বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোক প্রকাশ ফিফার, শোক বর্তা দিয়ে চিঠি পাঠালেন স্বয়ং সভাপতি ইনফান্টিনো
বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোক প্রকাশ ফিফার, শোক বর্তা দিয়ে চিঠি পাঠালেন স্বয়ং সভাপতি ইনফান্টিনো
চলতি বছর আরও এক কিংবদন্তিকে হারিয়েছে ভারতীয় ফুটবল। শনিবার ৯২ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন ভারতীয় ফুটবলের সোনালি অধ্যায়ের অন্যতম সফল কাণ্ডারী। তিনি রেখে যান পুত্রবধূ এবং নাতনিকে। বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম কিংবদন্তির প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছে ফিফা।
বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোক প্রকাশ ফিফার:
বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম কিংবদন্তি বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায় ৯২ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কলকাতায়। ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম মহিরূহের পতনে মন খারাপ ফিফারও। বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থার সভাপতি জিয়ানি ইনফান্টিনো শোক প্রকাশ করে চিঠি পাঠিয়েছেন ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশের কার্যনির্বাহী সচিব সুনন্দ ধরকে। ইনফান্টিনো নিজের চিঠিতে লিখেছেন, "প্রাক্তন আন্তর্জাতিক ফুটবলার সমর বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণে আমি আন্তরিক সমবেদনা জানাই। তাঁর প্রয়াণ কতটা শোকে কাতর করেছে আমাদের তা বোঝাতে শব্দ কম পড়ে যাচ্ছে।"
ফিফা সভাপতি ইনফান্তিনোর পাঠানো চিঠিতে যা লেখা আছে:
ফিফা সভাপতি ইনফান্টিনো নিজের চিঠিতে লিখেছেন, "প্রাক্তন আন্তর্জাতিক ফুটবলার সমর বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণে আমি আন্তরিক সমবেদনা জানাই। তাঁর প্রয়াণ কতটা শোকে কাতর করেছে আমাদের তা বোঝাতে শব্দ কম পড়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ দিন ভারতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি এবং তাঁর নেতৃত্বে স্মরণীয় অধ্যায় কাটিয়েছে ভারতের ফুটবল। ১৯৫৬ অলিম্পিকে ভারতীয় দলের ঐতিহাসিক চতুর্থ স্থান অর্জন যার মধ্যে একটি। ঘরোয়া ফুটবলে দীর্ঘ সময় সাফল্যের সঙ্গে সন্তোষ ট্রফিতে বাংলার প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি, দু'বার জিতেছেন এই খেতাব। ক্লাব স্তরে দীর্ঘ সময় মোহনবাগানের রক্ষণের দায়িত্ব তিনি সামলেছেন এবং এই সময়ে বহু সাফল্য এনে দিয়েছেন ক্লাবকে। এই কিংবন্তিকে ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা হিসেবে গণ্য করা হয়। তাঁর নেতৃত্ব, ব্যক্তিত্ব, লেগাসি এবং সাফল্য, মানবতা বোধ কখনও ভোলার নয়। আন্তর্জাতিক ফুটবল কমিউনিটির পক্ষ থেকে আমি সর্ব ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে এবং তাঁর পরিবারকে, বন্ধুবান্ধবকে এবং প্রিয় মানষুদের সমবেদনা জানাই। আপনাদের প্রত্যেকের সঙ্গে আমাদের সমবেদনা রয়েছে।"
অসুস্থত এবং প্রয়াণ:
বয়সজনিত নানাবিধ সমস্যায় দীর্ঘ দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়। এর উপর তিনি কোভিডে আক্রান্ত হলে সেই ধকল আর সইতে পারেননি। ৯২ বছর বয়সে কোনও মানুষের শরীরে কোভিড হানা দিলে তাঁর সুস্থ হয়ে ওঠাটা মুশকিল হয়ে পড়ে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৭ জুলাই ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। শুরুতে কিছুটা উন্নতি হলেও ধীরে ধীরে তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। যে কারণে এসএসকেএম-এ স্থানান্তরিত করা হয়েছিল প্রাক্তন ফুটবলারকে। ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল তাঁকে। শেষের কিছু দিন বেশ আশঙ্কাজনক অবস্থাতেই তিনি ছিলেন। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের নিয়ে মেডিক্যাল টিম গঠন করেও লাভ হচ্ছিল না। অবশেষে ২৪ দিনের লড়াই শেষে শনিবার গভীর রাতে প্রয়াত হল দিকপাল ফুটবলার।
ডাক্তারি ছেড়ে ফুটবলে আগমণ:
হাওড়ার বালিতে ১৯৩০ সালের ৩০ জানুয়ারি। বাবা ছিলেন অত্যন্ত কড়া, তাই ছোট থেকেই পড়াশুনার দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হয়েছিল তাঁকে। সমর বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও ছিলেন অত্যন্ত মেধাবি ছাত্র। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ার জন্য ভর্তি হলেও শেষ পর্যন্ত তা শেষ করেননি।আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে তিন বছর ডাক্তারি পরেও শেষ পর্যন্ত দাদার স্মৃতিকে বুকে নিয়ে ফুটবলকে বেছে নেন তিনি। বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাদা রাধানাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন বড় মাপের ফুটবলার। কিন্তু খেলার মধ্যেই আহত হয়ে দাদা মারা যাওয়ার পর তাঁর স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরে বড় ফুটবলার হয়ে ওঠার শপথ নেন বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম কৃতি সন্তান। মোহনবাগানের সাফল্যের ইতিহাসে বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান অনেকটা জুড়ে ইতিহাসের পাতায় লেখা হয়ে রয়েছে। তাঁকে মোহনবাগান রত্ন সম্মানে ভূষিত করে সবুজ-মেরুন ক্লাব।
ইস্টবেঙ্গলে চূড়ান্ত ষষ্ঠ বিদেশি, এশিয় কোটায় লাল-হলুদে আসছেন স্প্যানিশ বংশোদ্ভূত এই তারকা