখে জাপানকে ধরতে পারলেও গোলপার্থক্যে পিছিয়ে পড়বে। রাউন্ড অব সিক্সটিনে যেতে জার্মানিকে শেষ ম্য়াচে জিততেই হবে। সেই সঙ্গে প্রত্যাশা করতে হবে জাপান যেন কোনওভাবেই না জেতে স্পেনের বিরুদ্ধে। জার্মানি ও স্পেনের পয়েন্ট যদি একই থাকে, তাহলেও জার্মানি ছিটকে যাবে। কারণ তাদের গোলপার্থক্য মাইনাস ১।
পিটি ঊষা ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রথম মহিলা হিসেবে অনন্য নজির