এমবাপে অনবদ্য, অঁরিকে ছুঁলেন জিরু! পিছিয়ে পড়েও অস্ট্রেলিয়াকে গোলের মালা ফ্রান্সের
দুরন্ত জয় দিয়ে কাতারে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করল ফ্রান্স। আল জানৌব স্টেডিয়ামে প্রথমে পিছিয়ে পড়েও অস্ট্রেলিয়ার জালে চারবার বল পাঠাল দিদিয়ের দেশঁর দেশ। জোড়া গোল করে ফ্রান্সের হয়ে সর্বাধিক গোলদাতা হিসেবে থিয়েরি অঁরির রেকর্ডে থাবা বসালেন অলিভিয়ের জিরু। গোল পেলেন কিলিয়ান এমবাপেও। তবে এরই মধ্যে ফ্রান্সের অস্বস্তি বাড়াল চোট সমস্যা!
|
প্রথম গোল অস্ট্রেলিয়ার
আক্রমণ, প্রতি আক্রমণে শুরু থেকেই জমজমাট ছিল ফ্রান্স বনাম অস্ট্রেলিয়া দ্বৈরথ। গতবারের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স নেমেছিল ফেভারিট হিসেবেই। ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপেও অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল ফ্রান্স। সকারুরা এই নিয়ে ষষ্ঠবার বিশ্বকাপ খেলছে। নক আউটে গিয়েছে শুধু ২০০৬ সালে। ম্যাচের ৯ মিনিটের মাথায় অস্ট্রেলিয়াকে এগিয়ে দেন ক্রেগ গুডউইন। হ্যারি সাউটারের কাছ থেকে বল পেয়ে ম্যাথু লেকি ফরাসি ডিফেন্ডার লুকাস হার্নান্দেজের নাগাল এগিয়ে লো ক্রস বাড়িয়েছিলেন, গুডউইন তা জালে জড়িয়ে দেন। ৮ মিনিট ২২ সেকন্ডে গোল করায় এটি আপাতত চলতি বিশ্বকাপের দ্রুততম গোল। লুকাস হার্নান্দেজ (Lucas Hernandez) অবশ্য এই গোলটি হওয়ার আগে পড়ে যান। হাঁটুর চোট নিয়ে তাঁকে বেরিয়েও যেতে হয়। বিশ্বকাপে ফ্রান্স শিবিরে চোটের তালিকা দীর্ঘ হলো। লুকাসের ভাই থিও নামেন পরিবর্ত হিসেবে।
|
৫ মিনিটে দুই গোল
যদিও গোল হজম করার পর দিদিয়ের দেশঁর ছেলেরা সমতা ফেরাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। ২৭ মিনিটে ফ্রান্সের প্রথম গোলটি করেন আদ্রিয়েন রাবিয়োট (Adrien Rabiot)। থিও হার্নান্দেজের ভাসানো বলে মাথা ছুঁইয়ে অস্ট্রেলীয় গোলকিপার ম্যাথু রায়ানকে পরাস্ত করে ম্যাচে সমতা ফেরান তিনি। এর পাঁচ মিনিট পরেই সকারুদের ঢিলেঢালা খেলার ফায়দা তুলে বল ছিনিয়ে দ্বিতীয় গোলটি আদায় করে নেয় ফ্রান্স। গোল কিকের পর অস্ট্রেলিয়ার ফুটবলারদের পা থেকে বল ছিনিয়ে এমবাপের সঙ্গে পাস খেলে বক্সে ঢুকে পড়েন রাবিয়োট, গোলকিপারও পরিস্থিতি সামাল দিতে ডানদিকে সরে গিয়েছিলেন। রাবিওটের থেকে বল পেয়ে ফাঁকা তিন কাঠিতে রাখতে কোনও ভুল করেননি অলিভিয়ের জিরু। বিশ্বকাপে ইউরোপীয় দেশগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বয়সের গোলদাতার রেকর্ডটি নিজের দখলে নিলেন ৩৬ বছরের এই ফুটবলার। এরপর একের পর আক্রমণ আছড়ে পড়তে থাকে অস্ট্রেলিয়ার অর্ধে। জটলার মধ্যে থেকে গ্রিজম্যানের মাটি ঘেঁষা শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ইনজুরি টাইমে অস্ট্রেলিয়ার জ্যাকসন আরভিনের প্রয়াস পোস্টে প্রতিহত হয়। বিরতিতে ২-১ গোলে এগিয়ে ছিল ফ্রান্স।
|
গোল এমবাপের
দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে ফ্রান্স। গ্রিজম্যান, কিলিয়ান এমবাপেরা বিপজ্জনক হয়ে উঠছিলেন। ৬৭ মিনিটে হার্নান্দেজ ও এমবাপে নিজেদের মধ্যে দারুণভাবে খেলে বল বাড়ান গ্রিজম্যানকে লক্ষ্য করে। তাঁর শট কোনওরকমে অস্ট্রেলিয়ার ডিফেন্ডাররা বাঁচালেও এর একটু পরেই তৃতীয় গোলটি পেয়ে যায় ফ্রান্স। দেম্বেলের থেকে বল পেয়ে চলতি বিশ্বকাপে প্রথম গোলটি করেন পিএসজি তারকা এমবাপে।
|
জিরু ছুঁলেন অঁরিকে
২ মিনিট পরে এমবাপের অ্যাসিস্টে জিরুর দ্বিতীয় গোল ৪-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেয় ফ্রান্সকে। জিরু দেশের হয়ে ৫১তম গোল করে ধরে ফেললেন থিয়েরি অঁরিকে। গ্রিজম্যান, এমবাপে, দেম্বেলেরা যে ছন্দ দেখালেন তা নিশ্চিতভাবেই প্রতিপক্ষদের চিন্তায় রাখবে। ফ্রান্স যে দাপট নিয়ে খেলেছে তাতে জয়ের ব্যবধান আরও বাড়তেই পারতো।
|
স্বস্তির জয়
বিশ্বকাপে গ্রুপ ডি-তে ফ্রান্সের পরের ম্যাচ শনিবার ডেনমার্কের বিরুদ্ধে। গ্রুপ পর্বে এমবাপেরা শেষ ম্যাচ খেলবেন ৩০ নভেম্বর, প্রতিপক্ষ তিউনিসিয়া। অস্ট্রেলিয়া শনিবার খেলবে তিউনিয়ার বিরুদ্ধে। ৩০ নভেম্বর সকারুদের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ ডেনমার্কের বিরুদ্ধে। এদিন তিউনিসিয়া ও ডেনমার্কের মধ্যে ম্যাচটি গোলশূন্যভাবে শেষ হয়েছে।