এল ক্লাসিকো: ন্যু ক্যাম্প থেকে রিয়ালের জুটল একরাশ লজ্জা! মেসির অভাবে জ্বলে উঠলেন সুয়ারেজ!
লুই সুয়ারেজের হ্যাটট্রিকের জোরে এল ক্লাসিকোয় রিয়াল মাদ্রিদকে একরাশ লজ্জা উপহার দিল বার্সেলোনা।
মেসির অনুপস্থিতি ন্যু ক্যাম্পে জ্বলে উঠলেন লুই সুয়ারেজ। ২০১৪ সালে মেসির পর প্রথম ফুটবলার হিসেবে এল ক্লাসিকোতে করলেন হ্যাট্রিক। রিয়াল মাদ্রিদের জঘন্য প্রদর্শনের সুযোগ নিয়ে ২০১৮ সালের প্রথম এল ক্লাসিকোয় ৫-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে জয় পেল বার্সেলোনা। বার্সার পক্ষে বাকি দুটি গোল করলেন ফিলিপে কুটিনহো ও ভিদাল।
লেভান্তের বিরুদ্ধে হারের পরই রিয়াল মাদ্রিদের হট সিট থেকে স্পেনের জাতীয় দলের প্রাক্তন কোচ হুলিয়েন লোপেতেগুই-এর বরখাস্তের দাবি উঠেছিল। এদিনের ৫ গোলের লজ্জার পর তাঁর বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল। আর এদিনের জয়ের ফলে ফের লা লিগার শীর্ষে চলে গেল বার্সা। মেসির অভাব বোধই করতে গিলেন না সুয়ারেজ।
এদিন অবশ্য বার্সার হয়ে গোলের মুখ খুলেছিলেন ব্রাজিলিয়ান ফিলিপে কুটিনহো। প্রথম থেকেই বলের দখল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে খেলা শুরু করেছিল বার্সেলোনা। দুই প্রান্তে দুর্দান্তভাবে উঠে আসছিলেন জোরদি আলবা ও সের্গি রবার্তো। মাঝমাঠে দারুণ খেলেন রকিটিচও। আর তার থেকেই ম্যাচের ১১ মিনিটের মাথায় আসে প্রথম গোল।
এই সময় আরও একবার দেখা গেল বার্সার পুরনো তিকিতাকার ঝলক। কুটিহোর গোলটি আসে মোট ৩০টি পাস খেলে। শুরুটা হয়েছিল গোলকিপার তের স্তেগানের পা থেকে। শেষ পর্যন্ত বক্সের মধ্যে কুটিনহোর উদ্দেশ্যে একেবারে গোলের ঠিকানা লেখা ক্রস বাড়িয়েছিলেন আলবা। কুটিনহো জমিঘেসা শটে পরাস্ত করেন কুর্তোয়াকে।
রিয়ালের রক্ষণের ফাঁক ফের উন্মুক্ত হয়ে যায় ম্যাচের ৩০ মিনিটের মাথায়। একটি ক্রস ধরার জন্য লাফিয়েছিলেন সুয়ারেদজ। তাঁকে আটকাতে গিয়ে বক্সের মধ্যে ফাউল করে বসেন ভারানে। ভিএআর রেফারি মাঠের রেফারিকে রিপ্লে দেখার পরামর্শ দেন। তা দেখে রেফারি পেনাল্টি দেন। গোলের ডানপোস্টে নিচের কোনায় জোরালো শট নেন সুয়ারেজ। কুর্তোয়া ঠিক দিকে ঝাঁপালেও বলটি আটকাতে পারেননি।
বিরতিতে ২-০ গোলেই এগিয়ে ছিল বার্সা। বিরতির পর ভারানেকে তুলে লুকাস ভাজকেজ-কে নামান লোপেতেগুই। ফলে রিয়ালের খেলায় কিছুটা ধার ফিরেছিল। যার ফলে ১ গোল শোধও দেয় রিয়াল। ৫০ মিনিটের মাথায় গোল করে য়ান মার্সেলো ভিয়েইরা।
এরপর আরও একবারগোল করার কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন এই বছরের সেরা ফুটবলার নির্বাচিত হওয়া লুকা মদ্রিচ। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাঁর শটটি পোস্টের নিচের দিকে লাগে। রিয়ালের আক্রমণও এখানেই শেষ হয়।
এরপরই আবার শুরু হয় বার্সা ঝড়, বা সুয়ারেজ ঝড়ও বলা যেতে পারে। ৭৫ মিনিটের মাধথায় সের্গিও রবার্তোর তোলা ক্রস থেকে জোরালো হেডে বল গোলে জড়িয়ে দেন এই উরুগুয়ান স্ট্রাইকার। আবার ৮৩ মিনিটের মাথায় দেখা যায় তাঁর পায়ের জাদু। এগিয়ে আসা কুর্তোয়ার মাতার উপর দিয়ে চিপ করে নিজের হ্যাট্রিক সম্পূর্ণ করেন তিনি।
৮৪ মিনিটে এনরিকে মেলোকে তুলে নামান আর্তুরো ভিদালকে। মাঠে নামার ৩ মিনিটের মধ্যে ডেম্বেলের পাস থেকে গোল করে ৫ গোলের মালা শেষ করেন ভিদাল। রীতিমতো পার্টি শুরু হয়ে যায় ক্যাম্প ন্যুয়ের গ্যালারিতে।
বিশ্বকাপ শুরুর দিনকয়েক আগে স্পেন দলের দায়িত্ব ছেড়ে রিয়ালের কোচ হয়েছিলেন লোপেতেগুই। কিন্তু তারপর থেকে ১৪টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৬টি তে জয়ী হয়েছে রিয়ান মাদ্রিদ। হারতে হয়েছে ৬টিতে। যার মধ্যে রয়েছে লেভান্তের বিরুদ্ধে হার ও ক্লাসিকোয় ৫ গোলের লজ্জা। লা লিগায় রিয়াল ১০ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে ৯ নম্বরে। তাঁর বিদায় প্রায় নিশ্চিত করে দিলেন সুয়ারেজ।