বিতর্ক ও বিক্ষোভে তপ্ত ইংল্যান্ড, সাউথগেট আর কেনের গলায় প্রত্যয়ী সুর
স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় বিক্ষোভ আর বিতর্কে উত্তাল ইংল্যান্ড। সোশ্যাল মিডিয়ায় বর্ণবিদ্বেষমূলক আক্রমণের শিকার হয়েছেন টাইব্রেকার মিস করা মার্কাস রাশফোর্ড, জাডোন স্যাঞ্চো ও বুকায়ো সাকা। ম্যাঞ্চেস্টারে রাশফোর্ডের মুরাল বা দেওয়ালচিত্রও রক্ষা পায়নি উগ্র ব্রিটিশ তাণ্ডবের হাত থেকে। ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার জেরে মেজাজ হারাচ্ছেন ইংল্যান্ডের তারকারাও।
টাইব্রেকারে জয় ইতালির
টাইব্রেকারে রাশফোর্ড পোস্টে মারেন বল। স্যাঞ্চো ও সাকা-র শট রুখে দিয়ে নায়ক হন ইতালির গোলকিপার দন্নারুম্মা। পেনাল্টি শুটআউটে যে পাঁচ ফুটবলার শট মারেন তাঁদের বাছাই নিয়েও শুরু হয়েছে বিতর্ক। একটি প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমের টুইটার অ্যাকাউন্টে জ্যাক গ্রিলিশকে কটাক্ষ করে লেখা হয়েছে অ্যাস্টন ভিলা থেকে ইংল্যান্ড পেনাল্টি মারতে তাঁর অনীহা কীসের? গ্রিলিশ বা রাহিম স্টার্লিংকে কেন টাইব্রেকারে শট নিতে পাঠানো হল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গ্রিলিশ পাল্টা উত্তর দিয়েছেন, আমি মারতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আমার হাতে ছিল না। যদিও ইংল্যান্ডের ম্যানেজার গ্যারেথ সাউথগেট পেনাল্টি শুটআউটের দায় নিজের ঘাড়েই নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সবদিক বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত পুরোটাই আমার ছিল। উল্লেখ্য, সাউথগেটের ফুটবল কেরিয়ারেও ইউরো জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল টাইব্রেকারে হেরেই বিদায় নেওয়ায়। তাই হয়তো, গতকাল ওয়েম্বলিতে সাকা শট মিস করে যখন কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁকে আগলে রাখেন সাউথগেট।
দায়িত্বে থাকার ইঙ্গিত
সাউথগেটের কোচিংয়ে এর আগে ইংল্যান্ড ২০১৮ সালে বিশ্বকাপ ও তার পরের বছর নেশনস লিগ সেমিফাইনাল খেলেছে। সাউথগেট আজ সাংবাদিক বৈঠকে এসে বলেন, আজ যখন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছি তখন নিশ্চিতভাবেই কাতার বিশ্বকাপে দলের দায়িত্বে থাকতে চাই। তবে এখন এ সব বলার সময় নয়। এমন বড় টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলার চাপ থাকে। আপাতত বিশ্রাম নেব কয়েকটা দিন, গতকালের ফাইনাল খেলার পাশাপাশি গোটা টুর্নামেন্ট নিয়ে নিজে ভাবনাচিন্তা করব। তবে এটাও ঠিক গত চার বছরে আমাদের খেলার উন্নতি হয়েছে। ফুটবলারদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া, দলীয় সংহতি ভালো আছে বলেই আমরা এই জায়গায় পৌঁছেছি। এমনকী দলের তিন ফুটবলার বর্ণবিদ্বেষমূলক আক্রমণের মুখে পড়লেও দলের একতা দারুণ রয়েছে। এটাই সবচেয়ে বড় বিষয়।
প্রত্যয়ী কেন
প্রথমবার উউরো ফাইনালে উঠে কাপজয়ের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে নিজেদের মাঠে ওয়েম্বলিতে। স্বাভাবিকভাবেই হতাশ ইংল্য়ান্ড দলের ফুটবলাররাও। গতকাল ওয়েম্বলিতে সতীর্থদের সান্ত্বনা দেওয়ার পাশাপাশি হ্যারি কেনকে দেখা গিয়েছিল গ্যালারিতে ক্রন্দনরতা স্ত্রী কেটকেও সান্ত্বনা দিতে। ইংল্যান্ডের অধিনায়ক আজ টুইট করে লিখেছেন, ফাইনালের এই পরাজয়ের যন্ত্রণা আমাদের কেরিয়ারে দীর্ঘদিন তাড়া করে বেড়াবে। তবে এটাও ঠিক আমরা অনেক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এগোতে এগোতে আজ এই জায়গায় এসেছি। এটাই শেষ নয়। আমরা একসঙ্গে জিতি, হারের দায়ও নিই একসঙ্গে। আমরা আবার বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত হব। যাঁরা আমাদের সমর্থন জানিয়েছেন তাঁদেরকে ধন্যবাদ।
রাশফোর্ড ও ম্যাঞ্চেস্টার
এরই মধ্যে ইউরো পরাজয়ের রাতে ম্যাঞ্চেস্টারে একটি দেওয়ালে রাশফোর্ডের মুরাল বা দেওয়ালচিত্রে হামলা চালিয়েছেন উগ্র ব্রিটিশ সমর্থকরা। দেখা যায় রাশফোর্ডের যে ছবিটি ছিল তার মুখের অনেকটা জায়গা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে সকালেই সেই জায়গাটি ঢেকে দিয়ে রাশফোর্ডের প্রতি ভালোবাসাও উজাড় করে দিয়েছেন অনেকে। আর্সেনালও সাকা-র পাশে দাঁড়িয়ে ফের ক্লাবে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে রেখেছে সোশ্যাল মিডিয়াতেই।
Football can be so cruel.
— Arsenal (@Arsenal) July 11, 2021
But for your personality. For your character. For your bravery...
We’ll always be proud of you. And we can’t wait to have you back with us, @BukayoSaka87 ❤️ pic.twitter.com/a6fVTb0y1j
❤ Marcus Rashford's mural in Manchester was vandalised last night, however supporters have come together to cover up the vandalism and spread positive messages.
— UtdDistrict (@UtdDistrict) July 12, 2021
The real #mufc community 🥺 pic.twitter.com/ilf4RHoZYS
Last night hurts. It’ll hurt for a long time. But we’ve come so far and broken down so many barriers that this is not the end. We win together, lose together and will regroup together for the World Cup. Thanks for all your support this summer. pic.twitter.com/kUfW3zq2mn
— Harry Kane (@HKane) July 12, 2021